Manipur Violence

মণিপুরে জীবন্ত দগ্ধ মহিলা, বিদ্ধ বীরেন

কুকি এবং জো-দের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ জানায়, গত কাল রাতে জ়াইরাওন নামে এক গ্রামে চড়াও হয় আরাম্বাই টেঙ্গল ও ইউএনএলএফের হানাদারেরা। গ্রামরক্ষীদের সঙ্গে তাদের প্রায় এক ঘণ্টা গুলির লড়াই চলে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:১৩
এন বীরেন সিংহ।

এন বীরেন সিংহ। —ফাইল চিত্র।

সাময়িক শান্তির পরে ফের হিংসা মণিপুরের জিরিবামে। মার গ্রামে হানা দিল মেইতেইরা। এক জনজাতি মহিলাকে গুলি করে জখম করা হল। তার পরে তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে ফের কেন্দ্রকে আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “যখনই জনজাতি বা দলিতদের হয়ে আওয়াজ তুলি, বিজেপি বলে আমি ভারত ভাগ করছি। এ দিকে বিজেপি মণিপুরকে অগ্নিগর্ভ করে, মানুষকে ধর্মের নামে বিভাজিত করতে চাইছে। দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ন্যায্য পাওনা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত।”

Advertisement

কুকি এবং জো-দের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ জানায়, গত কাল রাতে জ়াইরাওন নামে এক গ্রামে চড়াও হয় আরাম্বাই টেঙ্গল ও ইউএনএলএফের হানাদারেরা। গ্রামরক্ষীদের সঙ্গে তাদের প্রায় এক ঘণ্টা গুলির লড়াই চলে। কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় হামলাকারীরা। ৩১ বছরের জ়োসাংকিম মার গুলিতে জখম হন। তাঁর স্বামী তথা স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক গুরথাংসাং জানান, তিন সন্তানের মা জ়োসাংকিমের ঊরুতে গুলি লাগে। জখম অবস্থায় তাঁকে ধরে রাখে হামলাকারীরা। স্বামী ও সন্তানেরা তাঁকে ছেড়ে দিতে কাকুতিমিনতি করলেও কান দেওয়া হয়নি। গুরথাংসাংকে বলা হয়, বুড়ো বাবা-মা ও তিন বাচ্চার দেখভালের জন্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এর পর জখম জ়োসাংকিম-সহ বাড়িটি পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা। আইটিএলএফের দাবি, আজ ভোরে ভস্মীভূত বাড়ি থেকে জ়োসাংকিমের পোড়া দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর সন্তানদের বয়স চার থেকে আট বছর। আইটিএলএফের হিসাবে গ্রামের ১৭টি বাড়ি ও তিনটি দোকান পোড়ানো হয়েছে। জিরিবাম জেলায় ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ না থাকায় অসমের শিলচর মেডিক্যাল কলেজে ওই মহিলার দগ্ধ দেহের ময়না তদন্ত করার অনুমতি চেয়েছে পুলিশ।

মণিপুরের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ইন্ধন দেওয়ার ‘স্বীকারোক্তি’ একটি অডিয়ো টেপে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে কুকিদের একটি গোষ্ঠীর করা মামলার আজ শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। কুকিদের তরফে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ দাবি করেন, এক ‘হুইসলব্লোয়ার’ ওই টেপে বীরেনের টেলি-কথোপকথন রেকর্ড করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাতে ‘স্বীকার’ করেছিলেন যে, তিনি সংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছেন এবং অস্ত্র লুট করা লোকজনকে রক্ষা করেছেন। আদালত কুকি সংগঠনটিকে বলেছে, এই দাবির সপক্ষে তাদের অডিয়ো টেপ-সহ উপযুক্ত প্রমাণ জমা দিতে
হবে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, তদন্ত চলছে। হুইসলব্লোয়ার শান্তি চান না। প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালত গজদন্ত মিনারে বসে নেই এবং মণিপুরবাসীর সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন বলেই তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে।

আইটিএলএফ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, বীরেন সিংহ সংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছেন, মেইতেইরা বাফার জ়োন অগ্রাহ্য করে কুকিদের এলাকা দখল করছে, মার গ্রাম পুড়িয়ে দিচ্ছে। কেন্দ্র নীরব দর্শক।

আরও পড়ুন
Advertisement