মনখারাপ থাকলে পেটও খারাপ হয়? প্রতীকী ছবি
সকাল সকাল ভাল মনে অফিসে গেলেন, হঠাৎ বসের ডাক! যেই না তিনি ডাকলেন, অমনি পেট গুড়গুড়! দৌড়তে হল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে। এ ধরনের সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। অনেক সময়ে দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগে ভোগা মানুষদের মধ্যে অকস্মাৎ মলত্যাগের প্রবণতা দেখা যায়। এ নিছক মনের রোগ নয়, পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক যুক্তি।
বিজ্ঞান বলছে, দেহের সব অঙ্গই বিভিন্ন স্নায়ুদ্বারা মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। খাদ্যনালিও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই পেটে কোনও সমস্যা দেখা দিলে যেমন সঙ্কেত পায় মস্তিষ্ক, তেমনই মস্তিষ্কে কোনও রকম অসুবিধা হলে অনেক সময়ে তা প্রকাশ পায় পেটের গোলমালের মাধ্যমে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, একে ‘গাট-ব্রেন সংযোগ’ বলে। রাগ, দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের মতো একাধিক সমস্যার প্রভাব পড়তে পারে পেটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই সমস্যা খুব একটা গুরুতর না হলেও, দীর্ঘ দিন অবহেলা করলে এই সমস্যা ডেকে আনতে পারে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম, ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ ও আলসারের মতো রোগ।
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম
উদ্বেগ থেকে তৈরি হওয়া পেটের গোলযোগের মধ্যে ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম’ বা ‘আইবিএস’ অন্যতম প্রধান একটি সমস্যা। উদ্বেগের ফলে অনেক সময়ে বৃহদন্ত্রের সমস্যা তৈরি হয়। বৃহদন্ত্রের পেশিতে টান লাগা, পেটে ব্যথা ও পেট ফাঁপার মতো বিড়ম্বনা দেখা দেওয়াও অস্বাভাবিক নয়। এর ফলে ডায়েরিয়া কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ
ক্ষুদ্রান্ত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ থেকে এই রোগের সৃষ্টি। মানসিক উদ্বেগ থেকেও এই সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে। দুশ্চিন্তা হলেই পেটে মোচড় দিয়ে মলত্যাগের বেগ আসতে পারে এই রোগে। চিকিৎসা না করালে দেখা দিতে পারে ‘ক্রোন ডিজিজ’। অনেক সময়ে মানসিক উদ্বেগ থাকলে রোগীরা উল্টোপাল্টা খাবার খেয়ে নেন। এতে আরও বেড়ে যেতে পারে সমস্যা।
পেপটিক আলসার
পাকস্থলীর ভিতর ও ক্ষুদ্রান্ত্রের উপরিভাগে ক্ষত তৈরি হওয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় পেপটিক আলসার বলে। মানসিক উদ্বেগ সংক্রান্ত সমস্যাগুলি দীর্ঘ দিন উপেক্ষা করলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি, অনেক সময়ে এই অসুখ গুরুতর কোনও অন্তর্নিহিত সমস্যার সঙ্কেতও হতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।