জিঙ্ক কেন জরুরি ছবি: সংগৃহীত
খেলার মাঠে সচিন-সৌরভকে সাদাটে এক ধরনের পদার্থ মুখে মাখতে দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু তাঁরা কী মাখেন জানেন কি? খেলার মাঠে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচতে বহু খেলোয়াড়ই মুখে মাখেন সাদা জিঙ্ক অক্সাইডের আস্তরণ। এটি অত্যন্ত কার্যকর একটি ‘সান স্ক্রিন লোশন’। তবে শুধু ত্বকের যত্ন নয়, জিঙ্ক বা দস্তা মানবদেহের জন্য অবশ্য-প্রয়োজনীয় একটি খনিজ উপাদান। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন নারীদের আট মিলিগ্রাম ও পুরুষদের ১১ মিলিগ্রাম জিঙ্ক খাওয়া প্রয়োজন। জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রোটিন উৎপাদন ও দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সাহায্য করে ডিএনএ তৈরিতেও। পর্যাপ্ত জিঙ্কের অভাবে দেহে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে: জিঙ্কের অভাবে কোষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। জিঙ্ক কোষের কার্যক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গবেষণা বলছে, পর্যাপ্ত জিঙ্ক সাধারণ সর্দি-কাশির সময়সীমা এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনতে পারে।
২। ক্ষতস্থান নিরাময়ে: সচরাচর চিকিৎসা কেন্দ্র ও হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের পোড়া জায়গা, আলসার ও অন্যান্য ত্বকের ক্ষত নিরাময়ে জিঙ্ক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জিংক কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে এবং প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে। ফলে ক্ষতস্থান নিরাময়ে জিঙ্ক অত্যন্ত কার্যকর।
৩। বার্ধক্য জনিত সমস্যা কমাতে: জারণের ফলে কোষে যে চাপ তৈরি হয় তা কমাতে জিঙ্ক অত্যন্ত কার্যকর। পাশাপাশি জিঙ্ক টি সেলের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে ফলে দেহে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে। বিশেষত, বার্ধক্যজনিত নিউমোনিয়া, প্রদাহ কমাতে এটি খুবই উপযোগী। গবেষণা বলছে, নির্দিষ্ট পরিমাণ জিঙ্ক গ্রহণ করলে প্রবীণ মানুষদের মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে প্রায় ৬৬ শতাংশ। বয়স্ক মানুষরা যদি নিয়মিত বাহ্যিক ভাবে জিঙ্ক সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেন তবে সংক্রমণের আশঙ্কা হ্রাস পায় অনেকটাই।
৪। ত্বক ভাল রাখতে: জিঙ্ক ব্রণর সমস্যা কমিয়ে ফেলতে পারে অনেকটা। ত্বকের প্রদাহ ও ব্রণ সৃষ্টিকারী জীবাণু নাশ করতেও জিঙ্কের জুড়ি মেলা ভার।
৫। প্রদাহ কমাতে: জিঙ্ক দেহে প্রদাহ তৈরি করতে সক্ষম প্রোটিনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ফলে কমে যেতে পারে প্রদাহ। পাশাপাশি যেহেতু জিঙ্ক কোষে জারণের চাপ কমায় তাই জারণের কারণে তৈরি হওয়া দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাও হ্রাস পায়। ফলে কমতে পারে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা, ক্যানসার ও স্মৃতি বৈকল্যের মতো সমস্যা।