Meerut

Meerut: গাড়ির টাকা নেই, দু’বছরের ভাইয়ের দেহ কোলে টলমল পায়ে হেঁটে চলেছে বছর দশেকের দাদা

শিশুটি কাঁদত বলে সৎমা তাকে রাস্তায় চলন্ত গাড়ির নীচে ছুড়ে ফেলেন। চাকায় পিষে মৃত্যু হয় শিশুটির।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
মেরঠ শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২২ ১৩:০৮
ভাইয়ের দেহ কোলে নিয়ে হাঁটছে সাগর।

ভাইয়ের দেহ কোলে নিয়ে হাঁটছে সাগর।

সাদা কাপড়ে মোড়ানো একটি শিশুর দেহ কোলে নিয়ে হেঁটে চলেছে বছর দশেকের এক বালক। একটু এগোচ্ছে, ক্লান্তিতে থামছে। আবার এগোচ্ছে, আবার থামছে। এ ভাবেই টলমল পায়ে রাস্তা ধরে এগোচ্ছিল সে। মুখে ক্লান্তি, বিষণ্ণতার ছাপ। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়েছিল। কিছুটা শুকিয়ে গিয়েছিল। তার দাগও স্পষ্ট। কিশোরের কয়েক হাত দূরেই পিছু পিছু আসছিল তার বাবা। এমনই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখা ধরা পড়ল উত্তপ্রদেশের বাগপতে।

যে কিশোরটি কোলে সাদা কাপড়ে মোড়া শিশুটিকে নিয়ে হাঁটছিল, সেই শিশুটি তার ভাই। বয়স মাত্র দু’বছর। অভিযোগ, শিশুটি কাঁদত বলে সৎমা তাকে রাস্তায় চলন্ত গাড়ির নীচে ছুড়ে ফেলেন। চাকায় পিষে মৃত্যু হয় শিশুটির।

Advertisement

খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিশুটির দেহ উদ্ধার করে বাগপত হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল। ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর প্রবীণ কুমার তাঁর বছর দশেকের ছেলে সাগরকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন। সন্তানের ময়নাতদন্ত হওয়ার পর রামপালের হাতে তার দেহ তুলে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই দেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে বলেছিলেন পেশায় দিনমজুর প্রবীণ। অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে তা ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। গাড়ি ভাড়া করে সন্তানের দেহ ৪০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবেন, সেই টাকাও ছিল না প্রবীণের কাছে। ফলে বাধ্য হয়েই সন্তানের দেহ নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা লাগান।

কিছু দূর যাওয়ার পর সন্তানের দেহ ছেলে সাগরের কোলে তুলে দেন প্রবীণ। তাঁর কথায়, ‘‘কিছুটা হাঁটার পর আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই ছোট ছেলের দেহ আমার বড় ছেলে সাগরের কোলে তুলে দিয়েছিলাম।” এক কিশোরকে শিশুর দেহ কোলে নিয়ে হাঁটতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এর পরই গাড়ির ব্যবস্থা হয়। বাগপত হাসপাতালের সিএমও দীনেশ কুমার বলেন, “যাঁরা শববাহন চান, তাঁদেরই দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট দেরি হয়েছিল। তত ক্ষণে ওই ব্যক্তি তাঁর সন্তানের দেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটা লাগান। বিষয়টি আমার গোচরে আসতেই ওঁদের জন্য শববাহনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement