ভারতীয়রা খাবার বিষয়ে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য দুই ধারাই পছন্দ করেন। ছবি- সংগৃহীত
দেশে হোক বা বিদেশে, ঘুম থেকে উঠে মুখ ধোওয়ার পর সকলেরই প্রথম মাথায় আসে জলখাবারের কথা। চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ— সকলেই সকালের জলখাবারের উপর জোর দেন। কিন্তু ইতিহাস বলছে, আমাদের দেশে জলখাবার কোনওদিনই এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।
১৪ শতক পর্যন্ত সকালের জলখাবার সম্পর্কিত ধারণাই ছিল না মানুষের। খাওয়াদাওয়া মানে আমাদের দেশে ‘মধ্যাহ্নভোজ’-এর আসন চিরকালই পাকা। দুপুরের খাবারই গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলে বিবেচিত হত। দুপুরের খাবার ছাড়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল রাতের খাবার। কিন্তু তা তুলনায় দুপুরের চেয়ে হালকা।
প্রাতরাশের সূত্রপাত
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাজের ধরন অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ বা পদেরও পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বাড়ির রোজগেরে সদস্যরা সকালে খেয়ে কাজে বেরোলে সেই সময় ভারী কিছু খাওয়ার চল শুরু হয়। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে এসে রাজত্ব শুরু করলে সেই সময়ই প্রাতরাশের প্রচলন শুরু হয়। তৎকালীন সময়ে তথাকথিত উচ্চবিত্তদের দিন শুরু হত প্রাতরাশের টেবিলে। প্রাতরাশের ধারণার সঙ্গে সঙ্গেই তার জন্য আলাদা পদের প্রচলন শুরু হয়। সাধারণ খাবারের পরিবর্তে প্রাতরাশের জন্য আলাদা ‘সিরিয়াল’ও চালু হয় এই সময় থেকেই।
দেশি খাবার
বিদেশি খাবারের পাশাপাশি আমাদের দেশে চিঁড়ে, মুড়ি, রুটি, পরোটা, সুজি, লুচি, তরকারি খাওয়ারও প্রচলন শুরু হয়। দেশের অন্য প্রান্তে আবার ইডলি, ধোসা, উপমা, ধোকলা খাওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়।
কর্নফ্লেক্স, ওটস, মুসলি
এই সমস্ত দেশি খাবারের পাশাপাশি ইদানীং বাঙালির হেঁশেলের দখল নিতে শুরু করেছে ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’। পেটরোগা বাঙালি এখন লুচি-তরকারির পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর দুধ কর্নফ্লেক্স, দুধ-ওট্স খেতেই পছন্দ করছেন।
স্থানীয় খাবারের প্রচলন
‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’-এর পাশাপাশি দেশি জোয়ার, বাজরা, মিলেটের মতো খাবার আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভারতীয়রা খাবার বিষয়ে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য দুটি ধারাই পছন্দ করেন। বিশেষ করে যখন খাবারে এই দুই ঘরানার মেলবন্ধন ঘটে।