— প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘদিনের সংসারে হঠাৎ ছন্দপতন। ৮৮ বছরের কুঞ্জলির দাবি ছিল, তাঁর স্বামী থেবন একাধিক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত। ৯১ বছরের থেবনের প্রত্যুত্তর, রাগের মাথায় তাঁর স্ত্রী অনর্থক সন্দেহ করছেন। সন্দেহ থেকে তর্ক, তর্ক থেকে বচসা, যা শেষ হয় কুঞ্জলির গুরুতর জখম হওয়ায়।
বৃদ্ধার অভিযোগ, পরকীয়ার অভিযোগ তোলা মাত্রই ছুরি দিয়ে তাঁকে আক্রমণ করেন তাঁর স্বামী। গত ২১ মার্চ কেরলের এরনাকুলামের এই ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করে ৯১ বছরের ওই বৃদ্ধকে। তার পর থেকে পুলিশের হেফাজতেই ছিলেন তিনি। সম্প্রতি তাঁকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে কেরালা হাই কোর্ট। সঙ্গে জানিয়েছে, বিয়ে মানে সুখে-দুঃখে দুটি অসম্পূর্ণ মানুষের সম্পূর্ণ হয়ে ওঠার গল্প। শুরু থেকেই কেউ নিখুঁত হয় না। পাশাপাশি, রায়ের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে বিখ্যাত মলয়ালি কবিতা ‘সফলমি ইয়াথ্রা’-র বিয়ের সংক্রান্ত কয়েকটি লাইনও।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অন্য দম্পতির মতোই শান্তিপূর্ণ জীবন ছিল ওই দু’জনের। মাঝে মাঝে নিয়মমাফিক অশান্তিও চলত। কিন্তু ২১ মার্চ সেই অশান্তিই মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বচসার মধ্যেই পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন কুঞ্জলি, তাতেই খেবন মেজাজ হারান।
কেরালা হাই কোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন থেবন। ৫০ হাজার টাকা বন্ডের বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন তিনি। সেই মামলায় গত ১০ এপ্রিল বিচারপতি পি ভি কুনহিকৃষ্ণনের পর্যবেক্ষণ, বয়স হলে স্বামী ও স্ত্রীর একে অপরের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ে। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা যে এই বয়সে পারস্পরিক এমন একটি অশান্তি হল। কুঞ্জলির অভিযোগে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরেই থেবন আক্রমণ করে বসেন। তাঁর বোঝা উচিত, এই বয়সে কুঞ্জলি তাঁর অবলম্বন। কুঞ্জলির ক্ষেত্রেও একই জিনিস প্রযোজ্য। দু’জনেরই বোঝা উচিত, ভালবাসার আলোকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে বয়স। মানুষ যত পরিণত হন, তত সঙ্গীর প্রতি তাঁর প্রেম গাঢ় হয়। কুঞ্জলি ও থেবন তাঁদের জীবনের বাকি সময়টা পরস্পরের সঙ্গে আনন্দে কাটান, এটাই কাম্য।