কী কী লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে, জেনে নিন। ছবি: সংগৃহীত।
বায়ুদূষণ শুধু ফুসফুসের নয়, চোখেরও ক্ষতি করে। বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর রাসায়নিক ও ধূলিকণা চোখের জন্য খুবই খারাপ। সাম্প্রতি ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’ (এনসিবিআই) এক গবেষণায় দাবি করেছে, বায়ুদূষণ যেমন হার্টের রোগ, ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য দায়ী, তেমনি অন্ধত্বের কারণও হতে পারে দূষণই। বাতাসে ভাসমান দূষিত কণার কারণে চোখের এমন রোগ হতে পারে, যা থেকে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে অথবা দৃষ্টিশক্তি চলেও যেতে পারে।
দূষণজনিত কারণে চোখের যে সব রোগ হতে পারে, তার মধ্যে একটি হল ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’। ‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ অপথ্যালমোলজি’-তে এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। সেখানে চক্ষু চিকিৎসকেরা দাবি করেছেন, দূষণজনিত কারণে বয়স্কদের মধ্যে চোখের এই সমস্যা বেড়ে চলেছে। তবে ইদানীং কালে কমবয়সিদের মধ্যেও এই রোগ দেখা যাচ্ছে।
দূষণ কী ভাবে ক্ষতি করছে চোখের?
ভাসমান ধূলিকণা (পিএম১০) ও অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫)-ই শুধু নয়, যানবাহনের ধোঁয়ায় নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রাও বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। ওই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাগুলি খুব সহজে মিশে যেতে পারে বাতাসে। তা ছাড়া ফসল পোড়ানো ধোঁয়া, কারখানার চিমনি থেকে বেরোনো ধোঁয়া তো রয়েছেই। বাতাসের ধূলিকণাকে আশ্রয় করে এগুলিই বিষবাষ্প তৈরি করে। এই দূষিত বায়ু চোখের ম্যাকুলার জন্য খুবই ক্ষতিকর।
ম্যাকুলা হল রেটিনার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি ছোট বিন্দু। এই ম্যাকুলা সোজাসুজি দেখতে সাহায্য করে। যদি এই ম্যাকুলা বা রেটিনার কেন্দ্রে অবস্থিত বিন্দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা হলেই সোজা লাইন দেখতে সমস্যা হয়। ঝাপসা হতে থাকে দৃষ্টি।
ধরুন, টিভি দেখছেন। এখন যদি ম্যাকুলার অবস্থান সরে যায় বা ম্যাকুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সোজাসুজি দৃষ্টিটাই থাকবে না। টিভি দেখতে সমস্যা হবে। মনে হবে সব আঁকাবাঁকা। এটা হল রোগের প্রাথমিক ধাপ। ম্যাকুলা যত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ততই দৃষ্টি ক্রমশ ঝাপসা হতে থাকবে। রেটিনার মাঝখানে একটা কালো গোলোকার ছাপ পড়বে। চোখ লাল হতে শুরু করবে। ব্যথা বাড়বে। রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে অন্ধও হয়ে যেতে পারেন রোগী।
চক্ষু চিকিৎসকেরা বলছেন, চোখের যে কোনও সমস্যা ফেলে রাখা ঠিক নয়। যদি দৃষ্টি ঝাপসা হতে শুরু করে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের চিকিৎসা লেজ়ার থেরাপির মাধ্যমে হতে পারে। তা ছাড়া আরও কিছু আধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা হতে পারে, যা রোগীর অবস্থা দেখে ঠিক করবেন চিকিৎসকেরা।