চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
কর্মস্থলে কাজের চাপ হোক বা ব্যক্তিগত জীবনে কোনও সমস্যা, বিভিন্ন কারণে মানসিক ভাবে আমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। এই রকম পরিস্থিতি আমাদের অস্থিরতাকে বাড়িয়ে তোলে। মানসিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়। এ ছাড়াও নানা ভাবে শরীর জানান দেয় যে, আমরা মানসিক চাপে আছি। অত্যধিক ক্লান্তি, মাথাব্যথা, হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গও হতে পারে মানসিক চাপের লক্ষণ। কেবল রোগা হতেই নয়, মনের অসুখ ঠেকিয়ে রাখতেও নিয়ম করে যোগাসন করা একান্ত প্রয়োজন। তবে সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই মিলবে ফল। শরীর ও মন চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজকের ব্যায়াম সুখাসন।
সংষ্কৃত শব্দ ‘সুখ’-এর অর্থ ‘সহজ’ বা ‘আরামদায়ক’। সহজ ও আরামদায়ক ভঙ্গিমায় করা হয় বলেই আসনটির এই নামকরণ। সুখাসন আসলে পা মুড়ে আরাম করে বসার এক চেনা ভঙ্গি। এটি অত্যন্ত প্রাচীন যোগাসন। মূলত ধ্যান করার সময় এই ভাবে বসা হয়।
কী ভাবে করবেন?
* প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে বসুন। দুই পা সোজা করে সামনে ছড়িয়ে দিন। যাঁদের হাঁটু আর কোমর স্টিফ হয়ে আছে, তাঁরা একটা ছোট কুশন নিতম্বের নীচে রাখুন। এর ফলে বসতে সুবিধে হবে।
* ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে বাঁ ঊরুর নীচে রাখুন। একই ভাবে বাঁ পা মুড়ে ডান ঊরুর নীচে রেখে মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন।
* দু’হাতের আঙুল জ্ঞানমুদ্রা ভঙ্গিতে এনে দুই হাঁটুর উপর রাখুন।
* হাত সোজা থাকবে, শরীরের উপরের অংশও টানটান রাখুন। মনে এই সময় কোনও ভাবনা না আনার চেষ্টা করুন, মন শান্ত রাখুন।
* হাঁটুর উপরে থাকা হাত আরামদায়ক ভাবে কনুই থেকে সামান্য ভাঁজ করে রাখতে পারেন।
* এই অবস্থানে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন ও চোখ বন্ধ করে দু’-তিন মিনিট বসে থাকুন। সময় পেলে আরও বেশি সময় সুখাসনে বসে থাকতে পারেন। তবে নাগাড়ে পা মুড়ে বসে থাকলে অসুবিধে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দুই পা ছড়িয়ে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে আবার সুখাসনে বসুন।
সতর্কতা
যাঁরা হাঁটুর ব্যথায় ভুগছেন, তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে সুখাসনে বসে থাকবেন না। যাঁদের হাঁটু স্টিফ হয়ে গিয়েছে, তাঁরা এই আসন করতে পারবেন না।
কেন করবেন?
সুখাসন একটি অত্যন্ত সহজ-সরল আসন। ধ্যানের এক অত্যন্ত সরল ও পরিচিত পদ্ধতি এই সুখাসন। কোনও চাপ বা কষ্টকর ভঙ্গি না করেই এই আসনটি অভ্যাস করলে শরীর, মনের ক্লান্তি ও চাপ দূর হয়। নিয়মিত সুখাসন অভ্যাস করলে মন শান্ত হয়। রাগ, ভয়, দুঃখ, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। শরীর ও মনের ভারসাম্য বজায় থাকে।