Heart Arrhythmia Symptoms

সব সময়ে বুক ধড়ফড়, চিনচিনে ব্যথা, হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত নয় তো? কখন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হবেন?

হার্টের সঙ্কোচন-প্রসারণের সময় ও ছন্দের হেরফের স্বাভাবিক ঘটনা। তবে তার একটা মাত্রা আছে, সেটা কম-বেশি হলে চিকিৎসার প্রয়োজন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:১৬
Home remedies and tips to stop Heart Palpitations

আচমকা বুক ধড়ফড় করা শুরু হলে কী করবেন? ফাইল চিত্র।

একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার। তবে ব্যক্তিভেদে সামান্য কমবেশি হতে পারে। হার্টের সঙ্কোচন-প্রসারণের সময় ও ছন্দের হেরফের স্বাভাবিক ঘটনা। তবে তার একটা মাত্রা আছে, সেটা কম-বেশি হলে চিকিৎসার প্রয়োজন।

Advertisement

সুস্থ শরীরে কাজ করছেন, আচমকাই বুকের বাঁ দিকে চিনচিনে ব্যথা শুরু হল। তার পরে সারা ক্ষণ মনে হচ্ছে, বুক ধড়ফড় করছে। সেই সঙ্গে সারা শরীরে অস্বস্তি। বিন্দু বিন্দু ঘাম। বুক ধড়ফড় করা মানেই যে হার্ট অ্যাটাক হবে, তা নয়। তবে এই সব লক্ষণ যদি লাগাতার দেখা দিতে থাকে, তা হলে চিন্তার কারণ আছে। এই বিষয়ে হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমারের বক্তব্য, “হৃৎস্পন্দনের গোলমাল হলে এমন বুক ধড়ফড় করে অনেক সময়েই। হৃদ্‌যন্ত্রের সঙ্কোচন-প্রসারণ যদি ঠিক মতো না হয়, তা হলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছতে পারে না। তখনই সমস্যা দেখা দেয়।” হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গেলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া’।

অ্যারিদমিয়া হার্টের উপরের প্রকোষ্ঠ অ্যাট্রিয়া বা নীচের প্রকোষ্ঠ ভেনট্রিকলসে দেখা দিতে পারে। অনেক সময়েই এই রোগের কোনও উপসর্গ দেখা যায় না।আবার কারও ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা বা রাতে শুয়ে ঘাম হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। অ্যারিদমিয়া সাধারণত দু’রকম হয়— ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া এবং ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া। হার্টরেট কমে যাওয়ার ফলে যে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হয়, তা থেকে হার্টে ব্লক হতে পারে, একে বলে ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া। এ ক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দন ৬০-এর নীচে চলে যায়। প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে প্রায় ৫ জনের হৃদ্‌যন্ত্রে স্পন্দনের এমন গোলমাল দেখা যায়। বয়স ৬০ বছর পেরোলেই এই সমস্যা বেড়ে যায়। এই ধরনের অ্যারিদমিয়া থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া হল, যেখানে হার্টরেট ১০০র উপরে চলে যায়। সে ক্ষেত্রেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যায়।

কখন সতর্ক হবেন?

সামান্য পরিশ্রমেই অত্যধিক ক্লান্তি, শ্বাস নিতে সমস্যা, শরীর কাঁপা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, দুর্বলতার মতো সমস্যাকে এড়িয়ে গেলে চলবে না। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে বিপদের ঝুঁকি থাকবে না। ইসিজি, হল্টার মনিটরিং, লুপ রেকর্ডার, ইকোকার্ডিয়োগ্রাফ এবং কিছু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যাবে, ঠিক কী সমস্যা হয়েছে।

প্রতিকারের উপায় কী?

মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, এমন সমস্যা নিয়ে অনেক রোগীই আসেন। তাঁদের দ্রুত ইসিজি করতে বলা হয়। যদি আচমকা বুক ধড়ফড় করা শুরু হয়, তা হলে উদ্বেগে না ভুগে বরং শান্ত হয়ে বসে ‘ডিপ ব্রিদিং’ করুন। ধীরে ধীরে শ্বাস টেনে আবার ছাড়বেন। এমন করতে থাকলে অনেক আরাম হবে।

বদ্ধ জায়গায় থাকবেন না, চেষ্টা করুন খোলা জায়গায় হেঁটে আসতে।

এই সময় ভুলেও সিগারেটে টান দেবেন না। মদ্যপান তো নয়ই।

সুবিধা থাকলে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করুন। প্রথমেই জল মাথায় ঢালবেন না। আগে পা ভেজান, তার পর হাত, গায়ে জল দিয়ে শেষে মাথা ভেজান।

শরীরে অস্বস্তি শুরু হলে ভারী কাজ করবেন না, সিঁড়ি ভাঙা একদমই নয়। চুপ করে কিছু ক্ষণ শবাসনে শুয়ে থাকুন। অথবা এক জায়গায় বসে থাকুন।

পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যেতে শুরু করলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন