উজ্জ্বয়িনী মুখোপাধ্যায়ের গানে ঠোঁট মেলালেন দক্ষিণী অভিনেত্রী শ্রীলীলা। ছবি: ফেসবুক।
উজ্জ্বয়িনী মুখোপাধ্যায় বাংলায় র্যাপ গাইছেন। কলমে কবি শ্রীজাত। সৌজন্যে ‘পুষ্পা ২’। ছবিটি ১০টি ভাষায় মুক্তি পাবে। যার মধ্যে বাংলা ভাষা অন্যতম। ইউটিউব খুললেই শোনা যাচ্ছে ‘কিসিক’ গান। গানের তালে তাল মেলাতে দেখা গিয়েছে দক্ষিণী অভিনেতা অল্লু অর্জুন, শ্রীলীলাকে। তবে যাঁরা উজ্জ্বয়িনীকে ‘চুপি চুপি রাত নেমে আসে আকাশে’ গাইতে শুনেছেন, তাঁরা কিছুতেই মেলাতে পারছেন না। কারণ ‘কিসিক’ গানের বাংলা সংস্করণ ‘থাপ্পড় পড়বে রাজা’র কথা আর গায়কি।
গানটির কথা বা সুর শোনার পর এবং গান গাওয়ার পর খুশি উজ্জ্বয়িনী? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নে গায়িকা বললেন, “গানে র্যাপের পরিমাণ বেশি। আমার মতে, এখন যে ধরনের গান নিয়ে সারা বিশ্বে কাজ হচ্ছে সেই জায়গা থেকে একজন গায়ককে কিন্তু সব ধারার গান গাওয়ার অভ্যেস রাখতে হবে। প্রয়োজনে র্যাপও।” গায়িকাও প্রথমে শুনে ভেবেছিলেন, পরে ‘মেলোডি লাইন’ আসবে। কিন্তু গাইতে গিয়ে দেখেন, ‘হুকিং লাইন’ অর্থাৎ ‘থাপ্পড় পড়বে রাজা’ পংক্তিটাই ছড়ার মতো করে ঘুরেফিরে আসছে। তিনি বুঝতে পারেন, এটি আসলে ‘গ্রুভি ট্র্যাক’। আক্ষরিক অর্থে গান নয়। এখানে স্থায়ী, অন্তরা ইত্যাদি থাকে না।
তাই শ্রোতাদের মতো গায়িকার ততটাও অস্বস্তি হয়নি। তিনি বরাবর নানা ধরনের গান গেয়ে অভ্যস্ত। বিজ্ঞাপনী গানে ‘গ্রুভি ট্র্যাক’ ছিল। ফলে, বিষয়টি একেবারে নতুন নয় তাঁর কাছে। তিনি উদাহরণ হিসাবে অরিজিৎ সিংহের নাম উল্লেখ করেছেন। গায়িকার যুক্তি, “ইদানীং, অরিজিৎ-ও গান নিয়ে, গায়কি নিয়ে নানা পরীক্ষা করছেন। এক ঘরানায় নিজেকে বেঁধে না রেখে ছড়িয়ে দিচ্ছেন নানা ধারার গানে। এটাই দস্তুর। তা হলে আমিই বা নয় কেন?” শ্রোতারাও কি একই ভাবে খুশি? “দেখুন, সব গান সকলের জন্য নয়। যাঁদের কথা মাথায় রেখে এই গান বাঁধা হয়েছে তাঁরা শুনে খুশি হলেই যথেষ্ট”, দাবি উজ্জ্বয়িনীর।
তাঁর আরও বক্তব্য, “আমার গলায় যাঁরা রবীন্দ্রসঙ্গীত বা ‘চুপিচুপি রাত নেমে আসে আকাশে’র মতো গান শুনে অভ্যস্ত তাঁদের হয়তো কানে বাজবে। কিন্তু ‘গণেশ টকিজ’ ছবিতে যাঁরা আমার ‘ঝাল লেগেছে, ভাল্লেগেছে’ গান শুনেছেন তাঁদের হয়তো ততটাও খারাপ লাগবে না।” তাঁর যুক্তি, ছবির স্বার্থে, ছবির প্রয়োজনে যে ধরনের গানের প্রয়োজন সেটিই বানানো হয়। শিল্পীদেরও গাইতে হয়। তিনিও সেটাই গেয়েছেন। পাল্টা প্রশ্নও রেখেছেন, “সমস্ত নেতিবাচকতা সরিয়ে আমরা এ ভাবেও ভাবতে পারি, জাতীয় স্তরে বাংলা ক্রমশ জুড়ে যাচ্ছে। এত দিন যা তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে। কেন আমরা সেই দিকটি দেখতে চাইছি না?”
এই জায়গা থেকে উজ্জ্বয়িনীর দাবি, শ্রীজাত এর আগে ‘অটোগ্রাফ’ ছবির জন্য লিখেছিলেন ‘চল রাস্তায় সাজি ট্রামলাইন’। তার মানে এই নয়, তিনি ‘পুষ্পা ২’-এর জন্য ‘থাপ্পড় পড়বে রাজা’ লিখবেন না। এটাই লেখকের বহুমুখিতা। প্রয়োজনে তিনি সব কিছু লিখতে পারেন। ইতিমধ্যেই তিমির বিশ্বাসের গাওয়া ‘পুষ্পা রাজ’ হিট। উজ্জ্বয়িনীর গাওয়া গানও কি ততটাই জনপ্রিয় হবে, কী মনে হচ্ছে তাঁর? গায়িকা হেসে ফেলে বলেছেন, “প্রত্যেক শিল্পীর স্বপ্ন, তাঁর গান জনপ্রিয় হবে। আমিও ব্যতিক্রমী নই। আবার এটাও মন থেকে চাইছি, তিমিরদার গাওয়া গান জনপ্রিয়তার শিখর ছুঁয়ে যাক।”