পায়েল সরকার।
প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, আপনি নাকি বেহালা পূর্ব থেকে জিতে যাবেন?
পায়েল: সে তো ২ মে জানা যাবে। আগে থেকে কী করে বলব! তবে মানুষ যে ভাবে আমাকে মনের কথা খুলে বলেছে, অসুবিধের কথা জানিয়েছে, তার একটা সদর্থক দিক তো আছেই। দেখু্ন মানুষ অত বোকা নয়, তারা জানে কে সত্যি কাজ করবে আর কারা শুধু মুখ দেখাতে এসছে। তবে এক মাসের এই লড়াইয়ে মনে হয়েছে, আমরা জিতব।
প্রশ্ন: নির্বাচনে আপনি জয়লাভ করলে তার পিছনে নাকি এক বড় মুখের হাত আছে?
পায়েল: কে বলুন তো?
প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, গোপনে শোভন চট্টোপাধ্যায় আপনাকে জিততে সাহায্য করছেন। শোভনের প্রাক্তন স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরোধী পক্ষ আপনি...
পায়েল: (থামিয়ে) আমার কথা শুনুন । আমি খুব খুশি হতাম, যদি রাজনীতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শ পেতাম। দুর্ভাগ্যবশত ওঁর সঙ্গে আমার দেখাই হয়নি। কারা যে এ সব কথা বলে!
প্রশ্ন: এ বারের নির্বাচনে তো শুধুই কথার চাপানউতর। রগড়ানি, হুমকি...
পায়েল: আমি বুঝতে পেরেছি, আপনি কী বলতে চাইছেন। দেখু্ন, দিলীপ ঘোষ কোন প্রেক্ষিতে কী মন্তব্য করেছেন তা আমি জানি না। সেই বিষয়ে মন্তব্য করার জায়গায় আমি নেই।
প্রশ্ন: আপনি রাজনীতির জায়গা থেকে কিছু না বললেও শিল্পীদের রগড়ানির হুমকি সমর্থন করবেন?
পায়েল: ব্যক্তি হিসেবে 'রগড়ে দেব' শব্দটা ব্যবহারে আপত্তি আছে আমার।
প্রশ্ন: আপনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা অভিনেত্রী। বিজেপি-র নীতি মানিয়ে নিতে পারছেন?
পায়েল: আমার পার্টি তো আমায় কিছু বারণ করেনি।
প্রশ্ন: আপনি লম্বা হাতা পিঠ ঢাকা ব্লাউজ আর শাড়ি পরে প্রচার করেছেন। সেই খোলামেলা সাহসী পোশাক তো আর নেই।
পায়েল: কী মুশকিল! আমি প্রচারে সালোয়ার কামিজও পরেছি। আর শাড়ি তো আমি এমনিও পরি। বিজেপির পক্ষ থেকে কেউ কিচ্ছু বলেনি। আর কেনই বা বলবে? আমি অভিনেত্রী জেনেই বিজেপি আমায় টিকিট দিয়েছে। শুনুন, একটু লিখবেন বিজেপি আমায় পিঠ ঢাকা ব্লাউজ পরতে কখনও বলেনি। শাড়িও না। আমি নিজের ইচ্ছেতেই পরেছি।
প্রশ্ন: বিজেপিতে নিজের ইচ্ছায় এলেন?
পায়েল: অবশ্যই।ছোটবেলা থেকে বাবা আমার মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা গড়ে তুলেছিলেন। বাবা কোনও দলে যোগ দেননি। আমি আগে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলিনি বলে যে আমার রাজনৈতিক বিশ্বাস নেই তা তো নয়। লকডাউনের সময় মোদীজি যে ভাবে দিয়া জ্বালিয়ে, ঘন্টা বাজিয়ে দেশের সব মানুষের মধ্যে একটা ঐক্য এনেছিলেন সেটা দেখে ভাল লেগেছিল। মোদীজির অভিব্যক্তি, কথা বলা সবাইকে কাছে টানতে পারে। ওঁকে খুব অনুসরণ করি আমি। এর মধ্যে বিজেপি থেকে প্রস্তাব এলে আমি রাজি হই। মানুষের পাশে থাকার এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর কী হতে পারে?
প্রশ্ন: মানুষের পাশে তো এমনিও থাকা যায়। রাজনীতিতে যোগ দিতেই হবে?
পায়েল: এটা ব্যক্তিগত বিষয়। যে যেমন ভাবে দেখে। আমার ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন, আমি মাসে ৫০জনকে খাওয়াই। এর বেশি আমি পারব না। এ বার আমি যদি কোনও দলে যোগদান করি, সেই দলের সাংগঠনিক সহযোগিতা তো পাবো।
প্রশ্ন: শ্রাবন্তী আর আপনি বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে রোড শো করেছেন...
পায়েল: হ্যাঁ। বাবুল সুপ্রিয় এলেন, শ্রাবন্তীও ছিল। সকলের মধ্যে একটা ঐক্য ভাব গড়ে উঠেছে। শ্রাবন্তী আর আমি সমানে বলতাম, "আমাদের জিততে হবে। যে ভাবেই হোক।"
প্রশ্ন: যশের সঙ্গে প্রচার নিয়ে কথা হয়েছে?
পায়েল: এক বারই হয়েছে। ও খুব অনুভূতিপ্রবণ। খুব ভাল কাজ করছে।
প্রশ্ন: সোহম তো খুব বন্ধু, ওঁর জয়ের জন্য ওঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন?
পায়েল: এই প্রচারের ব্যস্ততায় কাউকেই কিছু বলা হয়নি। আনন্দবাজার ডিজিটালের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রির সব সহকর্মীকে এই ভোটযুদ্ধে জেতার জন্য শুভেচ্ছা জানাতে চাই, তা তিনি যে দলেই থাকুন।
প্রশ্ন: বিজেপি ক্ষমতায় এলে মহিলারা কি আরও মুশকিলে পড়বেন?
পায়েল: কেন? আমাদের ইস্তেহারে তো মেয়েদেরই বেশি সুবিধে দেওয়া হয়েছে। ভয় মানুষ এই ১০ বছরে পেয়েছে। এ বার আর পাবে না। এই যে ভোটের দিন আমার গাড়ি ভাঙা হল। সিসিটিভি ছিল বলেই যারা মেরেছে, তারা ধরা পড়ল। এটা অন্য মেয়ের ক্ষেত্রে হলেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশ্ন: আচ্ছা লকেট চট্টোপাধ্যায় নিজের গাড়ির কাচ নিজে ভেঙে বিরোধী পক্ষকে দোষ দিলেন?
পায়েল: আমার খুব হাসি পেয়েছিল। এটা কখনও হয়? নিজের গাড়ির কাচ ভাঙলে ওঁকেই তো সেটা সারাতে হবে। আর রাস্তায় উনি নিজে যদি কাচ ভাঙেন তো যে কেউ তার ভিডিয়ো করতে পারে। এটা জেনেও উনি করবেন? অসম্ভব!
প্রশ্ন: আপনার বিশেষ বন্ধু আপনার ভোটযুদ্ধ নিয়ে উত্তেজিত?
পায়েল: আমার কোনও বিশেষ বন্ধু নেই।