Wireless Pacemaker

দেশে প্রথম ৯২ বছরের বৃদ্ধার শরীরে বসল ২ ইঞ্চির ‘লিডলেস’ পেসমেকার, কী সুবিধা নতুন যন্ত্রটির?

বিরল অস্ত্রোপচার দেশে। ৯২ বছরের মহিলার শরীরে বসানো হয়েছে ইঞ্চি দুয়েকের অয়্যারলেস পেসমেকার। দেশে প্রথম বার এমন লিডলেস পেসমেকারের অস্ত্রোপচার হল। কী সুবিধা এই নতুন পেসমেকারের?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৩৪
A leadless pacemaker was implanted in a 92-year-old woman via her neck in Mumbai for the first time

নতুন ধরনের পেসমেকার রোগীর যন্ত্রণা কমাবে, অনেক বেশি নিরাপদও। —ফাইল চিত্র।

হৃৎস্পন্দনের ছন্দ ফেরাবে পেসমেকার, কিন্তু তাতে কাটাছেঁড়ার দরকার হবে না। মাত্র ইঞ্চি দুয়েক লম্বা যন্ত্রটি সটান গলার শিরা দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে হার্টে। বুকের চামড়া না কেটেই অস্ত্রোপচার করবেন চিকিৎসকেরা। শুনতে অবাক লাগলেও, এমনই বিরল অস্ত্রোপচার হয়েছে মুম্বইয়ে। উল্লেখ্য, দেশে প্রথম বার এমন পেসমেকার বসানো হয়েছে ৯২ বছরের এক মহিলার হার্টে। অস্ত্রোপচারের পরে তাঁর শরীরে কোনও জটিলতাও দেখা যায়নি।

Advertisement

সাধারণত, হার্টে ব্লকেজ হলে বা হৃৎস্পন্দনের গতিতে অসঙ্গতি ধরা পড়লে বুকের চামড়া কেটে হৃৎপিণ্ডের পাশে বসানো হয় পেসমেকার। স্পন্দন উৎপাদনকারী যন্ত্রের সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের সংযোগ রক্ষার জন্য থাকে একাধিক তার বা লিড। এই প্রথম বার এমন ধরনের পেসমেকার বসালেন চিকিৎসকেরা, যাতে কোনও তার বা লিডই নেই। বিশেষ পদ্ধতিতে গলার কাছে ছোট্ট একটি ছিদ্র করে তার মধ্যে দিয়েই সরাসরি ঢুকিয়ে দেওয়া হবে পেসমেকারটি। প্রয়োজন হবে না লিডের জটিলতার। অস্ত্রোপচারের পরেও কোনও রকম যন্ত্রণা অনুভব করবেন না রোগী।

এলিজাবেথ ফিজার্ডো নামে ওই মহিলার হার্টে ব্লকেজ ধরা পড়েছিল। হাঁটাচলা করার সময় শ্বাসকষ্ট হত তাঁর। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখে পেসমেকার বসানোরই সিদ্ধান্ত নেন। তবে, নবতিপর মহিলার বুকের চামড়া কেটে পেসমেকার বসানোর ঝুঁকি অনেক। তাই ‘লিডলেস পেসমেকার’ বেছে নেন চিকিৎসকেরা। কারণ একমাত্র এই ধরনের পেসমেকারই কোনও রকম কাটাছেঁড়া ছাড়াই ‘মিনিমাল ইনভেসিভ’ পদ্ধতিতে হার্ট অবধি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।

মুম্বইয়ের এসএল রাহেজা হাসপাতালে অস্ত্রোপচারটি হয়েছে। ওই হাসপাতালে ইন্ট্রাভেনশনাল অ্যান্ড স্ট্রাকচারাল কার্ডিয়োলজি বিভাগের ডিরেক্টর চিকিৎসক হরেশ মেহতা বলেন, “লিডলেস পেসমেকার রোগীদের পক্ষে অনেকটা বেশি নিরাপদ হবে, কারণ, আগেকার পেসমেকারগুলির মতো বুকের চামড়া কেটে অস্ত্রোপচার করে বসাতে হবে না এই যন্ত্র। কোনও লিড না থাকায় অধিকতর স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন পেসমেকার ব্যবহারকারীরা। গাড়ি চালাতে, সাঁতার কাটতেও কোনও সমস্যা হবে না।” তিনি আরও জানান, ব্যাটারিচালিত এই পেসমেকারের জটিলতা অনেক কম। এটা এমন ভাবে ডিজ়াইন করা, যাতে যে কোনও সময় শরীর থেকে খুলে ফেলা যাবে যন্ত্রটি।

তথ্য বলছে, দেশে প্রতি বছর গড়ে ২০ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে পেসমেকার বসানো হয়। যে ধরনের পেসমেকার এত দিন ব্যবহার করা হচ্ছিল, তাতে জটিলতা অনেক। নতুন পেসমেকার বসানোর পদ্ধতি সহজ, এতে বুকে কোনও কাটা দাগ থাকবে না, থাকবে না সংক্রমণের ভয়। এ দেশে অস্ত্রোপচার পরবর্তী সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি। ভয় থাকে রক্তপাতেরও। সেই আশঙ্কা এড়াবে নতুন এই লিডলেস পেসমেকারের প্রয়োগ। তা ছাড়া আঘাত পেলে লিড ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নতুন এই পেসমেকারে লিড না থাকায় ব্যবহারকারীরাও অনেক বেশি নিরাপদ থাকবেন।

Advertisement
আরও পড়ুন