ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি কী বিপদ ডেকে আনে? ছবি: সংগৃহীত।
ভিটামিন বি১২ দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অপরিহার্য উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের প্রায় ৪৭ শতাংশ মানুষ এই ভিটামিনের অভাবে ভুগছে। বিশেষত, যাঁরা নিরামিষ খাবার খান, তাঁদের মধ্যে এই ঘাটতি বেশি দেখা যায়। কেন দরকার ভিটামিন বি ১২?
রক্তকণিকা ও স্নায়ুকোষের স্বাস্থ্য রক্ষায়, ডিএনএ ও জিনগত উপাদান তৈরিতে এবং হাড় ভাল রাখতেও এই ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া চুল, নখ ও ত্বক ভাল রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার। এই ভিটামিনের অভাবে মানসিক অবসাদ গ্রাস করতে পারে। এই ভিটামিনের অভাব হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জেনে নিন কেন এই ভিটামিন শরীরের পক্ষে এত জরুরি।
১) চিন্তাশক্তি এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে ভিটামিন বি১২-এর অভাব দেখা দিলে। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, মস্তিষ্কের স্নায়ুর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন রোগ যেমন ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্স, পার্কিনসন্সের সঙ্গে ভিটামিন বি১২-এর যোগ রয়েছে।
২) চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন শরীরে ২ থেকে ৩ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি১২-এর প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু এই স্বল্প পরিমাণ ভিটামিনের অভাবে ঘটে যেতে পারে ব়ড় রকমের স্নায়ুর সমস্যা। এই ভিটামিনের অভাবে মস্তিষ্কের স্নায়ু শুকিয়ে যেতে পারে। ফলে বয়সের ভার পড়ার আগেই স্মৃতি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
৩) ভিটামিন বি ১২-এর অভাবে শরীরে রক্তের ঘাততি হয়। এর ফলে ত্বক বিবর্ণ হতে শুরু করে। এ ছাড়া, ত্বকে শ্বেতি, চুলের রং বদলে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা যায়।
৪) ভিটামিন বি-১২-এর অভাবে পেটের সমস্যাও শুরু হতে পারে। পেটে সংক্রমণ, প্রদাহের মতো সমস্যা দেখা যায়।
৫) মুখে ঘা হলে অনেকেই পরামর্শ দেন ভিটামিন বি১২ খাওয়ার। এই লক্ষণ দেখলে বোঝা যায় শরীরে এই ভিটামিনের অভাব রয়েছে। মুখের ঘা থেকে মুখের ভিতর জ্বালাভাব, দুই-ই কমাতে পারে ভিটামিন বি১২।
নিরামিষ খাবারে এই ভিটামিনের পরিমাণ কিছুটা কম থাকে। প্রাণিজ খাবারে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে ভিটামিন বি১২ থাকে। ডিম, মাশরুম, বিভিন্ন ধরনের মাংস ও মেটে, সামুদ্রিক মাছের মতো খাবার ভিটামিন বি১২-এর সমৃদ্ধ উৎস। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি খাবারে ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়। যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁরাও সেগুলি অনায়াসে খেতে পারেন। প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে রেড মিট, মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, দুধ, দই, ছানা ও ডিমে ভাল মাত্রায় এই ভিটামিন পাওয়া যায়।