ছোট ছোট বদলই বদলে দিতে পারে জীবন। ছবি: সংগৃহীত।
সকালে ঘুম ভাঙা থেকে রাতে শুতে যাওয়া, দিনভরের ব্যস্ততা, ক্লান্তিতে একঘেয়ে হয়ে ওঠে জীবন। কোথাও যেন হারিয়ে যায় নিজের ভাল লাগা। কখনও পরিশ্রান্ত মন হারিয়ে ফেলে নিয়ন্ত্রণ। সামান্য কারণে হয়ে যায় রাগারাগি।
কিন্তু জানেন কি দিনে সারা দিনে ছোট্ট কয়েকটি বদল, নতুন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলেই, জীবন হয়ে উঠতে পারে অনেকটা সুন্দর। কী ভাবে আসতে পারে সেই বদল?
১. ঘুম ভাঙার পর দিনের শুরু করতে পারেন এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে। চাইলে কেউ বিভিন্ন ফলের টুকরো দিয়ে তৈরি ‘ডি-টক্স ওয়াটার’ খেতে পারেন। ‘ডি-টক্স ওয়াটার’ শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। হালকা গরম জল খাওয়ার অভ্যাস পেট পরিষ্কারে যেমন সাহায্য করে, তেমন শরীর ঝরঝরে রাখে। দিনে ২-৩ লিটার জল শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ ভাল ভাবে হওয়ার জন্য খুবই প্রয়োজন।
২. সকালের তাড়াহুড়োয় অগোছালো বিছানা রেখেই হয়তো বেরিয়ে যেতেন অফিসে বা স্কুলে। সেখানেই বদল আনুন। বিছানাটা গুছিয়ে ফেলুন। খুব সামান্য জিনিস হলেও, এটা কিন্তু মনে প্রভাব ফেলে। একটা দিন যেমন নতুন, সুন্দর তেমনই বিছানার চাদর টান টান করে দিয়ে বালিশটা পেতে দিলে ঘরটাও দেখতে ভাল লাগে। ঘর পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব সকালেই খানিকটা সামলে নিন এভাবে।
৩. অতিরিক্ত ব্যস্ততায়, ঘর-বার সামলাতে গিয়ে অনেক সময় আন্তরিক ভাবে যে মানুষটি পাশে রয়েছেন, তার কদর করা হয় না। সকালে সামান্য হলেও কিছুটা সময় নিজের মতো ভাবুন। যে মানুষগুলো পাশে রয়েছে, তাঁদের ধন্যবাদ জানান। সেই মানুষটিরও ভাল লাগবে। মনে মনে হলেও তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার শান্তি দেবে।
৪. ১০ মিনিট হলেও সকালে প্রাণায়ম করা খুব ভাল। এতে শুধু শরীর সুস্থই থাকবে না, দিনভর কাজকর্ম সামলানোর জন্য মনও তৈরি থাকবে। প্রাণায়ম মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
৫. কিছুটা সময় বই, সংবাদপত্র পড়ার জন্য বার করতে হবে। সংবাদপত্র প্রতি দিনের খবরটা জানতে সাহায্য করবে। বইও শিক্ষার অঙ্গ।জ্ঞান সঞ্চয় জীবনের একটা ইতিবাচক দিক।
৬. যত ব্যস্ততাই থাক, সন্ধ্যার দিকটা খোলা হাওয়ায় হাঁটাহাঁটি খুব জরুরি। ১০-১৫ মিনিট হলেও হাঁটাহাঁটি করুন বা শরীরচর্চা করে নিন।
৭. ঘর, নিজের কাজের জায়গা, টেবিল প্রতিদিন সামান্য একটু সময় বার করে হলেও পরিচ্ছন্ন রাখুন। অগোছালো ঘর, এলোমেলো কাজের জায়গা দেখলে কি নিজেরও ভাল লাগে?
৮. দিনে জরুরি কাজ কী আছে, তা সকালেই মনে মনে ঝালিয়ে নিন। কোন সময় কোনটা করবেন, ঠিক করে রাখলে চাপটা সামলানো তূলনামূলক সহজ হবে।
৯. মোবাইলের জগতে এক ক্লিকে সমস্ত মন চলে যায় সেদিকে। কখনও ওয়েব সিরিজ়, কখনও আবার রিল, কখনও সমাজমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে, কখন যে অনেকটা সময় হাতের বাইরে চলে যায়, খেয়াল থাকে না। তাই কত ক্ষণ মোবাইল নিয়ে খুটখাট করবেন তারও একটা সময়সীমা নির্দিষ্ট করে নিলে অন্য কাজ পণ্ড হয় না।
১০. রাতে ঘুমানোর আগে একবার ভেবে নিন সারা দিনে কোনও কাজ বাকি রয়ে গেল কি? কোন কাজে নিজেকে আরও উন্নত করতে পারতেন? পেশাগত জীবনের উন্নতি কিন্তু নিজের চেষ্টাতেই করতে হবে।