Night Shift

রাত জেগে অফিসের কাজে ক্লান্তি বাড়ছে? সকালে ঘুমোলেও ঝিমুনি যাচ্ছে না, শরীর-মনের খেয়াল রাখবেন কী ভাবে?

রাত জাগলে শরীরের বারোটা বাজবেই। মানসিক চাপ, উদ্বেগও বাড়বে। কিন্তু পেশাগত ক্ষেত্রে রাত জেগে কাজ এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। তা হলে শরীর সুস্থ ও তরতাজা রাখতে কী কী করবেন?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪ ১৬:৪৫
How to manage Night Shift duty and still stay healthy physically and mentally

রাত জাগলেও শরীর তরতাজা থাকবে, জানুন উপায়। ছবি: ফ্রিপিক।

রাত জেগে অফিসের কাজ করেন যাঁরা, তাঁরা বিলক্ষণ জানেন কতটা ক্লান্তি আর ঝিমুনি বাসা বাঁধে শরীরে। সকালে ঘুমোলেও সেই ক্লান্তি যায় না। তার উপর যদি রাতের খিদে মেটাতে ঝালমশলা দেওয়া খাবার, মুখরোচক স্ন্যাকসে ডুবে থাকেন, তা হলে তো কথাই নেই। অফিসে থেকে রাতের শিফ্‌ট করা এক রকম, আর বাড়ি থেকে কাজ করা অন্য রকম। অফিসে থাকলে কিছু ক্ষণের জন্যও গা এলিয়ে দেওয়ার উপায় নেই। ঠায় বসে থাকতেই হবে। তা ছাড়া দ্রুত কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার তাড়াও থাকে। সেখানেও উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা কাজ করে। অনেকেই রাত জেগে কাজের ক্লান্তি কাটাতে কাপের পর কাপ চা বা কফি খেয়ে যান। আর বাড়িতে রাত জাগলে দেখবেন, ঘণ্টায়-ঘণ্টায় খিদে পাচ্ছে। মাঝরাতে যখন চোখ আরও ভারী হয়ে আসে, তখন ঘুম কাটিয়ে উঠতে নরম পানীয় বা আইসক্রিমের দিকে হাত চলেই যায়।

Advertisement

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, একটানা রাত জেগে কাজ করতে হলে তা শরীরের উপর বড় প্রভাব ফেলে। ঘুমোনোর রুটিন তো ঘেঁটে যায়ই, খিদে নষ্ট হওয়া, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো নানা উপসর্গও দেখা দেয়। পেশাগত কারণে রাত জেগে কাজ করতে হলে, তা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। তাই সে ক্ষেত্রে কী ভাবে শরীর ও মনের যত্ন নেবেন, তা জেনে রাখাই ভাল।

১) কাজের রুটিন বানিয়ে নিন

পরিকল্পনা সবচেয়ে আগে দরকার। আজকের দিনে আপনার হাতে কী কী কাজ আছে, আর কোন কাজগুলো আজই সেরে ফেলতে হবে, তার একটা তালিকা বানিয়ে নিন আগে। তার পর সেই ভাবে কাজ শুরু করুন। রাত জেগে কাজ করলে শরীরের পাশাপাশি মনের পরিশ্রমও হয়। তাই কাজ করতে হবে গুছিয়ে, নিয়মমাফিক। সমস্ত কাজ একবারে নিয়ে বসলে, কোনওটাই সময়ে শেষ হবে না। তাতে উদ্বেগ আরও বাড়বে।

২) কাজ নিয়ে বসে থাকবেন না

কাজ গুছিয়ে নিয়ে দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করুন। সারা রাত বাকি আছে ভেবে অনেকেই একটু গেম খেলে নেন বা মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে কাজের উৎসাহ হারিয়ে যায়। প্রথমত, সময় নষ্ট হয়, দ্বিতীয়ত, শেষে গিয়ে সব তালগোল পাকিয়ে যায়।

৩) রাত জাগলে ভাজাভুজি একদম নয়

রাত জাগলেই টুকটাক কিছু খেতে মন চায়। দেখবেন, বেশি রাতে খিদে পেলে হয় ভাজাভুজি কিছু খেতে সাধ জাগে, নয়তো আইসক্রিম, চকোলেটের দিকে হাত চলে যায়। খিদে পেলে তা চেপে রাখার মানে হয় না। বরং চেষ্টা করতে হবে এমন কিছু খাওয়ার, যা রাতে খেলেও গ্যাস বা অম্বল হবে না। রাতের বেলায় বাদাম জাতীয় খাবার খেতে পারেন। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, আমন্ড, আখরোট হাতের কাছে রাখুন। পপকর্ন খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ নয়। কর্ন সেদ্ধ খুবই উপকারী। অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি রাখে। ফলে চট করে খিদে পায় না। কিশমিশ, বেরি, শুকনো খেজুর, পেস্তা ইত্যাদি ড্রাই ফ্রুটসও রাখতে পারেন হাতের কাছে।

৪) বিরতি নিন

টানা কাজ করে যাবেন না। মাঝেমধ্যে বিরতিও নিতে হবে। অফিসে থাকলে উঠে একটু হেঁটে আসুন। বাড়িতে থাকলে কিছুক্ষণ মাথা নামিয়ে বিশ্রাম নিতে পারেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট যদি একটু বিরতি নেন, তা হলে অনেকটা ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। বাকি কাজও ঝটপট হয়ে যাবে।

৫) পর্যাপ্ত জল খান

রাত জাগলে জল খেতেই হবে। অনেকেই কাজ শেষ করার তাড়ায় জল কম খান। বদলে নরম পানীয়ে চুমুক দেন। এই অভ্যাস খুবই খারাপ। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, রাতে বেশি মিষ্টি দেওয়া পানীয় খেলে তা ক্লান্তি, মানসিক চাপ আরও বাড়াবে। ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ক্ষরণ বাড়িয়ে দেবে।

৬) শরীরচর্চা জরুরি

রাত জেগে সকালে ঘুমোলেও ক্লান্তি যায় না। তাই রাত জাগতে হলে, নিয়ম করে শরীরচর্চা করা জরুরি। হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো, স্পট জগিং করতে পারেন। প্রাণায়ামও খুব ভাল। তবে যোগাসন করতে হলে, যোগাসন প্রশিক্ষকের সাহায্য নেওয়াই ভাল। আর দিনে অন্তত ১৫ মিনিট সময় রাখতে হবে ধ্যান বা মেডিটেশনের জন্য। নিয়মিত ধ্যান করতে পারলে মন ও মাথা ঠান্ডা হয়। চিন্তাভাবনায় নিয়ন্ত্রণ আসে। প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতেও সুবিধা হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement