ডার্ক চকোলেট খেলে কি ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমবে, কী বলছে গবেষণা? ফাইল চিত্র।
আপনি কি টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত? চোখের জলে বিদায় জানিয়েছেন চকোলেট, মিষ্টিকে? তবে সানন্দে আপন করে নিতে পারেন চকোলেটকে। অবাক হচ্ছেন তো? গবেষকেরা দাবি করেছেন, টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে চকোলেট। তবে যে সে চকোলেট নয়, ডার্ক চকোলেট। ‘দ্য বিএমজে’ বিজ্ঞানপত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে।
ডার্ক চকোলেট খেলে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমতে পারে, এই নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন আমেরিকার হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা। দাবি করা হয়েছে, সপ্তাহে অন্তত ৫টি ডার্ক চকোলেট খেলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি নাকি ২১ শতাংশ কমে যেতে পারে।
হার্ভার্ডের নিউট্রিশন ও এপিডেমিয়োলজি বিভাগের গবেষকেরা কয়েক জনকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন। ৩০ থেকে ৫০ বছর ও তার বেশি বয়সিদের ডার্ক চকোলেট খাইয়ে পর্যবেক্ষণে রেখে নাকি দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে গিয়েছে।
গবেষকদের দাবি, কেবল দুধ দিয়ে যে চকোলেট তৈরি হয় সেটি বেশি খেলে যে ডায়াবিটিস হবে, তেমন কোনও প্রমাণ নেই। তবে বেশি খেলে নিঃসন্দেহে ওজন বাড়বে। আর স্থূলতা ডায়াবিটিসের অন্যতম কারণ। কিন্তু ডার্ক চকোলেটে পলিফেনল নামে এমন একটি উপাদান আছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ডায়াবিটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। সমীক্ষা বলছে, তার মধ্যে অধিকাংশেরই টাইপ ২ ডায়াবিটিসের সমস্যা রয়েছে। এই ডায়াবিটিসের হাত ধরে উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা, এমনকি হৃদ্রোগেরও জন্ম হয়। তাই টাইপ ২ ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। তবে ডার্ক চকোলেট খেলে টাইপ ২ ডায়াবিটিস কতটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে, সে বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “হার্ভার্ডের এই গবেষণা সবে শুরু হয়েছে। কিছু মানুষের উপর পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে, ডার্ক চকোলেট খেলে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমতে পারে। এই গবেষণা যদিও খুবই কার্যকরী, তবে বৃহত্তর ক্ষেত্রে সমীক্ষা চালিয়ে তবেই নিশ্চিত হতে হবে। একজন প্রিডায়াবেটিকের রোগী পরিমিত মাত্রায় ডার্ক চকোলেট খেতেই পারেন, তবে বেশি নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সে ক্ষেত্রে ‘সুগার ফ্রি’ ডার্ক চকোলেটই খেতে হবে।”
চিকিৎসকের পরামর্শ, ডায়াবিটিসকে বশে রাখতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া ও শরীরচর্চা করতে হবে। সারা দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি বা জগিং করতেই হবে। সেই সঙ্গে সুষম খাবার খেতে হবে। দু'টি মিলের মধ্যে লম্বা সময়ের ব্যবধান থাকলে চলবে না। আর কেউ যদি প্রিডায়াবেটিক হন, তা হলে তাঁকে সময়ান্তরে পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।