Amitabh-Jaya

অমিতাভ আর নেই! চিকিৎসকেরা জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন, তবু শান্ত ছিলেন জয়া

প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়, পেটের ভিতরের সব তন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁচার আশা ছিল না অমিতাভের। সাড়া দিচ্ছিলেন না চিকিৎসায়, কোমায় চলে গিয়েছিলেন অভিনেতা। তবু জয়া শান্তই ছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৩ ১২:৪২
Jaya Bachchan and Amitabh Bachchan

অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে জয়া বচ্চন। ছবি: সংগৃহীত।

একসঙ্গে এত পথ! ৫০তম বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপন করছেন অমিতাভ এবং জয়া বচ্চন। তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়ে হৃদয়স্পর্শী বার্তা কন্যা শ্বেতা বচ্চনের। লিখলেন, “এত দীর্ঘ দাম্পত্য টিকিয়ে রাখার মন্ত্র কী? জিজ্ঞাসা করলে আমার মায়ের জবাব ছিল, ‘জীবন কখনও টানা ঠিকঠাক চলে না। ওঠাপড়া থাকেই। সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিলেই হল!’” অমিতাভকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে পেয়েছিলেন জয়া, সে কথাই বা কী ভাবে ভোলেন! চিকিৎসকরা জানিয়েন দিয়েছিলেন, অমিতাভের দেহে স্পন্দন নেই। তার পর?

পাঁচ দশকেরও বেশি অভিনয় জীবনে দুর্বলতার কোনও জায়গা ছিল অমিতাভের। সব সময়েই সপ্রতিভ, ঋজু তিনি। যৌবনে মারপিট কিংবা ঝাঁপিয়ে পড়ার ঝুঁকিবহুল দৃশ্যের শুটিংয়ের সময় বডিডাবল (অনুরূপ চেহারার স্টান্ট অভিনেতা)-এর সাহায্য নেননি অমিতাভ। তাই মৃত্যু কাছে চলে এসেছিল। বচ্চনের অনুরাগীদের কাছে আজও ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে আসে ১৯৮২ সালের ২ অগস্ট দিনটি। ‘কুলি’ ছবির সেটে পুনীত ইসারের সঙ্গে একটি অ্যাকশন দৃশ্যের শুটিং করতে গিয়ে ভীষণ আঘাত পান অভিনেতা। উঁচু থেকে লাফ দেওয়ার সময় হিসাবে ভুল করে ফেলেছিলেন নায়ক।

Advertisement

প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়, পেটের ভিতরের সব তন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁচার আশা ছিল না অমিতাভের। সাড়া দিচ্ছিলেন না চিকিৎসায়, কোমায় চলে গিয়েছিলেন অভিনেতা। কৃত্রিম ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস চালু ছিল ভেন্টিলেটরে। ডাক্তারি শাস্ত্রমতে তাঁকে ‘মৃত’ বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকেরা জয়াকে জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রার্থনাই সম্বল সেই কঠিন সময়ে।

অমিতাভের ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বেশ খানিকটা দেরি করে হাসপাতালে পৌঁছান জয়া। খুব উদ্বিগ্ন হয়ে তাঁর দেওর বলেছিলেন, “কোথায় ছিলে? আমরা তোমাকেই খুঁজছিলাম।” জয়া জানান, তিনি সন্তানদের সামলে রাখতে বাড়ি গিয়েছিলেন। জয়াকে তাঁর দেওর বলেছিলেন মনে সাহস রাখতে। যে কোনও সময় চরম বিপদের আশঙ্কা করছিলেন তাঁরা। জয়ার অবশ্য মন থেকে বিশ্বাস ছিল, এমন কিছু হতেই পারে না। তিনি শান্ত ছিলেন।

পরে এক সাক্ষাৎকারে জয়া বলেন, “ আমার হাতে হনুমান চালিশা ছিল। চিকিৎসক দস্তুর আমায় বলেছিলেন, ‘‘আপনার প্রার্থনাই অমিতাভকে ফিরিয়ে আনতে পারে।’’ কিন্তু আমি পড়তে পারছিলাম না। চিকিৎসকেরা কী করছেন, সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। শুধু বুঝেছিলাম, ওরা অমিতাভের হার্টে পাম্প করছে, ওকে ইঞ্জেকশন দিচ্ছে। ধীরে ধীরে দেখলাম ওর পায়ের পাতা নড়ছে। আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম, ‘ওই তো! ও সাড়া দিচ্ছে’ বলে। আস্তে আস্তে ও সুস্থ হয়ে উঠেছিল।” ১৯৭৩ সালের ৩ জুন অমিতাভ-জয়ার বিয়ে হয়। জয়া তখন প্রতিষ্ঠিত, অমিতাভ প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য লড়ছেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে পরস্পরের সঙ্গী থেকেছেন ‘অভিমান’ জুটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement