নীরব ঘাতক অবসাদ। ছবি: সংগৃহীত।
মানসিক অবসাদ— এই শব্দ দুটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। কেউ নিজেই এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, কারও আত্মীয়পরিজন বা বন্ধুবান্ধবকে গ্রাস করেছে এই সমস্যা। সারা ক্ষণ মাথার মধ্যে মানসিক টানাপড়েন, দুঃখ ভাব, যে কোনও রকম কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলা, নিজেকে আর পাঁচজনের থেকে গুটিয়ে নেওয়া— এই উপসর্গগুলি যদি দু’সপ্তাহ বা তার বেশি স্থায়ী হয়, তবে আপনি অবসাদগ্রস্ত।
অবসাদ যে কোনও বয়সেই হানা দিতে পারে। কেবল বড়রাই নয়, ছোটরাও এর শিকার হয়। বয়ঃসন্ধিকালীন অবস্থায় অবসাদে ভোগার সম্ভাবনাও যথেষ্ট। কোনও শারীরিক বা আবেগজনিত জোরালো আঘাত বা হেনস্থার কারণে, পারিবারিক কোনও সমস্যার কারণে এমনটা হতে পারে। খুব দ্রুত এই সমস্যা চিহ্নিত না করতে পারলে কিন্তু ভবিষ্যতে সমস্যা বাড়বে। তাই শিশুদের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়েও বাবা-মায়েদের নজর রাখা উচিত। কখন বা কোন লক্ষণ দেখে ছেলেমেয়েকে এক জন মনস্তত্ত্ববিদের কাছে নিয়ে যেতেই হবে, পরামর্শ নিয়ে সঠিক রোগ চিহ্নিত করতে হবে, রইল তার হদিস।
১) ছেলে-মেয়ের ঘুমের ধরনের উপর নজর রাখতে হবে। কম ঘুমোনো, বেশি ঘুমোনো কিংবা ঘুমের মধ্যে অস্থিরতা দেখলে সতর্ক হোন। ঘন ঘন ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখা, ভয়ে রাতে বার বার জেগে ওঠা— এই উপসর্গগুলি দেখলেও সতর্ক হোন।
২) ছেলে-মেয়ের ব্যবহারে আচমকা বদল দেখলে সতর্ক হোন। কোনও কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া, এক টানা কান্নাকাটি, অকারণ ঝগড়া করা এই সব উপসর্গ দেখলে সাবধান হতে হবে।
৩) পছন্দের কাজ, খেলতে যাওয়া, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মেলামেশা করার বিষয় অনীহা দেখালেও সতর্ক হতে হবে।
৪) হঠাৎ পড়াশোনার মান কমে যাওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, স্কুলে যেতে অনীহা, কাজের গতি শ্লথ হয়ে যাওয়া— এই সব লক্ষণ ভাল নয়।
৫) বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া, নানা অছিলায় নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করা।
আপনার যদি মনে হয়, এর মধ্যে বেশ কিছু উপসর্গ আপনার সন্তানের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে, দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মাথায় রাখতে হবে এর মধ্যে মাত্র এক-দুটো উপসর্গ নিয়মিত ভাবে থাকলে, বা সবকটা উপসর্গই অনিয়মিত ভাবে থাকলে তা অবসাদের লক্ষণ না-ও হতে পারে। তবে রোগ আছে কি নেই তা যাচাই করার জন্য এক জন মনস্তত্ত্ববিদ বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।