— প্রতীকী চিত্র।
কখনও প্রচণ্ড গরম। আবার কখনও অঝোর ধারায় বৃষ্টি। সকাল থেকেই শরীরটা কেমন যেন ঝিমিয়ে রয়েছে। রোদের তেজ তেমন না থাকলেও অদ্ভুত ভ্যাপসা আবহাওয়া। বুকে কেমন যেন চাপ অনুভব করছেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের মধ্যে থেকেও হঠাৎ শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। চারিদিক কেমন যেন বদ্ধ লাগছে। অথচ সর্দি-কাশি বা হাঁপানির সমস্যা রয়েছে, তেমনও নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এমন অনুভূতি যে সব সময় হাঁপানি থাকলেই হতে পারে এমনটা নয়। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে আগের রাতে হয়তো যে খাবার খেয়েছেন, তা ভাল হজম হয়নি। সেখান থেকে গ্যাস হয়ে গিয়েও দম নিতে সমস্যা হচ্ছে। বাড়াবাড়ি হলে চিকিৎসকের কাছে তো যাবেনই। তবে এমন পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য নিয়মিত কয়েকটি যোগাসন অভ্যাস করে দেখতে পারেন।
১) সুখাসন
ম্যাটের উপর পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসুন। এ বার ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে বাঁ ঊরুর উপর এবং বাঁ পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে ডান ঊরুর উপর রাখুন। এর পর দুই হাঁটুর উপর দু’হাত টান টান করে রাখুন। এই অবস্থায় চোখ বন্ধ করে বসে স্বাভাবিক ছন্দে শ্বাস প্রশ্বাস নিন। দুই থেকে তিন মিনিট পর্যন্ত এই অবস্থায় থাকতে পারেন।
২) ভুজঙ্গাসন
ম্যাটে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার হাতের তালু মেঝের উপর ভর দিয়ে পাঁজরের দুই পাশে রাখুন। এর পর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিতে তুলুন। এর পর মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান। প্রথম দিকে এই আসন তিন বার করুন। পরবর্তী কালে পাঁচ-ছ’বারও করতে পারেন।
৩) মৎস্যাসন
ম্যাটের উপরে টান টান হয়ে শুয়ে দু’পা এক জায়গায় করে নিতে হবে। দু’পাশে টানটান করে রাখতে হবে দুই হাত। তার পরে চোখ বুজে ফেলতে হবে। শ্বাসপ্রশ্বাস থাকবে স্বাভাবিক। এ বার ধীরে ধীরে ধনুকের মতো করে বেঁকিয়ে ফেলতে হবে পিঠ। কাঁধও উঠে আসবে। শরীরের ভার হাতের কনুইয়ের পাশাপাশি থাকবে মাথা ও নিতম্বে। বুক উপরের দিকে উঠে আসবে। সবটা ঠিকমতো করলে অনেকটাই মাছের মতো দেখাবে। স্বাভাবিক ভাবেই চলতে থাকবে শ্বাসপ্রশ্বাস।
৪) পশ্চিমোত্তনাসন
প্রথমে দুই পা টানটান করে সোজা হয়ে বসুন। শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত মাথার উপরে তুলুন। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত-সহ কোমর থেকে সামনের দিকে বেশ খানিকটা ঝুঁকে মুখ হাঁটুতে স্পর্শ করুন। আসন করার সময় পেট ভিতরের দিকে হালকা টেনে রাখুন। আগের অবস্থায় ফেরার সময় শ্বাস নিতে নিতে হাত ওঠান এবং শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত নামিয়ে নিন। দিনে তিন থেকে পাঁচ বার এটি করুন।
৫) শবাসন
যেমন তেমন ভাবে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়লেই যে শবাসন করা যাবে, তা কিন্তু নয়। এই যোগাসন করতে হলে প্রথমে পিঠের উপর ভর দিয়ে শুতে হবে। তার পর হাত দুটো দেহের দু’পাশে পাশে রেখে পা দুটো মেঝের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে টান টান করে রাখতে হবে। মাটিতে রাখা দু’টি হাতের তালু থাকবে উপরের দিকে। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে হবে। এই যোগাসন যে হেতু একেবারে শেষে করতে হয়, তাই চাইলে একটু বেশি সময় ধরে এই যোগাসন অভ্যাস করা যায়।