দাড়ি কামালেই 'রেজ়ার বাম্পস' হয়? ছবি: সংগৃহীত।
ইচ্ছে থাকলেও রোজ দাড়ি কামাতে পারেন না। কারণ, রেজ়ার বাম্পস! দাড়ি কামানোর পরে একবার যদি গোটা মুখে ছোট ছোট র্যাশের মতো এই জিনিসটির আবির্ভাব ঘটে, তা হলে সহজে যেতেও চায় না। শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে রোম তোলার পরেও এমনটা হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যা ‘সিউডোফলিকিউলাইটিস বার্বি’ নামেও পরিচিত।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ওয়াক্স বা শেভ করার পর কিছু দিনের মধ্যেই আবার ওই জায়গায় নতুন রোম গজায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বেশ কিছু রোম ত্বকের উপরের স্তর ভেদ করে বাইরে বেরোতে পারে না। উল্টে তা পাকিয়ে কুণ্ডলী হয়ে ত্বকের ভিতরেই থেকে যায়। কিন্তু ত্বকের উপরে স্বাভাবিক নিয়মে নতুন কোষ জন্মাতে থাকে। ফলে রোম ওই স্তরেই আটকা পড়ে। এই কারণে ‘বাম্পস’ হওয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
রেজ়ার বাম্পস ত্বকের যে কোনও অংশেই হতে পারে। তবে যে সমস্ত জায়গায় রোমের পরিমাণ বেশি কিংবা যেখানে রেজ়ার চালানো হয়, ওয়্যাক্স করা হয়— সেখানে এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়। সমস্যা সমাধানে গ্লাইকোলিক বা স্যালিসিলিক অ্যাসিড-যুক্ত ময়েশ্চারাইজ়ার, লোশন মাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে দাড়ি কামানো, ওয়্যাক্স করার আগে এবং পরে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেও এই ধরনের সমস্যা সহজেই এড়ানো যায়।
১) দাড়ি কামানোর আগে প্রস্তুতি:
মুখের সঙ্গে যুদ্ধ নয়, ত্বকের যত্ন নিতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে। রেজ়ার দিয়ে দাড়ি কামানোর আগে হালকা গরম জলে মুখ ধুয়ে নেন অনেকে। তাতে দাড়ি নরম হয়। রেজ়ার ব্যবহার করতেও সুবিধা হয়। রূপচর্চা শিল্পীরা বলছেন, তার বদলে স্টিম নিতে পারেন। তাতে ব্ল্যাকহেড্স বা হোয়াইটহেড্সের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২) রেজ়ার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি:
মুখে র্যাশ, ব্রণ থাকলে তা চট করে সারে না। আবার দিনের পর দিন দাড়ি না কামানোও কোনও কাজের কথা নয়। সে ক্ষেত্রে চর্মরোগ চিকিৎসকের মত হল ধৈর্য ধরে দাড়ির অভিমুখ বুঝে রেজ়ার চালানো। তাতে সমস্যা একেবারে মিটে না গেলেও বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছয় না।
৩) দাড়ি কামানোর আগে এক্সফোলিয়েশন জরুরি:
ত্বকের রন্ধ্রে বা দাড়ির গোড়ায় মৃত কোষ জমতে পারে। তা সঠিক ভাবে পরিষ্কার না করলে সেখান থেকেও ‘রেজ়ার বাম্পস’ হতে পারে। সপ্তাহে অন্তত দু’বার এক্সফোলিয়েট করলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
৪) অ্যালো ভেরার প্রলেপ দেওয়া:
হাতের কাছে অ্যালো ভেরা থাকলে অনেক সমস্যাই সহজে সারিয়ে তোলা যায়। রোদে পোড়া দাগ, কাটাছেঁড়ায় যেমন অ্যালো ভেরা গাছের শাঁস বা জেল লাগালে উপকার মেলে, তেমনই দাড়ি কামানোর পর এই উপাদানটি ব্যবহার করলে সহজে র্যাশ বেরোতে পারে না।
৫) টি ট্রি অয়েল:
দাড়ি কামানোর পর জল দিয়ে ভাল করে মুখ ধুতেই হয়। সেই জলে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদানে সমৃদ্ধ টি ট্রি অয়েল ত্বকের সংক্রমণজনিত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখে।