Holi 2024

দোলের রং যেন চোখ আর ত্বকের ক্ষতি না করে! সুরক্ষিত থাকার উপায় বলে দিলেন চিকিৎসকেরা

দোল খেলার সঙ্গী হোক কিছু সচেতনতাও। এতে সুরক্ষিত থাকা সহজ হবে। সবচেয়ে বেশি সাবধানে থাকতে হবে চোখ এবং ত্বকের ব্যাপারে। কী করবেন? জানাচ্ছেন দুই চিকিৎসক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৪ ০৯:২৩
রং মনে লাগুক, চোখে নয়।

রং মনে লাগুক, চোখে নয়। ছবি: সংগৃহীত।

ফাগুনে রঙের উৎসবে মেতে উঠতে তৈরি সকলেই। বাড়ির বড়দের পায়ে আবির ছুঁইয়ে শুরু হয় বসন্তের উদ্‌যাপন। প্রিয়জনের গালে আবির ছোঁয়ানো থেকে রং গোলা জলে বন্ধুবান্ধবদের স্নান করানো— বাদ যায় না কিছুই। মন জুড়ে শুধু রঙের ফোয়ারা। কচিকাঁচা থেকে বড়রা সকলেই নিজেদের রাঙিয়ে নিতে ব্যস্ত। এমন রঙিন উৎসবের আতিশায্যে শুধু ভেসে গেলেই চলবে না, কিছু সতর্কতাও মনে রাখা জরুরি। দোল খেলার সঙ্গী হোক কিছু সচেতনতাও। এতে সুরক্ষিত থাকা সহজ হবে। সবচেয়ে বেশি সাবধানে থাকতে হবে চোখের ব্যাপারে। রং মাখব না বলে ঘরে খিল দিয়ে থাকা এমন দিনে কঠিন। তার চেয়ে সতর্ক থেকে রং খেলা জরুরি।

Advertisement

দোল খেলতে গিয়ে চোখে রং ঢুকে যাওয়ার ঝুঁকি থাকেই। আলতো করে আবির ছোঁয়াবো বলেও বন্ধুরা রং মাখিয়ে ভূত করে দেন। সেই সময় অসতর্কতাবশত চোখে রং ঢুকে গেলে কিন্তু বিপদ। বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা আরও বড় সমস্যা। রং এক বার চোখে ঢুকলে সকলের জন্যেই তা ক্ষতিকারক। রঙের উদ্‌যাপনের দিনে চোখের খেয়াল রাখবেন কী ভাবে? চোখে রং ঢুকলেই বা দ্রুত কী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি? উত্তর দিলেন চক্ষু চিকিৎসক সুমিত চৌধুরি।

চিকিৎসকের কথায়, ‘‘রং খেলার দিন চোখ নিয়ে বাড়তি সাবধানতা মেনে চলা জরুরি। এখন সব রঙেই রাসায়নিক দেওয়া থাকে। তা এক বার চোখে ঢুকে গেলে ‘কেমিক্যাল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস’ হয়। চোখ চুলকায়, জ্বালা করে, চোখ থেকে অনবরত জলও পড়ে। এমন হলে একেবারেই চোখ রগড়ানো যাবে না। তাতে সমস্যা আরও বাড়বে। তার চেয়ে ঠান্ডা জল দিয়ে চোখ ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। জল দিয়ে চোখ ধুলে রং বেরিয়ে আসবে। গরম জল কিংবা ফ্রিজের ঠান্ডা জল দিলে কিন্তু হবে না। অনেকেই আছেন জোরে জোরে ঝাপ্টা দিতে থাকেন। তাতে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে। ধীরে ধীরে জল দিয়ে চোখ ধুয়ে নিন। আর খুব ভাল হয় যদি পরের দিন এক বার কোনও চোখের চিকিৎসককে দেখিয়ে নিতে পারেন। চোখে কোনও অস্বস্তি না থাকলেও তা করা উচিত। চোখ অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ফলে কোনও সমস্যা হলে তা বাইরে থেকে বোঝা যায় না। তাই চিকিৎসককে দেখানোই একমাত্র উপায়।’’

ত্বকের রং যেন ক্ষতি না করে।

ত্বকের রং যেন ক্ষতি না করে। ছবি: সংগৃহীত।

চোখের পাশাপাশি ত্বকের উপরও কম অত্যাচার চলে না দোলে। আবির হোক কিংবা বাঁদুরে রং— সবেতেই তো রাসায়নিক মেশানো আছে। সে সব রং ত্বকের সংস্পর্শে আসার ফলে নানা ধরনের চর্মরোগ হওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়। তাই ত্বকের সুরক্ষা নিয়েও ভাবা জরুরি। ত্বকের ক্ষেত্রে দোল উদ্‌যাপনের প্রাক্‌-পরিচর্যা খুবই জরুরি। তেমনটাই জানাচ্ছেন চর্মরোগ চিকিৎসক বিক্রম রাঠৌর। তিনি কিছু টোটকা দিয়েছেন ত্বকের জন্য। চিকিৎসকের টোটকাগুলি হল—

১) রং খেলার আগে ভাল করে ত্বকে নারকেল তেল মেখে নিতে পারলে ভাল। তা হলে ত্বক রং শোষণ করে নিতে পারবে না। পরে ত্বক থেকে রং তোলাও সহজ হবে।

২) নারকেল তেল মাখতে না চাইলে ব্যবহার করতে পারেন ময়েশ্চারাইজ়ার। বেশি করে ময়েশ্চারাইজ়ার মেখে নিতে পারলে ভাল। তা হলে রং আর ত্বকের রন্ধ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।

৩) ময়েশ্চারাইজ়ার মেখেই রং খেলতে বেরিয়ে পড়া বোকামির কাজ হবে। তাই ময়েশ্চারাইজ়ারের পরে মেখে নিতে হবে সানস্ক্রিনও। তাহলে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে ত্বক।

৪) ভিতর থেকেও যত্ন নিতে হবে ত্বকের। শুধু বাহ্যিক পরিচর্যা করলে চলবে না। তার জন্য বেশি করে জল খেতে হবে। ত্বক আর্দ্র থাকলে রং কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।

৫) বাজার থেকে কেনা রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত রং নিয়ে দোল না পালন করে বরং ভেষজ আবির নিয়ে খেলুন। তাতে ত্বকের সমস্যার ঝুঁকি কমবে।

আরও পড়ুন
Advertisement