Green Tea Vs Green Coffee

ওজন কমাতে গ্রিন টি না গ্রিন কফি, কোনটি বেছে নেবেন?

ওজন কমাতে অনেকেই গ্রিন টি বেছে নেন। গ্রিন টি-র মতো গ্রিন কফিও পাওয়া যায়। চায়ের বদলে কফিতে চুমুক দিলে কি দ্রুত ওজন কমবে?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৩৩
গ্রিন টি না গ্রিন কফি, ওজন কমাতে কোনটি ভাল?

গ্রিন টি না গ্রিন কফি, ওজন কমাতে কোনটি ভাল? ছবি: আনন্দবাজার অনলাইন

স্বাস্থ্য সচেতনদের তালিকায় দুধ চা ব্রাত্য অনেক দিনই। বদলে তাঁরা বেছে নেন অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর সবুজ পাতার চা। গ্রিন টি-র উপকার অনেক। মূলত যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন, তাঁরা অনেকেই ডায়েটে এমন চা রাখেন। তবে গ্রিন টি-র মতো বাজারে মেলে গ্রিন কফিও। তার উপকারিতাও নেহাত কম নয়। আপনি যদি কফিপ্রেমী হন, তা হলে কোনটি বেছে নেবেন, গ্রিন টি না কি কফি? কোনটি ওজন ঝরানোর পক্ষে বেশি সহায়ক?

Advertisement

গ্রিন কফি: বাজারে যে কফি মেলে, সাধারণত তা কফি বীজ রোস্ট করে তৈরি হয়। গ্রিন কফির বীজ কাঁচা অবস্থায় থাকে বা সবুজ থাকে। কফির অন্যতম উপাদান হল ক্যাফিন। গ্রিন কফিতে রোস্টেড কফির তুলনায় এই উপাদান কম পরিমাণে থাকে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এটা নির্ভর করে সুবজ কফি বীজ থেকে কী ভাবে তা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে, তার উপর। সাধারণ কফির তুলনায় পুষ্টিগুণের নিরিখে কিছু বাড়তি উপকারিতা মেলে গ্রিন কফিতে।

গ্রিন টি: ক্যামেলিয়া সিনেনসিয়া নামক গাছের পাতা থেকে তৈরি হয় গ্রিন টি। প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতির তফাতের জন্যই রোস্ট করা চায়ের চেয়ে এতে অনেক বেশি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পাওয়া যায়। ত্বক ভাল এবং শরীর সুস্থ রাখতে এটি বিশেষ ভাবে কার্যকর।

উপকারিতা

গ্রিন কফি রক্তচাপ কমাতে সহায়ক, ফলে হাইপারটেনশনের রোগীদের জন্য ভাল। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, গ্রিন কফিতে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বা সিজিএ রক্তবাহীগুলির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং তা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গ্রিন কফি অত্যন্ত উপকারী। অন্য দিকে, গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে উপযোগী। ওজন কমাতেও সহায়ক এই চা।

ওজন কমাতে গেলে কোনটি খাবেন?

'গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড প্র্যাকটিস' জার্নালে ২০১১ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যাচ্ছে, গ্রিন কফি ওজন কমাতে সহায়ক। ২০১৭ সালে ‘এশিয়া প্যাসিফিক জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষার ফলাফলে ওজন কমাতে গ্রিন কফির কার্যকারিতা প্রমাণ হয়েছে। আট সপ্তাহ ধরে সবুজ কফি বীজের নির্যাস বেশ কয়েক জনকে খাওয়ানো হয়। সকলকেই ক্যালোরি মেপে খাবার দেওয়া হত। কিন্তু দেখা যায়, যাঁরা গ্রিন কফি খেয়েছেন, তাঁদের ওজন কমেছে বেশি। অন্য দিকে, ২০০৮ সালে গ্রিন টি নিয়ে একটি সমীক্ষা প্রকাশিত হয় ‘ফিজ়িয়োলজি এবং বিহেভিয়ার’ নামক একটি জার্নালে। যেখানে দেখা গিয়েছে, তিন মাস গ্রিন টি খেয়ে ৩.৩ কেজি পর্যন্ত ওজন কমেছে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের।

গ্রিন কফিতে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের সাহায্যে ক্যাফিন পৌষ্টিকনালীতে কার্বোহাইড্রেট শোষণ কমাতে সাহায্য করে, যা ওজন কমানোর পক্ষে সহায়ক হয়। পাশাপাশি, এই উপাদান ফ্যাটের বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।

অন্য দিকে, বিপাকহার বৃদ্ধিতে গ্রিন টিয়ের ভূমিকা ইতিমধ্যেই গবেষণায় প্রমাণিত। বিপাকহার বাড়লে ওজন কমা সহজ হয়, আবার বিপাকহারের ধীর গতি ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে একই সঙ্গে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শুধু গ্রিন টি বা গ্রিন কফি খেয়ে ওজন কমানো যায় না। এই দু’টি পানীয় ওজন কমানোর পক্ষে সহায়ক। ওজন কমাতে হলে পুষ্টিকর খাবার মাপমতো খাওয়া জরুরি। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ওজন কমাতে দু’টিই খাওয়া চলে। তবে গ্রিন টি-তে যে হেতু গ্রিন কফির চেয়ে ক্যাফিনের পরিমাণ কম, তাই সেটি খাওয়াই শ্রেয়। পাশাপাশি, পেটের সমস্যা, স্নায়ুজনিত অসুখ থাকলে গ্রিন কফি মাত্রা বুঝে খেতে হবে। দৈনিক ক্যাফিনের পরিমাণ ৯০ মিলিগ্রামের মধ্যে থাকলে কফিতে সমস্যা নেই।’’ তবে অম্বল, গ্যাসের ধাত থাকলে গ্রিন কফির বদলে গ্রিন টি খাওয়ার পরামর্শই দিচ্ছেন তিনি।

গ্রিন টি এবং গ্রিন কফি উপকারী হলেও বেশি খেলে তা শরীরে নানা রকম সমস্যাও তৈরি করতে পারে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, দিনে কেউ দু’বার চিনি ছাড়া গ্রিন কফি অথবা গ্রিন টি খেতে পারেন। তবে তার বেশি নয়।

Advertisement
আরও পড়ুন