Office Etiquette During Monsoon

মরসুম বদলাতেই জ্বর-সর্দি, কী ভাবে সুরক্ষিত রাখবেন নিজেকে? কর্মক্ষেত্রে কতটা সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি!

ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি। একজনের থেকে অন্য জন সংক্রামিত হতে পারেন। এই অবস্থায় কোন সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ১৮:৪৪
মরসুম বদলাতেই জ্বর-সর্দি, কর্মক্ষেত্রে কতটা  সাবধানতা অবলম্বন জরুরি!

মরসুম বদলাতেই জ্বর-সর্দি, কর্মক্ষেত্রে কতটা সাবধানতা অবলম্বন জরুরি! ছবি: সংগৃহীত।

বর্ষা শুরু হতেই ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি! আজ এ অসুখে পড়ছে তো কাল অন্য জন। বৃষ্টির মরসুমে আচমকা কিছুটা তাপমাত্রা কমে যায়। আবার একই সঙ্গে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় এ সময় ভাইরাস, ব্যাক্টিরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। সঙ্গে থাকে জলবাহিত ও মশাবাহিত অসুখ। সমস্যা হল, জ্বর, হাঁচি-কাশিতে একজনের থেকে অন্য জনের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। স্কুল হোক বা অফিস, যে কোনও জায়গাতেই যে কোনও বয়সীরা অন্যের থেকে সংক্রমিত হতে পারেন। এই অবস্থায় কী ভাবে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব?

Advertisement

চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, জ্বর, সর্দি-কাশির নানা ধরন ও কারণ হতে পারে। অ্যালার্জিক রাইনাটাইটিস, ব্যক্টিরিয়া ও ভাইরাসজনিত কারণেও অসুখ হতে পারে। একমাত্র, পরীক্ষা করে বলা সম্ভব সেটা ভাইরাল ফিভার না অন্য কিছু। টানা বৃষ্টিতে আচমকা তাপমাত্রা কমে যাওয়া, আবার বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় আচমকা আবহাওয়া বদলেও এই ধরনের সমস্যা হয় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। আচমকা বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া, ভিজে জামাকাপড়ে অফিসের এসিতে দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে ঠান্ডা লেগে গিয়েও জ্বর, সর্দি হতে পারে। আবার এই সময় মশাবাহিত রোগ যেমন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াও হতে পারে।

জ্বর, সর্দি-কাশি কী ভাবে ছড়াতে পারে?

অরিন্দম বলছেন, সর্দি-কাশির সময় একজনের ‘ড্রপলেট’ বা জলকণা অন্য কারও শরীরে গিয়ে পড়তে পারে। আবার তা কোনও জিনিসের উপর পড়তে পারে। সেই ‘ড্রপলেট’ অন্যের শরীরে নাক, চোখ, মুখের মাধ্যমে প্রবেশ করলে তিনিও অসু্স্থ হয়ে পড়তে পারেন। সুবর্ণ গোস্বামীর কথায়, বাস, ট্রেনে গা ঘেঁষাঘেষি করা বসা, স্কুলে পড়ুয়াদের একসঙ্গে বসা, এমনকী কর্মক্ষেত্রেও একসঙ্গে ওঠাবসায় সর্দি-কাশি বা এই ধরনের ‘ফ্লু’ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এদিকে অনেক সময় পড়ুয়াদের পরীক্ষা, কর্মক্ষেত্রে ছুটি না নেওয়ার পরিস্থিতি থাকলে অসুস্থ অবস্থাতেই বাইরে বেরোতে হয়। সেক্ষেত্রে উপায়?

চিকিৎসকদের পরামর্শ

১. গণ পরিবহণ থেকে অফিস, স্কুল-কলেজ যিনি অসুস্থ তাঁর অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এক্ষেত্রে সুস্থ থাকতেও মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন অন্যেরা। কারণ, কখন পাশের মানুষটির হাঁচি বা কাশি থেকে ‘ড্রপলেট’ ছিটকে আসবে তা বলা অসম্ভব। সাবধানতা নিজেকেই অবলম্বন করতে হবে।

২. হাত ধোয়া খুব জরুরি বলছেন সুবর্ণ গোস্বামী। কারণ, অফিসের ডেস্ক হোক বা বাইরের কোনও জায়গা অসুস্থ মানুষটির ‘ড্রপলেট’ কোথায় পড়েছে তা কিন্তু কেউ জানেন না। হতেই পারে টেবিলে এসে পড়েছে ড্রপলেট। সেটা অজান্তে হাতে লেগে গেল। সেই হাত মুখ, চোখ, নাকে দিলে সংক্রামিত হয়ে পড়তে পারেন আপনিও।

৩. চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, এক্ষেত্রে কোভিড পরিস্থিতির ‘সোশ্যাল ডিসট্যান্টিং’ কার্যকর হতে পারে। অসুস্থ মানুষটির থেকে ৬-৮ ফুট দূরত্বে থাকতে হবে।

৪. কর্মক্ষেত্রে এসি থাকে। এসি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন অরিন্দম। না হল, এসিতে জমে থাকা ধুলো থেকে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। হাঁচি-কাশি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সুষম আহার, পর্যাপ্ত ঘুম ও সঠিক শরীরচর্চা করা দরকার।

অসুস্থ হলে কী করবেন? কোন ধরনের ওষুধ?

প্রাথমিক ভাবে প্যারাসিটামল, অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে সমস্যা বাড়লে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, কোন ধরনের জ্বর, কেন হয়েছে তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টি বায়োটিক খাওয়া উচিত নয়।

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার চরিত্রও ইদানীং বদলাচ্ছে। তাই জ্বর হলে একেবারেই দেরি করা চলবে না, দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement