পশ্চিমের দেশগুলিতে এই পদ্ধতিকে বলে অয়েল পুলিং ছবি: সংগৃহীত
মুখের দুর্গন্ধ কমাতে ও মুখগহ্বরের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অনেকেই ব্যবহার করেন বাজার চলতি নানা কৃত্রিম মাউথ ওয়াশ। কিন্তু জানেন কি প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেই রয়েছে এমন এক পদ্ধতি যা দামে ও গুণে টেক্কা দিতে পারে যে কোনও কৃত্রিম মাউথওয়াশকে? এই পদ্ধতিতে জলের বদলে কুলকুচি করতে হয় তেল দিয়ে। পশ্চিমের দেশগুলিতে এই পদ্ধতিকে বলে অয়েল পুলিং। দেখে নিন এর গুণাগুণ।
১। মুখগহ্বরের জীবাণু হ্রাস
মানুষের মুখের ভিতরে প্রায় ৭০০ ধরনের ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে। দাঁতের সমস্যা থেকে মুখের দুর্গন্ধ, হরেক রকমের সমস্যা ডেকে আনে এই ব্যাক্টেরিয়াগুলি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে মাত্র দুই সপ্তাহ রোজ দশ মিনিটের জন্য তেল কুলকুচি করলে অনেকটাই হ্রাস পায় ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা।
২। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে
পৃথিবীর প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত। বিজ্ঞানের ভাষায় এক বলে হ্যালিটোসিস। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ময়লা থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই সমস্যার মূল কারণ, জিভে জমে থাকা ময়লার স্তর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্তরে জমে থাকা ময়লায় যে ধরনের ব্যাক্টেরিয়া থাকে তাকে নিকেশ করতে সবচেয়ে কার্যকর রাসায়নিক ক্লোরিস্কিডাইন। আশ্চর্যজনক ভাবে নারকেল বা সিসামে তেল দিয়ে মুখ কুলকুচি করলেও মেলে ক্লোরিস্কিডাইনের সমতুল ফল।
৩। ক্যাভিটি রোধ
সাধারণ ভাষায় যাকে দাঁতে পোকা লাগার সমস্যা বলে, তাকেই বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ক্যাভিটি। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে এই সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। দাঁতের মাঝে জমে থাকা মিষ্টি জাতীয় খাদ্যকণার উপর বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার ক্রিয়ায় যে অ্যাসিড উৎপন্ন হয় তা দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে এবং ক্যাভিটি তৈরি করে। অয়েল পুলিং এই সমস্যা কমাতে বেশ উপযোগী।
৪। মাড়ির প্রদাহ নাশ করতে
মাড়ির ফোলাভাব কমাতে ও প্রদাহ হ্রাস করতে এই অয়েল পুলিং পদ্ধতি দারুন কার্যকর। বিশেষত নারকেল তেল মুখের স্ট্রেপটোকক্কাস জাতীয় ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। শুধু মাড়ির প্রদাহই নয়, মাড়িতে জমে থাকা ময়লার কঠিন আস্তরণ কমাতেও সাহায্য করে এই পদ্ধতি।
৫। অন্যান্য উপকার
এই সব উপযোগিতা ছাড়াও তেল দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁত সাদা ঝকঝকে হয় বলেও মনে করেন অনেকে। তা ছাড়া বাজার চলতি রাসায়নিক মাউথওয়াশের তুলনায় অনেক সস্তা এই পদ্ধতি। তবে এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর তা বুঝতে আরও গবেষণার অবকাশ রয়েছে। পাশাপাশি কুলকুচি করার সময় যেমন অবশ্যই পরিশুদ্ধ তেল ব্যবহার করা বাঞ্চনীয়, তেমনই কুলকুচি করার সময় তেল গিলে ফেললেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।