গরমে চুমুক দিন ফলের খোসার চায়ে। ছবি: ফ্রিপিক।
আদা চা, লবঙ্গ চা, অপরাজিতা ফুলের চা, ক্যামোমাইল টি— এমন অনেক নাম শুনেছেন। কিন্তু কখনও আনারসের চায়ের কথা শুনেছেন কি?
গরমের রসালো ফল আনারস। শুধু ফল হিসাবে তা যেমন কেটে খাওয়া হয়, তেমনই আনারসের রস দিয়ে তৈরি করা যায় রকমারি ঠান্ডা পানীয়। কিন্তু তা বলে চা? পুষ্টিবিদ ফিয়োনা সম্পতের কথায়, আনারসের চা না বলে এই পানীয়কে আনারসের খোসার চা বলাই ভাল। নামে চা হলেও এতে চা-পাতার ব্যবহার নেই। বরং আনারসের খোসায় থাকা পুষ্টিগুণেই এই পানীয় হয়ে ওঠে ভিটামিন, খনিজে সমৃদ্ধ।
আনারস খেলেই তো হয়, তবে খোসা দিয়ে চা কেন? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ফল থেকে খোসা বাদ দিলে কিছুটা হলেও পুষ্টিগুণ বেরিয়ে যায়। আনারসের চোখ কায়দা করে বার করে ফল খাওয়ারই চল। তবে এ ভাবে খোসাটাও কাজে লাগানো যায়। যদিও তা ব্যবহারের আগে সেটি খুব ভাল করে ধোয়া জরুরি।
কেন খাবেন আনারসের খোসার চা?
১। আনারসে মেলে ব্রোমেলিন নামক উৎসেচক। ‘কেমিস্ট্রি অ্যান্ড বায়োডাইভার্সিটি’ জার্নালে ২০০৪ সালে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, আনারসের খোসায় ০.২৩ শতাংশ ব্রোমেলিন মেলে। এই উৎসেচক প্রদাহ এবং ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। অস্টেিয়োআর্থ্রাইটিসের কষ্ট কমাতে কিছুটা হলেও এই উপাদান কার্যকর।
২। ব্রোমেলিন হজমে সাহায্য করে। এটি হল প্রোটিওলাইটিক উৎসেচক। পেটফাঁপা, বদহজম দূর করতে সাহায্য করে এই উপাদান। পুষ্টিবিদ ফিয়োনা বলছেন, ‘‘আনারসের খোসার চায়ে চুমুক দিলে হজমের সমস্যা কমবে।’’
আনারসের খোসা দিয়ে কী ভাবে চা বানাবেন?
৩। আনারসে রয়েছে ভিটামিন সি। আনারসের খোসাতে কিছুটা হলেও সেই ভিটামিন পাওয়া যায়। রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এই ভিটামিন। ফলে এই চায়ের গুণে শরীর সুস্থ থাকবে।
৪। আনারসের খোসায় থাকা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড কোলাজেন সংশ্লেষে সহায়তা করে। কোলাজেন ত্বক টানটান এবং মসৃণ রাখতে সহায়ক।
৫। কম ক্যালোরি অথচ উৎসেচক যুক্ত পানীয়টি হজমে সহায়তা করার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়ক।
কী ভাবে বানাবেন পানীয়?
আনারসের খোসা ছাড়িয়ে জলে ধুয়ে নিতে হবে। বেশ কিছু ক্ষণ জলে ভিজিয়ে রাখলেও ময়লা, নোংরা চলে যাবে। চার কাপ জলে একটি আনারসের খোসা ভাল করে ফুটিয়ে নিন। যোগ করুন এক ইঞ্চি গ্রেট করা আদা। মিশ্রণটি আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ফুটতে দিন। তার পর ছেঁকে নিন। ফ্রিজে ভরে রাখুন কিংবা ঘরের তাপমাত্রায় এলে এতে পাতিলেবুর রস এবং বরফকুচি যোগ করে খেতে পারেন। তবে দিনে এক বারই যথেষ্ট।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। সব ফল বা ভেষজ চা সকলের শরীরের জন্য উপযুক্ত হবে, এমন নয়। নিয়মিত খেতে হলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভাল।