কোন রোগের হানাতে ঠোঁটের রং বদলে যেতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
ত্বক ও চুলের যত্নের প্রতি কম-বেশি সকলে যত্নশীল হলেও ঠোঁটের যত্ন আমরা মোটেই নিতে পারি না। ঠোঁটের রং বদলে যাওয়া নিয়েও মাথাব্যথা নেই অনেকের। কিন্তু জানেন কি, কালচে দাগের পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে বড় রোগের উপসর্গ?অনেকের ধারণা, কেবল সিগারেট খেলেই ঠোঁট কালো হয়ে যায়। হ্যাঁ ঠিক, নিকোটিন এবং বেনজোপাইরিন ত্বকের মেলানিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, এর ফলে কালো হয়ে যেতে পারে ঠোঁট। কিন্তু এই একটা কারণেই নয়, ঠোঁটে ক্যানসার বাসা বাঁধলেও তার রং পাল্টে যেতে পারে। ঠোঁটের ক্যানসারের জন্য প্রধানত দায়ী সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি। যাঁরা দিনের বেশির ভাগ সময়টা রোদে কাটান, তাঁদের ঠোঁটের ক্যানসারের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তা ছাড়া, তামাক ও মদের আসক্তি থাকলেও ঠোঁটের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের আক্রমণেও এই রোগ হতে পারে।
কোন লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হবেন?
১) ঠোঁটে কালশিটে দাগ, ক্ষত, ফোস্কা ও ফোলা ভাব, লাল দাগ যদি দীর্ঘ দিনেও না কমে।
২) ঠোঁটে লাল, সাদা দাগ ছোপ।
৩) ঠোঁটে রক্তপাত সঙ্গে ব্যথা।
৪) চোয়াল ফুলে যাওয়া।
তবে মনে রাখতে হবে এ সব ঠোঁটের ক্যানসারের উপসর্গ না-ও হতে পারে। নির্ভুল ও সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য এ সব উপসর্গ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
আর কোন রোগের হানাতে ঠোঁটের রং বদলে যেতে পারে?
১) সায়ানোসিস: ঠোঁটের রং যদি নীলচে হয়ে আসে, তবে তা সায়ানোসিস নামক রোগের লক্ষণও হতে পারে। ঠোঁট নীলচে হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে যদি শ্বাসকষ্টও হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে এই প্রকার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২) অ্যাডিসনস ডিজিজ: এই রোগে আক্রান্ত হলে ঠোঁটের হাইপার পিগমেন্টেশন বা অতিরঞ্জন ঘটতে পারে। এই রোগে শরীরের অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে কর্টিসোল এবং অ্যালডোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। এই হরমোনগুলির ভারসাম্য নষ্ট হলে দেহের বিভিন্ন অংশ কালো হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে ঠোঁটেও।
এ ছাড়াও শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতি হলে, শরীরে আয়রন জমতে শুরু করলে, হরমোনের তারতম্য হলে বা নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের প্রভাবেও ঠোঁটের রং কালচে হয়ে যেতে পারে। প্রাথমিক পর্যায় রোগ ধরা পড়লে সুস্থ হয়ে ওঠার হার বেড়ে যায়। তাই কালচে ঠোঁটের পিছনে কোন কারণ লুকিয়ে রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করুন।