হাম, রুবেলা থেকে বাঁচতে কী ধরনের বুস্টার ডোজ় নিতে বলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা? ছবি: ফ্রিপিক।
হাম, রুবেলা, মাম্পসের মতো রোগের ফের বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছে। কোভিডের কারণে টিকাকরণ অনেক জায়গাতেই পিছিয়ে গিয়েছিল। ফলে ফের এই সব রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে বিশ্বের নানা দেশে। আক্রান্ত পাঁচ বছরের নীচে শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা। মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে। তাই হামের টিকার পাশাপাশি বুস্টার ডোজ় নিয়ে রাখার পরামর্শ দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঋতু পরিবর্তনের সময় হাম, রুবেলা ও মাম্পসের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। তবে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে এখন এই সব রোগ হওয়ারও কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। যখন-তখন হানা দিচ্ছে এই সব ভাইরাসঘটিত রোগ। একেই জলবায়ু বদলের কারণে আবহাওয়া খামখেয়ালি, তার উপরে বাতাসে ভাসমান দূষিত কণা, বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। ভাইরাসও তার বংশবৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ পেয়ে যাচ্ছে। ফলে রোগও ছড়িয়ে পড়ছে।
শিশু ও কিশোরদের হাম এবং রুবেলা খুবই কষ্টদায়ক অসুখ। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করাতে পারলে এই রোগে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। হামের প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর। সঙ্গে সর্দি, হাঁচি, চোখ লাল হওয়া, কিছু ক্ষেত্রে চোখের পাতা ফুলে যাওয়া, চোখ দিয়ে জল পড়া, কাশি, গলার স্বর বসে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দু’-তিন দিন থাকে। মুখের ভিতরে দানা দানা ভাব দেখা দেয় এবং আস্তে আস্তে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। রুবেলার ক্ষেত্রে প্রথমে শরীরে গোলাপি রঙের দাগ দেখা যায়। কানের পিছনের দিকে, বুকের সামনে ও পিছনে এবং পরে হাতে-পায়েও সেই দাগ দেখা দিতে পারে। মাম্পসও ভাইরাসঘটিত রোগ। প্রাথমিক ভাবে এই ভাইরাস প্যারোটিড গ্রন্থি-সহ বিভিন্ন লালাগ্রন্থিগুলিকে আক্রমণ করে। সেখান থেকেই হয় সংক্রমণ। কারও হাঁচি, কাশির ড্রপলেট থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস।
হু-র গবেষকেরা জানাচ্ছেন, হাম, রুবেলা বা মাম্পসের টিকাকরণ সঠিক সময়ে না হলে এর থেকে অ্যাসেপ্টিক মেনিনজাইটিস, এনসেফ্যালাইটিস, প্যানক্রিয়াটাইটিসের মতো জটিল রোগও দেখা দিতে পারে। তাই শিশুদের ৯ মাস ও ১৫ মাসে হামের টিকা দেওয়া জরুরি। তবে টিকা দিলেও তা পুরোপুরি সফল না-ও হতে পারে। সে কারণেই দু’ডোজ় টিকা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তা ছাড়াও বুস্টার ডোজ় নিয়ে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা। সাধারণত হাম, রুবেলা বা মাম্পসের জন্য ‘এমএমআর’ টিকাই দেওয়া হয়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, শিশুর যখন ৪ থেকে ৬ বছর বয়স হবে, তখন এমএমআর টিকার আরও একটি বুস্টার ডোজ় দিয়ে রাখা জরুরি। এই টিকা নিরাপদ। কাজেই এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা নেই। বুস্টার নেওয়া থাকলে যে কোনও সংক্রামক ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকবে শিশু।