Joint Pain Relief

বাতের ব্যথায় অস্থির? ঠাকুর দেখতেও মন চায়, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা সামলে পুজোয় আনন্দ করার টিপ্‌স

মধ্য চল্লিশে সেই যে হাঁটু, কোমরে ব্যথা ধরেছে, তা আর ছাড়ার নাম নেই। বয়সের চাকা গড়গড়িয়ে যতই এগোক, মনে এখনও সেই শৈশবের মতোই ঠাকুর দেখার বাসনা। কাজেই, মন চাইলেও, শরীর সায় দিচ্ছে না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ১২:১৭
Ways to Get Relief from Arthritis Pain Naturally

বাতের ব্যথাবেদনা নিপাত যাক, পুজোয় সুস্থ থাকার উপায় বললেন চিকিৎসকেরা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ষষ্ঠীতে দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অগ্রণী, সপ্তমীতে মহম্মদ আলি পার্ক কিংবা অষ্টমীতে উত্তর কলকাতার অলিগলি ঘুরে ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা না হলে কি আর বাঙালির দুর্গাপুজো জমে! পুজোর সময়ে শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে ফেলতে মন চায়। পুজোর সাজ থেকে খাওয়াদাওয়া, ঠাকুর দেখা— ক’টা দিন অফিস, সংসার, হেঁশেল সব কিছু থেকে ছুটি নিয়ে আনন্দ করার ইচ্ছায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে একটিই ব্যাপার। বাতের ব্যথা। মধ্য চল্লিশে সেই যে হাঁটু, কোমরে ব্যথা ধরেছে, তা আর ছাড়ার নাম নেই। বয়সের চাকা গড়গড়িয়ে যতই এগোক, মনে এখনও সেই শৈশবের মতো ঠাকুর দেখার বাসনা। কাজেই মন চাইলেও, শরীর সায় দিচ্ছে না। কেউ হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পরে হিমশিম খাচ্ছেন, কারও উঠতে-বসতে গেলে পায়ের পাতা থেকে হাঁটু অবধি ঝনঝনিয়ে উঠছে। তাই বলে কি পুজোর আনন্দ মাটি হবে?

Advertisement

একেবারেই নয়। পুজোয় ভিড় ঠেলে ঠাকুরও দেখতে পারবেন আবার হেঁটে হেঁটে এ প্যান্ডেল থেকে ও প্যান্ডেল চষে বেড়াতেও পারবেন। কেবল কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। উপায় বলে দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

অস্থি চিকিৎসক সুব্রত গড়াইয়ের পরামর্শ, পুজোয় পুজোয় ঘোরাঘুরির পরিকল্পনা থাকলে দু’-চার দিন আগে থেকেই কোলাজেন পেপটাইড খেতে শুরু করতে পারেন। এটি এক ধরনের সাপ্লিমেন্ট, যা অস্থিসন্ধি ও হাড়ের গঠন মজবুত করে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই খেতে হবে।

শরীরচর্চা ছাড়া কোনও ভাবেই পায়ের সমস্যা থেকে মুক্তির পথ নেই। তাই পুজোয় ঠাকুর দেখতে গিয়ে এক দিন হঠাৎ হাঁটার বদলে রোজ অল্প অল্প করে শরীরচর্চা করুন। কী করবেন? একটি রবারের টিউব নিন। সাইকেলের টায়ারে যেমন থাকে। দোকানে পেয়ে যাবেন। চেয়ারের পায়ার নীচে টিউবটি গলিয়ে দিন। পিঠ সোজা রেখে চেয়ারে বসুন। টিউবে দুই পা গলান। পায়ের পাতার উপর টিউবটি থাকবে। এ বার টিউবে গলানো অবস্থাতেই দুই পা একসঙ্গে সামনের দিকে তুলুন আর নামান। ৩ সেটে ১২ বার করে করুন। এতে পায়ের জোর বাড়বে। পুজোয় হাঁটতে চাইলে এখন থেকেই শুরু করে দিন।

দুর্গাপুরের এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক প্রবীরকুমার দত্ত জানাচ্ছেন, ‘ভিসকো সাপ্লিমেন্টেশন’ নামে এক ধরনের ইঞ্জেকশন আছে, যেটা অনেকটা জেলির মতো। তাতেও ভাল কাজ হয়। অতিরিক্ত ব্যথা হলে এই ইঞ্জেকশন দেওয়া যেতে পারে। তাতে গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা অনেক কমবে।

পুজোয় যদি হেঁটে ঠাকুর দেখতে চান, তা হলে এখন থেকে খাওয়াদাওয়া ও বিশ্রামে নজর দিন। ভাজাভুজি, জাঙ্ক ফুড বন্ধ করতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। পা মুড়ে মাটিতে বসা, একটানা বসে টিভি দেখা বা কম্পিউটারে কাজ করা চলবে না। বার বার সিঁড়ি চড়া ও নামার কারণে হাঁটুর ব্যথা বাড়তে পারে। এই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কী ধরনের জুতো পরছেন, তা-ও জরুরি। সরু হিল বা প্ল্যাটফর্ম হিলও চলবে না। এক দিন আনন্দ করবেন বলে হিল পরলেই কিন্তু বিপদ। তার থেকে আরামদায়ক জুতো পরুন, ব্যথা কম ভোগাবে।

একটানা কখনওই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাকুর দেখবেন না। মাঝে বিরতি নিন। খুব ভিড়ের মধ্যে অনেক ক্ষণ লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা থেকে বিরত থাকুন। বয়স্করা নি-ক্যাপ পরে নিতে পারেন বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে। ঘণ্টা দুয়েক হাঁটাহাঁটি করে বাড়িতে এসে বরফজলে ১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে বসুন। পেশির ক্লান্তি দূর হবে। পরের দিন আবার ঠাকুর দেখতে বেরোতে পারবেন।

আরও পড়ুন
Advertisement