ঋতুকালীন সময়ে কী কী খেয়াল রাখা জরুরি, প্রান্তিক মহিলাদের বোঝালেন চিকিৎসকেরা। ফাইল চিত্র।
ঋতুস্রাব সঙ্কোচের নয়, লজ্জারও নয়। ঋতুকালীন সময়ের পরিচ্ছন্নতা অনেক জটিল রোগের আশঙ্কা কমাতে পারে। ঋতুস্রাবের সময়ে ছাই বা কাপড়ের টুকরো নয়, স্যানিটারি প্যাডই ব্যবহার করা জরুরি। এমন নানা বিষয় উঠে এল আলোচনায়। প্রান্তিক মহিলাদের ঋতুকালীন স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন করতেই এই আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল মুক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র ও এইচসিএল ফাউন্ডেশন। প্রান্তিক মহিলাদের ঋতুকালীন সুরক্ষার খুঁটিনাটি বোঝালেন চিকিৎসকেরা।
সরকারি সমীক্ষাই বলছে, ভারতের ৭০ শতাংশ মায়েরা নিজের মেয়েকে ঋতুস্রাব সংক্রান্ত বিষয়ে নীরব থাকতে বা প্রশ্ন না করতেই শিখিয়ে থাকেন। ৪৫ শতাংশ মেয়ের কাছে ঋতুস্রাব আজও অস্বাভাবিক। বিশেষ করে, গ্রামাঞ্চল ও প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে ঋতুকালীন সুরক্ষার বিষয় আজও সম্পূর্ণ অবেহলিতই বলা চলে। বেশির ভাগ জায়গায় আজও স্যানিটারি প্যাডের ব্যাপারে জানেনই না প্রান্তিক মহিলারা অথবা জানলেও তা ব্যবহার করতে অভ্যস্ত নন। ফলে সংক্রমণও ঘটে চলে নীরবেই। হানা দেয় মারণরোগ।
ঋতুকালীন সময়ে স্বাস্থ্যসচেতনতা নিয়ে শিবির। ফাইল চিত্র।
প্রান্তিক মহিলাদের নিয়ে স্বাস্থ্যসচেতনতা শিবিরের আয়োজন প্রায়শই করে থাকে মুক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র। সম্প্রতি গুরুকূল লার্নিং সেন্টারের মহিলা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। এই শিবিরটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিল বেঙ্গল অবস্ট্র্যাটিক অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি, যারা বিগত ৯০ বছর ধরে বাংলার প্রান্তিক মহিলাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে চলেছে। গ্রামীণ মহিলাদের সচেতনতার পাঠ দিতে এই সংস্থার তরফে শিবিরে যোগ দেন চিকিৎসক জয়িতা চক্রবর্তী, চিকিৎসক অন্বেষা দত্ত ও চিকিৎসক সুনোভা ঘোষ।
ঋতুস্রাব লজ্জার নয়, মেয়েরা শরীরের খেয়াল রাখুন, পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকেরা। ফাইল চিত্র।
ঋতুকালীন সময়ে পরিচ্ছন্নতার অভাব, সঠিক পুষ্টির অভাবে নানা রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। বিশেষ করে এ দেশের অনেক মহিলাই রক্তাল্পতায় ভোগেন। ঋতুকালীন সময়ে পুষ্টিকর খাবারের অভাব এর জন্য অনেকাংশেই দায়ী। এই বিষয়েও মহিলাদের সচেতন করলেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি, জরায়ুমুখের ক্যানসার নিয়ে সতর্কও করা হয়। মুক্তির কর্ণধার বিদিশা ঘোষ জানান, এই শিবিরের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের ঋতুস্রাব সংক্রান্ত অনেক ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার দূর করা। পাশাপাশি জরায়ুমুখের ক্যানসার নিয়েও সতর্ক করা। মহিলাদের মধ্যে যত ধরনের ক্যানসার দেখা যায়, তার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে সারভিক্যাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ক্যানসার প্রতিরোধ করতে হলে প্রয়োজন সঠিক সময়ে প্রতিষেধক নেওয়া। দেশে কমবয়সি মেয়েদেরও জরায়ুমুখের ক্যানসারের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, প্যাপ স্মিয়ার নামক পরীক্ষাও জরুরি।