সঙ্গমের ফলে যৌনাঙ্গে বাসা বাঁধতে পারে একাধিক রোগ৷ ছবি: শাটারস্টক।
জড়িয়ে-জাপটে ভালবাসার পর বিছানা ছেড়ে উঠতে কারই বা ভাল লাগে? কিন্তু শরীরের কথা ভেবে এক বার যে উঠতেই হবে! সঙ্গমের পর কেউ অভ্যাসবশত প্রস্রাব করেন, কেউ বা সতর্ক হয়ে। অনেকের ধারণা, অসুরক্ষিত যৌন মিলনের পর প্রস্রাব করলেই সন্তানধারণের ঝুঁকি কমে। আদৌ কি সে কথা ঠিক?
সঙ্গমের ফলে যৌনাঙ্গে বাসা বাঁধতে পারে একাধিক রোগ৷ অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে যেমন সঙ্গমের সময়ে কন্ডোমের প্রয়োজন, তেমনই সঙ্গমের পর নিয়ম করে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করা এবং প্রস্রাব করার কথাও মাথায় রাখতে হবে৷ এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে৷ তবে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা এই পন্থায় বেশি উপকৃত হন।
ছেলেদের শরীরে অনেক সময়েই এমন কিছু ব্যাক্টেরিয়া এসে ভিড় জমায়, যা এক বার মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করলেই ‘ইউটিআই’-এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু যৌনমিলনের পর যদি প্রস্রাব করার অভ্যাস করা যায়, তা হলে কিন্তু ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। এই ধরনের সংক্রমণ হলে প্রস্রাবের সময়ে জ্বালা করা, ঘন ঘন প্রস্রাব, তলপেটে তীব্র ব্যথা, অল্পতেই ক্লান্ত লাগা এবং জ্বর আসার মতো লক্ষণগুলির বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। এ রকম লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে। এই সংক্রমণ যদি এক বার কিডনিতে ছড়িয়ে যায়, তা হলে কিন্তু আরও বিপদ!
সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে নয়, অনেক মহিলা কন্ডোম ছাড়া সঙ্গমের পরই প্রস্রাব করে নেন, এতে নাকি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। চিকিৎসকদের মতে, এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ভুল। প্রস্রাব নির্গত হয় মূত্রনালি থেকে, যোনির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। তাই প্রস্রাব করলেই যোনি থেকে সব ধুয়ে যাবে, এমনটা হওয়ার নয়। প্রস্রাব করলেই যে অন্তঃসত্ত্বা হবেন না— এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। সঙ্গমের পর প্রস্রাবের অভ্যাস আপনার যৌনরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমায় না। এ ক্ষেত্রে কন্ডোমের ব্যবহারই একমাত্র মুক্তির পথ। অসুরক্ষিত মিলনের পর অনেক গর্ভনিরোধক ব্যবহার করা যায় বটে, তবে কোনও বড়িই গর্ভধারণের ঝুঁকি ১০০ শতাংশ এড়াতে পারে না।
সংক্রমণ এড়াতে কি সঙ্গমের পর মুহূর্তেই প্রস্রাব করতে হবে?
না এমনটা নয়। যৌনমিলনের পর পরবর্তী অন্তরঙ্গ মূহূর্তগুলিকে উপভোগ করাও জরুরি। এতে মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হয় আর সম্পর্কের ভিতও মজবুত হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সঙ্গমের ৩০ মিনিটের মধ্যেই প্রস্রাব করলে মূত্রনালির সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। তাই খুব বেশি তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই।