নাভিতে ক্যাস্টর অয়েল মাখলে একাধিক উপকারিতা পেতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
শরীরের সবচেয়ে উপেক্ষিত অংশগুলির মধ্যে অন্যতম। অথচ নাভিতেই রয়েছে রোগ নিরাময়ের উপায়। ন্যূনতম যত্নেই ব্যথা, প্রদাহ ইত্যাদির মতো সমস্যার সমাধান। তবে যে কোনও তেলের বদলে ক্যাস্টর অয়েল বেছে নিলে তুলনায় বেশি উপকার পাওয়া যেতে পারে।
পুরনো দিনে নাভিতে তেল মালিশ করার প্রচলন ছিল। তখন শিশুদের গায়ে তেল মাখানোর সময়ে নাভি মালিশ করা হত। সেই সেকেলে প্রথাটি মেনে দেখতে পারেন। একাধিক উপকারিতা পেতে পারেন আপনিও।
ক্যাস্টর অয়েল কেন?
২০২২ সালে চণ্ডীগড়ের চিতকারা কলেজ অফ ফার্মেসির এক দল গবেষক তাঁদের গবেষণাপত্রে ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা নিয়ে লেখালেখি করেছিলেন। লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এ। তাঁদের মতে, ক্যাস্টর অয়েল অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল এবং প্রদাহবিরোধী। এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে বলে ময়েশ্চারাইজ় করার ক্ষমতাও বেশি। ত্বক, চুলের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখার পাশাপাশি শরীরের ব্যথা দূর করে।
নাভিতে ক্যাস্টর অয়েল মাখলে যে সব উপকারিতা পেতে পারেন:
ব্যথা উপশমে সাহায্য করে: আর্থ্রাইটিসের যন্ত্রণা হোক অথবা ঋতুচক্র চলাকালীন পেটে ব্যথা, রাতের বেলা ঘুমনোর আগে নাভিতে ক্যাস্টর অয়েল মালিশ করলে উপকার পেতে পারেন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং ব্যথা কিছুটা উপশম হতে পারে। তা ছাড়া ক্যাস্টর অয়েলে রিসিনোলেইক অ্যাসিড রয়েছে, যা প্রদাহনাশক হিসেবে পরিচিত। নাভিতে মাসাজ করার পর তেল শরীরে শোষিত হয়, তার পরে নাভি এবং নাভির চারপাশের যে কোনও ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
নাভিতে ক্যাস্টর অয়েল মালিশ করলে জননাঙ্গগুলিতে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। ছবি: সংগৃহীত।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে পারে: ক্যাস্টর অয়েল এক প্রকার প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ। তাই নাভিতে এই তেল মাখলে অনেক সময় হজমপ্রক্রিয়া উন্নত হয়। পাচনতন্ত্র স্বাভাবিক হলে মলত্যাগ নিয়মিত হতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কিছুটা কমে।
ত্বকে আনে ঔজ্জ্বল্য: ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে রিসিনোলেইক অ্যাসিড, যা প্রদাহবিরোধী ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল। তাই নাভিতে এই তেল মালিশ করলে পেট-সমেত গোটা শরীরের ত্বক মসৃণ হয়। সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না। শুষ্ক ত্বককে ময়েশ্চারাইজ় করতে পারে।
চুলের স্বাস্থ্য উন্নতি: মজবুত চুলের চাবিকাঠি নাভিতে! শুনে অবাক লাগলেও, অনেকেই উপকার পেয়েছেন এতে। নাভিতে নিয়মিত ক্যাস্টর অয়েল মাখলে চুলের গোড়া মজবুত হয়, হেয়ার ফলিকলগুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পায়। পাশাপাশি ভুরুও ঘন হয়।
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে: হরমোনের ভারসাম্য বজায় না থাকলে মহিলাদের শরীরে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। ক্যাস্টর অয়েল হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নাভিতে এই তেল মালিশ করলে তেল শোষণের কাজটি আরও ভাল হয়। রক্ত সঞ্চালন উন্নত হওয়া, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যাওয়া ইত্যাদি হরমোনের ভারসাম্যকে বজায় রাখে। পুরুষদের ক্ষেত্রেও টেস্টোস্টেরনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ফার্টিলিটি বাড়ায়: নাভিতে ক্যাস্টর অয়েল মালিশ করলে জননাঙ্গগুলিতে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। রক্তপ্রবাহের গতি বৃদ্ধি হলে মহিলাদের ডিম্বাশয়ের স্বাস্থ্য বজায় থাকে এবং পুরুষদের শুক্রাণু উৎপাদন ভাল হয়। নিয়মিত হালকা ম্যাসাজ গর্ভধারণের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখে: উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার মতো মানসিক রোগ দূর করে মন প্রশান্ত রাখার ক্ষমতা রাখে এই পদ্ধতিটি। নাভিতে ক্যাস্টর অয়েল মালিশ করলে স্নায়বিক রোগের ঝুঁকি কমে।