নিয়ম মেনে ইনসুলিন নিলেই তবেই মিলবে ফল। ছবি: সংগৃহীত।
এক বার ডায়াবিটিস আক্রান্ত হলেই জীবনে চলে আসে হাজার রকম বিধিনিষেধ। টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওষুধেও যখন রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তখনই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনসুলিন নিতে হয় রোগীকে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষেরই ইনসুলিন নিয়ে নানা সংশয় থাকে। তাঁরা ভাবেন, ইনসুলিন নেওয়া শুরু হয়েছে মানেই ডায়াবিটিস খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। কারও আশঙ্কা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে। কেউ আবার ইনসুলিন নিচ্ছেন বলে নিয়মকানুন ভুলে সব কিছু খেতে শুরু করেন। এ সবই ভ্রান্ত ধারণা। ডায়েট, ব্যায়াম ও ওষুধের নিয়ম মানার পরও যখন আর অগ্ন্যাশয় থেকে পর্যাপ্ত ইনসুলিন বেরোয় না, তখন বাইরে থেকে ইনসুলিন দিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে হয়। ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ভুলের ফল হতে পারে মারাত্মক।
১) ইনসুলিনের মাত্রা সম্পর্কে খুব বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসকের নির্দেশ মেনেই এর ডোজ় নিতে হবে। ডোজ় উপর-নীচ হয়ে গেলেই ফল হতে পারে মারাত্মক। নিয়মিত রক্তের শর্করার মাত্রা পরিমাপ করতে হবে। কম-বেশি হলে সেই বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনসুলিনের মাত্রাও কমবেশি করতে হবে।
২) ইনসুলিনের কোনও ডোজ় নিতে ভুলে গেলে কিন্তু সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে। যে সময়ে ইনসুলিন নিতে বলা হয়েছে, সেই সময় পার হয়ে গেলে কী করণীয়, তা চিকিৎসকের কাছে ভাল করে জেনে নিন। বার বার এই ভুলের ফল হতে পারে মারাত্মক। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার কত ক্ষণ পর অবধি ইনসুলিন নিতে পারেন, তা চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন।
৩) ইনসুলিন নিলেও শরীরচর্চা বন্ধ করা উচিত নয়। অনেক সময় পর্যাপ্ত ইনসুলিন নেওয়া সত্ত্বেও রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক ভাবে কমে না। অর্থাৎ, ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স হয়। ব্যায়াম করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইনসুলিনের কার্যকারিতা অনেক বেড়ে যায়।
৪) ইনসুলিন সব সময়ে ফ্রিজে রাখাই শ্রেয়। ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার বেশি ইনসুলিন ফ্রিজের বাইরে রাখলে তার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। তাই সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সুচ বদলাতে হবে। না হলে কিন্তু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
৫) ইনসুলিন নিলেও যা ইচ্ছা খাবার খাওয়া যায় না। ইনসুলিন নিলে রক্তের শর্করার মাত্রা কমে ঠিকই, কিন্তু খাবারে রাশ না টানলে সেই মাত্রা আবারও বেড়ে যেতে পারে। তাই ইনসুলিন নিচ্ছেন মানেই যা ইচ্ছে তা-ই খাবেন, এই ধারণা রাখলে ফল হতে পারে হিতে বিপরীত।