Ranojoy bishnu

স্লিপ ডিস্কের সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছেন অভিনেতা রণজয়! ঠিক কী হয় এই রোগে? উপসর্গ কী?

এই অসুখে প্রথম দিকে হালকা ব্যথা হয়। পরিমাণ কম থাকে বলে অনেকেই এই হালকা ব্যথাকে অগ্রাহ্য করে। এমন একটা সময় আসে যখন দেখা যায়, হাঁটতে গেলে পায়ে যন্ত্রণা হচ্ছে৷ কেন হয় এই সমস্যা?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২২ ২০:৩০
অভিনেতা রণজয় বিষ্ণুর ১০ বছর আগে স্লিপ ডিস্কের সমস্যা ধরা পড়ে।

অভিনেতা রণজয় বিষ্ণুর ১০ বছর আগে স্লিপ ডিস্কের সমস্যা ধরা পড়ে। ছবি: সংগৃহীত।

মাথার পিছনে কী হচ্ছে দেখতে গেলে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া উপায় নেই! দরজার কব্জায় মরচে ধরে গেলে যেমন খুলতে বা বন্ধ করতে অসুবিধা হয়, ঘাড়ের অবস্থাটা অনেকটা তেমনই। কোমরের অবস্থাও বেজায় খারাপ! এই সমস্যা অনেকেরই হয়। এঁদের বেশির ভাগই মধ্য বয়সি, ৩৫ থেকে ৬০ বছর। আমদের মাথা উঁচু করে চলার জন্য শিরদাঁড়া ঋজু আর টানটান থাকা দরকার। কিন্তু বিভিন্ন কারণে মেরুদণ্ডের অসুবিধা হলে ঘাড়, পিঠ আর কোমরের ব্যথায় কাতর হতে হয়। এই ব্যথার এক অন্যতম কারণ স্লিপ ডিস্কের সমস্যা।

অভিনেতা রণজয় বিষ্ণুর ১০ বছর আগে স্লিপ ডিস্কের সমস্যা ধরা পড়ে। তার পর একটি দুর্ঘটনা ঘটলে সেই ব্যাথা আরও বেড়ে যায়। ১০ বছর পরে সেই যন্ত্রণা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে যায় যে, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এখন বাড়িতে ফিরেছেন বটে, তবে ব্যথা এখনও আছে। চলছে ফিজিয়োথেরাপি।

Advertisement

চিকিৎসকদের মতে, এই অসুখে প্রথম দিকে হালকা ব্যথা হয়। পরিমাণ কম থাকে বলে অনেকেই এই হালকা ব্যথাকে অগ্রাহ্য করে। ভিতরে ভিতরে জটিল হয়ে উঠতে থাকে এই ব্যথা। এমন একটা সময় আসে যখন দেখা যায়, হাঁটতে গেলে পায়ে যন্ত্রণা হচ্ছে৷ আবার দাঁড়ালে কমে যাচ্ছে৷ পায়ে অবশ ভাবও থাকতে পারে৷ এর সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয়ে এঁবড়ো-খেবড়ো হয়ে গেলে বিপদ বাড়ে৷ কখনও নড়বড়ে হয়ে যায় মেরুদণ্ড৷ হাঁটতে গেলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে৷

ঠিক কী হয় এই রোগে?

২৬টি ছোট্ট ছোট্ট হাড়ের টুকরো দিয়ে তৈরি আমাদের মেরুদণ্ড। দু’টি টুকরোর মাঝখানে থাকে ছোট্ট কুশনের মতো ডিস্ক। হাঁটাচলা, শোয়া, বসা-সহ নানা কাজকর্মের সময়ে হাড়ে হাড়ে যাতে ঘষাঘষি লেগে হাড় ক্ষয়ে না যায়। তার জন্যই এই ডিস্ক। এর মধ্যে রয়েছে নরম জেলির মতো এক বিশেষ পদার্থ। ডিস্ক দু’টি হাড়ের টুকরোকে ঘর্ষণ থেকে রক্ষা করে। ভারী জিনিস তোলা, দুর্ঘটনা-সহ নানা কারণে ডিস্কের মধ্যের জেলির সামান্য অংশ বাইরে বেরিয়ে যায়। এরই নাম স্লিপ ডিস্ক। শুধু বেরিয়ে চুপচাপ বসে থাকে না। হাঁটাচলা বা কাজকর্মের সময়ে চাপ দেয় স্নায়ুর উপর। আর এর ফলেই হয় সাংঘাতিক ব্যথা।

ইদানীং আবার ফিটনেসবিদের সাহায্য ছাড়া জিম ও ওয়েট লিফটিং করতে গিয়েও স্লিপ ডিস্কের ঝুঁকি বাড়ছে।

ইদানীং আবার ফিটনেসবিদের সাহায্য ছাড়া জিম ও ওয়েট লিফটিং করতে গিয়েও স্লিপ ডিস্কের ঝুঁকি বাড়ছে। ছবি: শাটারস্টক।

কারা বেশি সাবধান হবেন?

যে কোনও বয়সের মানুষের যে কোনও সময়ে স্লিপ ডিস্ক ঝুঁকি থাকলেও ছেলেদের ঝুঁকি মেয়েদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। আসলে ভারী কাজ, ফুটবল খেলা, সাইকেল নিয়ে কসরত করা বা অতিরিক্ত দৌড় ঝাঁপ করার কারণে এই অসুখের আশঙ্কা বাড়ে। ইদানীং আবার ফিটনেসবিদের সাহায্য ছাড়া জিম ও ওয়েট লিফটিং করতে গিয়েও স্লিপ ডিস্কের ঝুঁকি বাড়ছে। ধূমপান এই রোগের ঝুণকি বাড়িয়ে দেয়। তবে নিয়মিত শিরদাঁড়ার সঠিক ব্যায়াম ও যত্ন এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement