মুহূর্তের মধ্যে মানুষের মননে জায়গা দখল করে নিয়েছিল আমজাদ খানের গব্বর সিং।
ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ‘শোলে’ যে ভাবে জন সাধারণের মন জয় করেছে, সে রকম উদাহরণ খুব বেশি নেই। ১৯৭৫ সালের স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি পাওয়া রমেশ সিপ্পির এই ছবি ২০২১ সালে ৪৫ বছরে পা দিল। অমিতাভ বচ্চনের ‘জয়’ আর ধর্মেন্দ্রর ‘বীরু’ দর্শকদের মন জয় করে নিলেও, মুহূর্তের মধ্যে মানুষের মননে জায়গা দখল করে নিয়েছিল আমজাদ খানের গব্বর সিং। তত্কালীন ভারতীয় চলচ্চিত্রে খলনায়ক চরিত্রের এমন জনপ্রিয়তা খুব বেশি ছিল না। কিন্তু ‘গব্বর সিং’-এর মহিমায় ‘শোলে’ কার্যত দশকের পর দশক এ দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছে। এমনকি, ছবির প্রচারের ক্ষেত্রে ‘গব্বর সিং’-এর জনপ্রিয়তাকে ‘শোলে’-এর নির্মাতারা কাজে লাগিয়ে তুমুল সাফল্য পেয়েছিলেন। কিন্তু, অনেকেই হয়তো জানেন না, ‘গব্বর সিং’-এর জন্য প্রথমে আমজাদ খানকে নয়, ড্যানি ডেনজংগপাকে ভাবা হয়েছিল। যদিও তিনি সেই সময়ে এই চরিত্রের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
গব্বর সিং-এর মতো বৈগ্রহিক চরিত্রকে ফিরিয়ে দেওয়ার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে একটি সাক্ষাৎকারে ড্যানি জানিয়েছিলেন, তিনি ‘শোলে’-এর প্রস্তাব পাওয়ার আগেই ফিরোজ খানের ‘ধর্মাত্মা’-র জন্য সই করে ফেলেছিলেন, এবং ফিরোজ খানের সঙ্গে পাকাপাকি কথা হয়ে গিয়েছিল। ড্যানি জানতেন যে ‘গব্বর সিং’ একটি অসাধারণ চরিত্র, কিন্তু নৈতিক দিক থেকে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
আক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে ড্যানি বলেন, ‘‘আমার লেশমাত্র আক্ষেপ নেই যে আমি গব্বর সিং-এর চরিত্র করতে পারিনি। কারণ ‘শোলে’-তে কাজ করলে মানুষ আমজাদ খানের সেই কালজয়ী কাজ প্রত্যক্ষ করতে পারতেন না।’’
চিরকালই ড্যানি ডেনজংগপা বাছাই ছবিতে কাজ করেছেন। বছরে তিনটের বেশি ছবিতে কাজ করতে দেখা যায়নি তাঁকে। পরবর্তীকালে তিনি জানিয়েছিলেন, মুম্বইয়ের গরমের জন্যও কিছু ছবি করতে রাজি হননি।
ড্যানি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। পুণের আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের পরীক্ষাতে পাশও করেছিলেন। কিন্তু পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে পড়ার জন্য সেখান থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। ড্যানি ডেনজংগপার মূল নাম শেরিং ফিনটসো ডেনজংগপা। কিন্তু তাঁর বন্ধু এবং সহপাঠী জয়া বচ্চনের উপদেশে তিনি লোকের উচ্চারণের সুবিধার্থে ‘ড্যানি’ নাম গ্রহণ করেন।
‘বন্দিশ’, ‘অগ্নিপথ’, ’১৬ ডিসেম্বর’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখেছেন ড্যানি। ২০০৩ সালে ভারতীয় সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে।