পহেলগাঁওয়ের সেই বৈসরন উপত্যকা। মঙ্গলবার এখানেই জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ২৬ জনের। বৃহস্পতিবার সেই ঘটনাস্থল জনমানবহীন। খাবারের দোকানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে চেয়ার, টেবিল। ছবি: রয়টার্স
কেরল থেকে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গিয়েছিল ২৩ জনের একটি দল। পর্যটকদের দলে ছিল এক শিশুও। মঙ্গলবার সকালে কেরলের ওই দলটিও বৈসরন উপত্যকায় যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর যেতে পারেনি তারা। বৈসরনের পরিবর্তে ট্যাক্সিতে চেপে পহেলগাঁওয়েরই অন্য এক জায়গায় গিয়েছিল। আর তাতেই বেঁচে গিয়েছে ২৩ জনের প্রাণ।
ভারতের সেই ‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’ বৈসরন উপত্যকায় যাওয়ার পথ বেশ দু্র্গম। কাদা-পথ, জঙ্গল পেরিয়ে তবেই পৌঁছোনো যায় সেখানে। ঘোড়ায় ছাড়া ওই উপত্যকায় যাওয়ার উপায় নেই। কেরলের ওই দলের এক পর্যটক বলেন, ‘‘ঘোড়াওয়ালা সেখানে যাওয়ার জন্য যে ভাড়া চেয়েছিলেন, তা আমাদের একটু বেশি বলে মনে হয়েছিল। তাই আমরা ট্যাক্সিতে চেপে অন্য একটি জায়গায় গিয়েছিলাম। তার পর স্থির করি, সেখান থেকে বৈসরনে যাব। যাওয়ার পথে জোরে কিছু শব্দ শুনেছিলাম। দেখি রাস্তায় দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিছু লোকজন দৌড়চ্ছে।’’
ওই দলের এক মহিলা পর্যটক জানান, প্রথমে কিছুই তাঁরা বুঝতে পারেননি। গাইডকে আরও কয়েক জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। ওই মহিলার কথায়, ‘‘ওখানে বসে বুঝতে পারিনি যে, বৈসরনে ঠিক কী চলছিল। গাইডকে বলি, আর কয়েকটা জায়গায় নিয়ে যেতে। তিনি বলেন, বেঁচে থাকতে চান নাকি ঘুরতে যেতে!’’ তার পরে তাঁরা আবার ট্যাক্সিতে চেপে হোটেলে ফিরে আসেন। সেখানে টিভিতে দেখে জানতে পারেন হামলার বিষয়টি। কেরলের এক পর্যটকের কথায়, ‘‘ঘোড়ায় চেপে তখন যদি বৈসরনে যেতাম, তা হলে আমরাও হয়তো খুন হতাম।’’ ওই পর্যটকদের আরও অভিযোগ, কাশ্মীরের রাস্তায় নিরাপত্তারক্ষীরা থাকলেও পর্যটনস্থলগুলিতে তাঁরা ছিলেন না। তাঁদের আক্ষেপ, বৈসরন উপত্যকায় মঙ্গলবার নিরাপত্তাবাহিনী থাকলে এই কাণ্ড ঘটত না। ওই উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ জনের। সকলেই প্রায় পর্যটক।