Chronic Kidney Disease

পা ফুলছে, সকালে উঠেই বমি ভাব? বাত বা লিভারের রোগ নয়, আসল কারণ জানালেন চিকিৎসকেরা

সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখলেন, পায়ের পাতা ও গোড়ালি ফুলে উঠেছে। প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগছে, খিদে নেই। দিনভর বমি ভাব। এমন সমস্যা দিনের পর দিন হলে সতর্ক হতেই হবে। রোগ না বুঝে নিজে থেকে ওষুধ খাওয়াও বিপজ্জনক হতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২:১৯
What are the alarming signs of Kidney Failure

পা ফোলা, গা গোলানো, খিদে কম— কোন রোগের লক্ষণ? ছবি: ফ্রিপিক।

পা ফোলা, পায়ে ব্যথা মানেই অনেকে ধরে নেন আর্থ্রাইটিস বা বাতজনিত অসুখ। বমি ভাব, ঝিমুনি, পেটে ব্যথা মানে হয়তো ভাবতে পারেন গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বা লিভারের রোগ। দিনের পর দিন যদি এমন সমস্যা দেখা দিতে থাকে, তা হলে কিন্তু সাবধান হতেই হবে। যখন-তখন পা ফুলে যাওয়া, খিদে কম, ওজন কমে যাওয়ার কারণ অন্য কিছুও হতে পারে। সেটা কী, তা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

শরীরের যে কোনও সমস্যা হোক, তা সঠিক ভাবে নির্ণয়ের আগেই ভেবে নেওয়া হয় যে, এই রোগ হয়েছে, বা ওই অসুখ হয়েছে। নিজে থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ার প্রবণতাও বেশি। কেউই আর ব্যস্ত সময়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেওয়ার কথা ভাবেন না। এই গাফিলতির কারণেই রোগ ধরা পড়ে না শুরুতে। পরে তা বিপজ্জনক চেহারা নিলে টনক নড়ে। ঠিক যেমনটা হয় কিডনির অসুখের ক্ষেত্রে। এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, ক্রনিক কিডনির রোগ এক দিনে হয় না। দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে ডালপালা মেলতে থাকে। রোগের লক্ষণ বহু আগে থেকেই প্রকাশ পায়, যা এড়িয়ে যান বেশির ভাগই। আবার সচেতনতার অভাবে অনেকে বুঝতে পারেন না যে, শরীরের সমস্যাগুলি ঠিক কী কারণে হচ্ছে।

উদাহরণ দিয়ে চিকিৎসক বোঝালেন, পা ফোলা, সকালে উঠেই বমি ভাব, দিনভর ক্লান্তি, আচমকা ওজন কমে যাওয়া— সবই কিডনির অসুখের লক্ষণ। শরীরের বিভিন্ন প্রান্তে তরল পদার্থ জমে গেলে সংশ্লিষ্ট অঙ্গটি ফুলে যেতে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ইডিমা। সাধারণত কিডনির সমস্যায় পায়ের গোড়ালি ও চোখের তলায় জমা হয় তরল। অনেক সময় কিডনিতে অবস্থিত সূক্ষ্ম নালিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ‘নেফ্রোটিক সিনড্রোম’ দেখা যায়। তখন হাত-পা ফুলে যায়, ব্যথা হয়, শরীরে প্রদাহ হতে থাকে।

কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করলে, শরীরে সোডিয়াম ও ফসফরাসের ভারসাম্য নষ্ট হতে থাকে। খনিজ লবণের তারতম্যের কারণে শরীরের পেশিগুলির নমনীয়তা নষ্ট হয়। ফলে পেশিতে টান ধরার সমস্যা বাড়ে। সুতরাং পায়ের পাতা ও গোড়ালি ফুলে গেলে অবহেলা না করে পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের।

বার বার প্রস্রাব পাওয়া মানেই যে কিডনির রোগ, তা সব সময়ে না-ও হতে পারে। এখানেই ভুলটা হয় অনেকের। ক্রনিক কিডনির রোগ হলে কিন্তু শরীরে রক্ত কমে যায়, প্রচণ্ড ক্লান্তি, অবসাদ, মনঃসংযোগ নষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দেয়। এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল। এই সব লক্ষণও যে কিডনির রোগের, তা না বুঝেই নিজে থেকে নানা রকম ওষুধ খেয়ে নেন অনেকেই। ফলে অসুখ গড়িয়ে যায় অনেক দূর। ছোটবেলায় নেফ্রাইটিস, পরিবারে কিডনির অসুখের ইতিহাস থাকলে বা ব্যথাবেদনার ওষুধ যদি কেউ দীর্ঘ সময় ধরে খেয়ে যান, তা হলে কিন্তু কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেও অবহেলা করা ঠিক নয়। স্বাস্থ্যপরীক্ষার সময়ে কিডনির পরীক্ষা করাও জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন