প্রোবায়োটিক কেন এত জরুরি। ছবি: ফ্রিপিক।
আপনি কি জানেন প্রোবায়োটিক কী? রোজের ডায়েটে অবশ্যই প্রোবায়োটিক রাখতে বলছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদেরা, কারণ প্রোবায়োটিক শরীরের কোনও ক্ষতি করে না। অসুখবিসুখ থেকে বাঁচাতে পারে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও তৈরি করে। কিন্তু এই প্রোবায়োটিক আসলে কী? সেটা জেনে নেওয়া জরুরি।
রোগ হলেই মুড়িমুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিক খেতেই আমরা অভ্যস্ত। প্রোবায়োটিকের গুণাগুণ সম্পর্কে তেমন ধারণা অনেকেরই নেই।
আমাদের শরীরে যেমন খারাপ ব্যাকটেরিয়া আছে, তেমনই ভাল ব্যাকটেরিয়াও আছে। এই ভাল ব্যাকটেরিয়ারা হজমশক্তি বাড়ায়। খাদ্য বিপাকে সাহায্য করে। প্রোবায়োটিক হল এমন কিছু জৈব পদার্থ, যা শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিন আমরা যে সব ফল বা শাকসব্জি খাই, তার মাধ্যমে অনেক রাসায়নিক ঢোকে শরীরে। বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে আমাদের অন্ত্রে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ে। এই খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলি নষ্ট করার জন্যই প্রয়োজন প্রোবায়োটিক।
শরীর কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ, জল— এই ছয়টি স্তম্ভের উপরেই নির্ভরশীল। আর খাবার থেকে এই পুষ্টিগুণ শরীরে শোষণ করতে সাহায্য করে উপকারী ব্যাকটিরিয়া। আর তার ভারসাম্য বজায় রাখে প্রোবায়োটিক। ঘুরপথে হলেও সমগ্র শরীরকে সুস্থ ভাবে চালনা করতে এর অবদান অনস্বীকার্য।
কোন কোন খাবারে থাকে প্রোয়াবোটিক?
টক দই প্রোবায়োটিকের সব চেয়ে ভাল উৎস। রোজ টক দই খেলে উপকার হবে। টক দই দিয়ে লস্যি বা ঘোল বানিয়েও খাওয়া যায়। কয়েক ধরনের চিজেও প্রোবায়োটিক থাকে।
ইডলি, দোসা, দই, আচার, ঘোলের মতো খাবারে প্রোবায়োটিক পাওয়া যাবে। কলার মধ্যে প্রচুর ফাইবার থাকে। দই ও ওট্সের সঙ্গে কলা মেশালে পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়। কাঁচা রসুনের মধ্যে ১৭.৫ শতাংশ প্রোবায়োটিক থাকে। রোজ সকালে উঠে খালি পেটে রসুনের কোয়া খেতে বলা হয়। এটিও প্রোবায়োটিকের উৎস। রান্নায় রসুন দিয়ে খেলে কিন্তু হবে না।
বাটার মিল্কেও থাকে প্রোবায়োটিক। বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন এটি। প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্টও পাওয়া যায় বাজারে। তবে রোজের খাবার থেকেই প্রোবায়োটিক শরীরে ঢুকলে ভাল হয়। পুষ্টিবিদেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ভাজাভুজি কমিয়ে বাড়িতে পাতা টক দই, ইডলি, দোসা, সয়াবিন খাওয়া দরকার।
মনে রাখতে হবে, খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায় চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার। তাই যত বেশি সাদা চিনি খাবেন, ততই খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়বে। তাই মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খাওয়াই ভাল।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। প্রোবায়োটিক কারা খাবেন, কী কী খেলে ভাল, তা চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়াই উচিত।