ডিমেনশিয়ার কোন লক্ষণগুলি দেখেই সতর্ক হবেন? ছবি: সংগৃহীত।
যে কোনও রোগের ক্ষেত্রে একটা কথা খুব জরুরি, সেটি হল ‘প্রিভেনশন ইজ় বেটার দ্যান কিয়োর’ (রোগ সারানোর থেকে রোগ প্রতিরোধ করা ভাল)। সাধারণ জ্বর-সর্দি, বা পেটব্যথা হলে না হয় বাইরে থেকে বুঝে তাকে কিছুটা হলেও আটকানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু ডিমেনশিয়ার মতো জটিল রোগের ক্ষেত্রে আগে থেকে কী ভাবে তা বোঝা সম্ভব? ভুলো মন তো অনেকেরই থাকে। বাজার করতে গিয়ে এটা-ওটা আনতে ভুলে যাওয়া বা এক জায়গার জিনিস অন্য জায়গায় রেখে দেওয়া— এ সব তো হামেশাই ঘটে। কিন্তু নিজের বাড়ির ঠিকানা ভুলে যাওয়া বা খাওয়ার পর তা মনে করতে না পারার মতো লক্ষণ দেখা দিলে ‘স্মৃতিভ্রম’ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। জেনে নিন ডিমেনশিয়া রোগের প্রাথমিক কোন লক্ষণগুলি দেখলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
১) স্মৃতিশক্তির সমস্যা সাধারণত ডিমেনশিয়া রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। শুরুর দিকে ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সদ্য ঘটা কথোপকথন কিংবা ঘটনাগুলি ভুলে যেতে পারেন। জিনিসপত্র ভুল জায়গায় রাখা, স্থান এবং বস্তুর নাম ভুলে যাওয়া, সঠিক শব্দটি ভাবতে সমস্যা হওয়া এবং বার বার একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে থাকা— কোনও ব্যক্তির এই উপসর্গগুলি দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।
২) তা ছাড়া দষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসা, কথার মধ্যে সাযুজ্য না থাকা এই রোগের প্রাথমিক পর্যায়ের সঙ্কেত হতে পারে। সময় ও তারিখ মনে রাখতে না পারাও এই রোগের লক্ষণ। রঙের পার্থক্য বুঝতে না পারা, দুরত্ব বুঝতে অসুবিধা, গাড়ি চালাতে সমস্যা এই সবই কিন্তু ডিমেনশিয়া রোগের লক্ষণ।
৩) কোনও লেখা পড়ে বুঝতে এবং লিখতে সমস্যা শুরু হয়। হয়তো দেখা যাবে, রোগী অক্ষর, শব্দ, বাক্য তৈরি করতে পারছেন না। নম্বর বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। পর পর বাক্য লিখতে গেলেই সব তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। যা লিখছেন, তার মানে দাঁড়াচ্ছে না। কোনও কিছু ভাষায় প্রকাশ করতে গেলেও সমস্যা হচ্ছে। গুছিয়ে কথা বলতে পারছেন না। এ সব লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন।
৪) হঠাৎ হেসে কথা বলছেন পরমুহূর্তেই আবার মাথাগরম হয়ে যাচ্ছে! বাড়তি বয়সে মাঝেমধ্যেই এমন সমস্যার সম্মুখীন হন মানুষ। এমনটা ঘন ঘন হলে কিন্তু সচেতন হতে হবে। এমন ক্ষেত্রে লোকজনের সামনে আসতে চান না অনেকেই। অথবা এলেও সঠিক ব্যবহার করেন না। প্রচণ্ড রাগ, জেদ, মেজাজ দেখান। লোকজনকে খারাপ কথা বলছেন, হঠাৎ করে গায়ে হাত তুলতেও দেখা গিয়েছে অনেক ডিমেনশিয়ার রোগীকে।