যক্ষ্মা থেকে বাঁচতে কী কী নিয়ম মেনে চলা জরুরি, পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকেরা। —ফাইল চিত্র।
যক্ষ্মা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ শুরু হয়েছে দেশে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব বলছে, গত কয়েক মাসে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশে নানা রাজ্যে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। রোগ নির্ণয় হয়নি এমন রোগীর সংখ্যাও কম নয়। তাদের থেকে আবার অন্যদের মধ্যেও সংক্রমণ ঘটছে। তাই যক্ষ্মা বা টিউবারকিউলোসিস থেকে বাঁচতে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নানা জায়গায় সচেতনতামূলক শিবিরের আয়োজনও করা হচ্ছে। সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে বা কোনও ক্রনিক রোগ থাকলে যক্ষ্মার ঝুঁকি বাড়ে। সে দিক থেকে ডায়াবিটিসের রোগীরাও কিন্তু ঝুঁকিতেই রয়েছেন। রোগ থেকে বাঁচতে কী করা উচিত, সে নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্ট বলছে, ভারতে প্রায় প্রতি তিন মিনিটে দু’জন যক্ষ্মা রোগীর মৃত্যু হয়। এর কারণ পরিচ্ছন্নতার অভাব, অপুষ্টি ও নানা রকম ক্রনিক রোগ। ডায়াবিটিস, এইড্সের রোগীরা, ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি চলছে এমন রোগীরা ঝুঁকিতে রয়েছেন। যক্ষ্মার ব্যাক্টেরিয়া মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস খুব দ্রুত সংখ্যায় বাড়তে পারে। তাই যক্ষ্মা হলে তা খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়েও পড়তে পারে।
যক্ষ্মা থেকে বাঁচতে সবচেয়ে আগে প্রতিষেধক নেওয়া খুব জরুরি। ডায়াবিটিস রয়েছে, ইনসুলিন নিতে হয় এমন রোগীদের বিসিজি টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এইম্সের পালমোনোলজিস্ট সন্দীপ কাদিয়ান। এই টিকা যক্ষ্মার ব্যাক্টেরিয়াকে প্রতিরোধ করতে পারে।
যথাযথ পুষ্টি যে কোনও ধরনের যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলতে পারে, এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। তাঁর মতে, ডায়াবিটিস থাকলে সব খাবার খাওয়া যায় না, তবে বেশি করে সব্জি ও প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতেই হবে। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যেমন নানা রকম ডাল, বিন্স, সয়াবিন রাখতে হবে রোজের ডায়েটে। ফাইবার আছে এমন সব্জি খেতে হবে।
পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই জরুরি। হাঁচি বা কাশি হলে মুখে চাপা দিন। বাইরে বেরোলে মাস্ক পরা জরুরি। বদ্ধ জায়গায় থাকবেন না। খোলামেলা, আলো-হাওয়া চলাচল করে এমন জায়গায় থাকতে হবে। বাড়িতে কারও সর্দিকাশি হলে বা অ্যালার্জি থাকলে, তাঁর ব্যবহার করা জিনিসপত্র থেকে দূরে থাকুন। আক্রান্তের সঙ্গে খাবার ভাগ করেও খাবেন না। নিজের জলের বোতলও আলাদা রাখুন।