Liver Disease Symptoms

খিদেই পায় না, পছন্দের খাবারও জোর করে খান! কিসের লক্ষণ? চিন্তার কারণ আছে কি?

হজম প্রক্রিয়া যদি ঠিকমতো হয়, তা হলে সময়ান্তরে খিদে পাওয়াই স্বাভাবিক। ভাল খিদে হওয়া, টানা ঘুম ও ঠিকমতো হজম হওয়া মানেই শরীর সুস্থ আছে। এই প্রক্রিয়ার ব্যতিক্রম হলেই বুঝতে হবে, শরীরের গাড়ি ঠিকমতো চলছে না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৫০
Appetite loss is an early sign of liver disease

খিদে কম, পেট ভার, কেন হচ্ছে এমন? প্রতীকী ছবি।

একেবারেই খিদে পায় না। সকালে জলখাবার খাওয়ার পরেই পেট ভার হয়ে যায়? দুপুরের খাওয়া এক প্রকার জোর করেই খান? এমন সমস্যা মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। নিছক গ্যাস-অম্বলের সমস্যা ভেবে এড়িয়ে গেলে আখেরে ক্ষতিই হবে।

Advertisement

খিদে না পাওয়া কিসের লক্ষণ?

হজম প্রক্রিয়া যদি ঠিকমতো হয়, তা হলে সময়ান্তরে খিদে পাওয়াই স্বাভাবিক। ভাল খিদে হওয়া, টানা ঘুম ও ঠিকমতো হজম হওয়া মানেই শরীর সুস্থ আছে। এই প্রক্রিয়ার ব্যতিক্রম হলেই বুঝতে হবে, শরীরের গাড়ি ঠিকমতো চলছে না। অনেকেই বলেন, সকালে অল্প করে প্রাতরাশ খাওয়ার পরেও দুপুরে ঠিকমতো খিদে হয় না। পেট ভার লাগে। বিকেল হলেই মনে হয়, পেট ফাঁপছে। রাতের দিকে জোর করে কিছু খাওয়ার পরেই অম্বল হয়ে যায়। তখন মনে হয়, গলার কাছে খাবার দলা পাকিয়ে রয়েছে।

মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল জানাচ্ছেন, খিদে না পাওয়া বা একেবারেই কম হওয়া আসলে লিভারের রোগের লক্ষণ। লিভারের অবস্থা বেহাল হতে শুরু করলে তার প্রাথমিক উপসর্গই হল খিদে কমে যাওয়া বা খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাওয়া। বেশির ভাগ মানুষই লিভারের অসুখের প্রাথমিক লক্ষণগুলি অবহেলা করেন। যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল দিকে মোড় নেয়।

চিকিৎসকের কথায়, লিভার সুস্থ রাখার কোনও ওষুধ নেই। আসলে লিভার ভাল থাকে নিয়মে, ওষুধে নয়। অনিয়মও করে যাব, আবার ওষুধ খাব, এই যুক্তিতে অসুখ দূরে রাখা যায় না। লিভারকে সুস্থ রাখার একমাত্র উপায় হল জীবনশৈলীতে বদল আনা।

লিভার বিগড়োচ্ছে, কী কী উপসর্গ দেখে সতর্ক হবেন?

১) খিদে কমে যাওয়া

২) পেটের উপরিভাগে ব্যথা, পেট ফাঁপার সমস্যা

৩) ঘন ঘন জন্ডিস হওয়া

৪) মল কিংবা বমির সঙ্গে রক্তপাত

৫) পায়ের পাতা ও পেটে জল জমতে শুরু করা

৬) সারা ক্ষণ ঝিমিয়ে থাকা, মাথা ঘোরা

লিভারে মেদ জমার আগেই সতর্ক হোন

অতিরিক্ত তেলমশলাদার খাবার, মদ্যপান থেকে চড়চড়িয়ে বাড়ে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড। সেগুলিই চর্বির আকারে জমা হতে শুরু করে লিভারে। মেদ বাড়লে তার থেকে ফ্যাটি লিভার দেখা দেয়, যা না সারালে লিভারে ক্ষত হতে থাকে। তখন লিভারের অন্যতম জটিল অসুখ সিরোসিসের জন্ম হয়। তাই বিপদ ঘনিয়ে ওঠার আগেই সাবধান হতে হবে। কী ভাবে?

চিকিৎসকের পরামর্শ, খিদে না পেলে জোর করে খাবেন না। তবে সমান্তরে অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয় তরল খাবার খেলে, যেমন ডিটক্স পানীয় বানিয়ে রেখে দিতে পারেন, অথবা বিভিন্ন রকম ফল, পুদিনা মিশিয়ে স্মুদি তৈরি করে নিন। এই ধরনের পানীয় শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বা টক্সিন ছেঁকে বার করে দেবে। তখন খিদে পাবে।

প্রতি দিন একটানা আধ ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিট হাঁটুন বা আধ ঘণ্টা শরীরচর্চা করুন।

ভাজা, তেলমশলা, মিষ্টি, ফাস্টফুড— এ সব বাদ দিতে পারলেই ভাল। একান্তই দু’-এক দিন খেতে চাইলে বাড়িতে বানিয়ে খান। রান্নায় তেলের ব্যবহার কমাতে হবে।

মদ্যপানের পরিমাণও এক এক জনের শারীরিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। আপাত ভাবে ক্ষতি হচ্ছে না ভাবলেও জানবেন, পরবর্তীতে তা-ই লিভারের মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে। তাই মদ্যপানের মাত্রা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন।

পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে এবং সেই সঙ্গে টানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমও জরুরি।

আরও পড়ুন
Advertisement