Pranayama

হার্ট ভাল রাখার সহজ পন্থা হতে পারে প্রাণায়াম, কী ভাবে অভ্যাস করবেন?

যোগাসন বা জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার সময় নেই। প্রশিক্ষকেরা বলছেন, কাজ থেকে বাড়ি ফিরে কিছুটা সময় প্রাণায়াম করতে পারলেও কিন্তু শরীরে রক্ত চলাচল ভাল হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ১৯:৪৪
Three essential breathing exercises or pranayama for heart health

প্রাণায়ম করবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।

ব্যস্ত জীবনের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে সমানে হাঁপিয়ে উঠছেন। ঘরে-বাইরে কাজের চাপ! প্রাণ ভরে বাতাসটুকু নিতে দিচ্ছে না। অল্প বয়সে নানা রকম জটিল রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। উচ্চ রক্তচাপ! তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ওষুধও খেতে হয়। রক্তচাপ বশে রাখতে না পারলেই বিপদ। হার্টের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়তে থাকে। যোগাসন বা জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার সময় নেই। প্রশিক্ষকেরা বলছেন, কাজ থেকে বাড়ি ফিরে কিছুটা সময় প্রাণায়াম করতে পারলেও কিন্তু শরীরে রক্ত চলাচল ভাল হয়। হার্ট ভাল রাখতেও প্রাণায়াম করা জরুরি।

Advertisement

কোন তিন প্রাণায়াম হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে?

১) ভ্রামরী

ভ্রামরী প্রাণায়াম আসলে মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। শব্দের কম্পন স্নায়ুর উত্তেজনা প্রশমন করে। রাগ, দুশ্চিন্তা ও অনিদ্রা দূর হয় এবং রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীরের কোষকলাকে পুনরুজ্জীবিত করতে ভ্রামরী প্রাণায়ামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

কী ভাবে করবেন?

আরামদায়ক ভাবে পদ্মাসন বা সিদ্ধাসনে বসুন। হাত দু’টিকে চিন বা জ্ঞান মুদ্রায় (বুড়ো আঙুল ও তর্জনী জুড়ে হাতের তালুকে আকাশের দিকে রাখা হল জ্ঞান মুদ্রা, ওই ভাবেই নীচের দিকে রাখলে তা হল চিন মুদ্রা) দুই হাঁটুর উপর রাখুন। সোজা হয়ে বসে চোখ বন্ধ করে আরামদায়ক অবস্থায় রাখুন পুরো শরীরকে। এই প্রাণায়ামের সময় দুই ঠোঁট জোড়া অবস্থায় রাখলেও মুখের ভিতর দাঁতের দুই পাটির মাঝে সামান্য ফাঁক রাখতে হবে। এ বার ধীরে ধীরে দুই হাতের কনুই ভাঁজ করে তাদের দুই কানের কানের গহ্বরের কাছে নিয়ে যান। এ বার তর্জনী ও মধ্যমা দিয়ে কানের গহ্বর বন্ধ করে দিন বা কর্ণগহ্বরের পাশের টুপির মতো মাংসল অংশ চেপে কান বন্ধ ধরুন। তবে কোনও ভাবেই কানের ভিতরে কোনও আঙুল প্রবেশ করানো যাবে না।

২) অনুলোম-বিলোম

অনুলোমের ক্ষেত্রে এক দিকের নাক বন্ধ থাকবে। প্রথমে ডান দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজ করতে হবে। পরে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, ডান দিক দিয়ে শ্বাস গ্রহণ ও বর্জনের অভ্যাস করতে হবে। এই প্রাণায়ামে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হবে হবে তিন ধাপে। প্রথমে কিছুটা শ্বাস নিয়ে দু’ সেকেণ্ড থেমে ফের শ্বাস নিতে হবে, তার পর আবার দু’সেকেণ্ড থেমে পুরো শ্বাস গ্রহণ করতে হবে। শ্বাস ছাড়ার সময়ও বজায় রাখতে হবে এই নিয়ম। বিলোমের বেলায় দুই নাক দিয়েই একই সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই শ্বাস নেওয়া প্রয়োজন। তবে অনুলোমের মতোই তা হবে তিন ধাপে। অর্থাৎ প্রথমে কিছুটা শ্বাস নিয়ে দু’সেকেন্ড থামতে হবে। আবার শ্বাস নিতে হবে। ফের দু’সেকেন্ড থেমে শেষ ধাপে পুরো শ্বাস নিতে হবে। ছাড়তেও হবে একই পদ্ধতিতে থেমে থেমে তিন ধাপে।

Three essential breathing exercises or pranayama for heart health

কপালভাতি। ছবি: সংগৃহীত।

৩) কপালভাতি

আরামদায়ক কোনও একটি আসনের ভঙ্গিতে বসুন, তা পদ্মাসন, বজ্রাসন বা সুখাসনও হতে পারে। মাথা ও মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। দুই হাতকে জ্ঞান বা চিন মুদ্রার ভঙ্গিতে (বুড়ো আঙুল ও তর্জনী জুড়ে হাতের তালুকে আকাশের দিকে রাখা হল জ্ঞান মুদ্রা, ওই ভাবেই নীচের দিকে রাখলে তা চিন) রাখুন।

চোখ বন্ধ করে আরামদায়ক অবস্থায় রাখুন গোটা শরীর। স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শ্বাস নিন। শ্বাস ছাড়ার সময় পেটের পেশির উপর চাপ দিতে হবে। দ্রুত শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হয়। এই ভাবে বার দশেক দ্রুত লয়ে এই পদ্ধতি অভ্যাসের পর মিনিট দুই স্বাভাবিক লয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজ সারুন। সবে সবে শুরু করলে প্রতি দশ বারে একটি সেট করুন। পাঁচটি সেটে সম্পূর্ণ হয় এই প্রাণায়ামের অভ্যাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement