যেখানে ‘দৃশ্যম টু’ দু’সপ্তাহ পরও রমরমিয়ে ব্যবসা করছে, সেখানে ‘মনিকা, ও মাই ডার্লিং’-এর নির্মাতাদের মনে কি আফসোস দেখা দিচ্ছে? ছবি: সংগৃহীত
নভেম্বরে যে কটি হিন্দি ছবি মুক্তি পেয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত তিনটি ছবি— সুরজ বরজাতিয়ার ‘উঁচাই’, বসন্ত বালার ‘মনিকা, ও মাই ডার্লিং’ এবং অভিষেক পাঠকের ‘দৃশ্যম টু’। প্রথমটা ছেড়ে বাকি দুটি ছবিই থ্রিলার ঘরানার। সাধারণত দর্শক আর পাঁচটা ঘরানার ছবির চেয়ে ভাল থ্রিলার দেখতে সব সময়ই বেশি পছন্দ করেন। সেই নিয়ম মেনেই ‘দৃশ্যম টু’ এবং ‘মনিকা, ও মাই ডার্লিং’ সফল। তবে একটি রমরমিয়ে ব্যবসা করছে প্রেক্ষাগৃহে, অন্যটি মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে। ‘মনিকা, ও মাই ডার্লিং’ নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই দর্শক-সমালোকরা শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছেন। বসন্ত বালার পরিচালনা, ছবির আবহসঙ্গীত, রাজকুমার রাও, হুমা কুরেশি, রাধিক আপ্তের অভিনয়— সবই নজর কেড়েছে আলাদা করে। যেখানে ‘দৃশ্যম টু’ দু’সপ্তাহ পরও রমরমিয়ে ব্যবসা করছে, সেখানে ‘মনিকা, ও মাই ডার্লিং’-এর নির্মাতাদের মনে কি আফসোস দেখা দিচ্ছে? প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলে এই ছবিও বক্স অফিসে কামাল দেখাতে পারত কি না, সেই নিয়ে কি প্রশ্ন জাগছে না তাঁদের মনে? সম্প্রতি ‘ব্লেন্ডার্স প্রাইড ফ্যাশন ট্যুর’-এ পোশাকশিল্পীদ্বয় শান্তনু এবং নিখিলের পোশাকে হাঁটতে কলকাতায় এসেছিলেন রাজকুমার রাও। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে এই একই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল রাজকুমারের কাছে।
উত্তরে রাজকুমার বললেন, ‘‘যাঁরা ছবিটা দেখেছেন, তাঁরা প্রায় সকলেই বলেছেন, এটা এমন একটা ছবি যেটা সত্যিই বড় পর্দায় দেখতে ভাল লাগত। তবে এই ছবিটা তো বরাবরই নেটফ্লিক্সেই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। তারা এই ছবির অন্যতম প্রযোজকও। আর এখন সময় অনেকটা বদলে গিয়েছে। ১৯২টি দেশে দর্শক নেটফ্লিক্স দেখতে পান। ‘স্ত্রী’ ছবির পর দর্শকের কাছ থেকে যে পরিমাণ ভালবাসা পেয়েছিলাম, দেখতে এই ছবির জন্যেও কিন্তু একই রকম পাচ্ছি। মেক্সিসো, স্পেন, আমেরিকা, ব্রিটেন— দেশ বিদেশ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পাচ্ছি। সেটা তো প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলে হয় না।’’
হরর-কমেডি ছবি ‘স্ত্রী’ ২০১৮ সালে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল দর্শকের মধ্যে। সম্প্রতি নির্মাতারা এই ছবিরই সিক্যুয়েল তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন। সফল ছবি সিক্যুয়েল বানানো সহজ নয়। সব সিক্যুয়েল ‘দৃশ্যম টু’-এর মতো সাফল্য পায় না। সে বিষয়ে কি রাজকুমারের মনে কোনও রকম দ্বিধা বা ভয় রয়েছে? প্রশ্ন শুনে রাজকুমারের সটান উত্তর, ‘‘না, আমার বিন্দুমাত্র ভয় করছে না। অমর (কৌশিক, ছবির পরিচালক) মন থেকে সিনেমা ভালবাসে। এবং নিজের মনের কথা শুনে ছবি বানায়। কোনও রকম প্রত্যাশার চাপে ও সিদ্ধান্ত নেয় না। বাকি টিমও সমান দক্ষ। তাই ‘স্ত্রী’-র সিক্যুয়েল নিয়ে আমি একদমই চিন্তিত নই।
‘স্ত্রী’ নিয়ে না হয় তাঁর কোনও চিন্তা নেই। কিন্তু বলিউডের ভবিষ্যৎ নিয়েও কি তাঁর কোনও দুশ্চিন্তা হয় না? এ বছর ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ বাদে অনেক বড় বাজেটের ছবিই বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছে। হিন্দি সিনেমার এই দশা কি ভাবাচ্ছে রাজকুমারকে? তিনি বললেন, ‘‘এগুলো তো আমাদের হাতে নেই। সব কিছু সব সময় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এমন পরিস্থিতিতে একটা ভাল ছবি বানানোর দিকে আরও মন দেওয়া উচিত। তবে মনে রাখতে হবে যেন ছবির বাজেটও অত্যধিক বড় না হয়ে যায়। আমিও সেই ভাবেই প্রত্যেকটা ছবি বাছাই করছি এখন। ভাগ্য ভাল যে আমার প্রত্যেকটা ছবির প্রযোজকই লাভের মুখ দেখতে পেরেছেন। তাই জন্যেই তাঁরা আরও বেশি ছবি তৈরি করতে পারছেন। আমি নিজে এই মন্ত্রেই বিশ্বাস করি। বাজেট কম রেখে ছবির মান ভাল করতে হবে। সমস্ত মনোযোগ দিয়ে একটা ভাল ছবি তৈরি করতে হবে। যা নিয়ে দর্শক আগামী ৫-১০ বছরও কথা বলবেন।’’