Medicines of Alzheimer’s

মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি দিয়ে অ্যালঝাইমার্স সারানোর দাবি! কাজ করছে দু’টি ওষুধ, কবে আসবে ভারতে?

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশ এবং অ্যালঝাইমার্সের মতো অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইমিউনোথেরাপিকে কাজে লাগাচ্ছেন আমেরিকার বিজ্ঞানীরা। অ্যালঝাইমার্সের রোগীদের চিকিৎসায় দিশা দেখাচ্ছে দু'টি ওষুধ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:৫৩
A new study has shown that two Medicines prove to be effective against Alzheimers disease

অ্যালঝাইমার্সের চিকিৎসায় ইমিউনোথেরাপির প্রয়োগ করছেন আমেরিকার বিজ্ঞানীরা। ফাইল চিত্র।

ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাওয়া থেকে শুরুটা হয়। ধীরে ধীরে কাছের মানুষজনকেও ভুলতে শুরু করেন রোগীরা। একটা সময়ে নিয়ে নিজের নাম, পরিচয় ও ঠিকানাটুকুও স্মৃতি থেকে মুছে যায়। অ্যালঝাইমার্স এমনই এক দুরারোগ্য ব্যধি। এই অসুখ সারানো মতো কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি এখনও সে ভাবে আসেনি। শুধু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার নানা পদ্ধতি নিয়েই গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়ে। ওয়াশিংটন স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা ইমিউনোথেরাপি দিয়ে অ্যালঝাইমার্স সারানোর চেষ্টা করছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, দু'টি ওষুধ রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

‘অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড ডিমেনশিয়া: ট্রানস্লেশন্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইন্টারভেনশন’ নামে একটি মেডিক্যাল জার্নালে নতুন গবেষণা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ‘লেকানেমাব’ ও ‘ডোনানেমাব’ নামে দু'টি ওষুধ রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, রোগের তীব্রতা অনেকটাই কমেছে। রোগীদের ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে, এবং অনেকেই নিজে থেকে সিদ্ধান্তও নিতে পারছেন।

অ্যালঝাইমার্স রোগের নানা স্তর রয়েছে। দীর্ঘকালীন অবসাদ, বাইপোলার ডিসঅর্ডার থেকে অ্যালঝাইমার্স হতে পারে। অত্যধিক মানসিক চাপের কারণে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে তা মস্তিষ্কের কোষগুলির উপর প্রভাব ফেলে। ‘কগনিটিভ ডিসফাংশন’ হতে পারে। তখন ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ে। অ্যালঝাইমার্সের রোগীদের যে কেবল স্মৃতিনাশ হয় তা নয়, যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে কোনও কিছুর পরিকল্পনা করা, যুক্তি দিয়ে বিচার করার ক্ষমতা, সমাজে মেলামেশা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। কথাবার্তাও অসংলগ্ন হয়ে যায়। নিজের মনের ভাব ভাষায় ব্যক্ত করতে পারেন না।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, অ্যালঝাইমার্সের রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, মস্তিষ্কে ‘বিটা-অ্যামাইলয়েড’ নামে একপ্রকার প্রোটিন জমা হয়, যা এই রোগের জন্য অনেকটাই দায়ী। মস্তিষ্কের কোষগুলির কার্যক্ষমতাও কমিয়ে দিতে পারে এই প্রোটিন। তাই যদি গোড়াতেই এই প্রোটিনকে ধ্বংস করা যায়, তা হলেই রোগের তীব্রতা কমবে। ‘লেকানেমাব’ ও ‘ডোনানেমাব’ ওষুধ দু’টি সে কাজই করবে। আপাতত রোগীদের উপর সেগুলি প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি।

এই দুই ওষুধ আসলে মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, যা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হচ্ছে রোগীদের শরীরে। ওষুধ দু’টির প্রয়োগে অনুমোদনও দিয়েছে আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ)। সূত্রের খবর, ‘লেকানেমাব’ ওষুধটি ভারতের বাজারে আনার চেষ্টা করছে জাপানের এক ওষুধনির্মাতা সংস্থা এবং ‘ডোনানেমাব’ ওষুধটি এ দেশে আনতে পারে আমেরিকার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি এলি লিলি। চলতি বছরেই দু’টি ওষুধ দেশের বাজারে আসতে পারে বলে খবর।

Advertisement
আরও পড়ুন