অনুপম রায়ের গানে ‘বছরের বেস্ট ২০২৪’-এর সূচনা। নিজস্ব চিত্র।
আনন্দবাজার ডট কম আয়োজিত ‘বছরের বেস্ট ২০২৪’ শুরু হল উপনিষদের স্তোত্রে। শাশ্বত সেই মন্ত্রে সুর দিয়েছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ‘যদি ঝড়ের মেঘের মতো আমি ধাই চঞ্চল–অন্তর/ তবে দয়া কোরো হে, দয়া কোরো হে, দয়া কোরো ঈশ্বর...’ এ প্রার্থনা যেন আমাদের সকলের। সেই অপাপপুরুষের কাছে প্রার্থনা যেন শুধু দয়া।
উপনিষদের শাশ্বত বাণী, গাইলেন এই প্রজন্মের গায়ক অনুপম রায়। এই সুরই যে অনুরণন তুলবে পরবর্তী অনুষ্ঠান জুড়ে, প্রারম্ভিক বক্তব্যে সে কথা জানিয়ে দিলেন অভীক সরকার।
অনুপমের গানের কথায় জীবনের ভাষা খুঁজে পেয়েছে একটা প্রজন্ম, যাঁদের কাছে জীবনের মানে গভীরে যাওয়ার টান। কিন্তু সোমবার একেবারে নতুন রূপে ধরা দিলেন অনুপম। বছরের সেরাদের বেছে নেওয়ার দিনে তাঁর এই গান এক অন্য আবহ তৈরি করল।
পরনে সুতোর কাজ করা গাঢ় লাল রঙের পাঞ্জাবি-ধুতি। তার সঙ্গে সুতোর কাজ করা ঘি রঙা শাল। বরাবর তাঁকে দেখা যায় হাল ফ্যাশনের পোশাকে। কিন্তু ‘বছরের বেস্ট ২০২৪’-এর মঞ্চে তাঁর কণ্ঠে উপনিষদের গান ও পরনে সাবেকি পোশাক অন্য মাত্রা জুড়ল।
কেন উপনিষদের এই গানের সঙ্গেই অনুষ্ঠানের সূচনা? অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা পাওলি দাম প্রশ্ন করেন। উত্তর রয়েছে অভীকবাবুর বক্তব্যেই। ‘বছরের বেস্ট’-এর চতুর্থ বছর এটি। প্রথম তিন বছরে রয়েছে বাঁধ ভাঙা বাঙালিদের কথা। তবে এই চতুর্থ বছরে রয়েছে কিছু পরিবর্তন।
এ দিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ছুঁয়ে গিয়েছে আরজি করের ভয়ঙ্কর ঘটনা। তাই এসেছে পরিবর্তনের প্রসঙ্গ। তিনি বলেছেন, “প্রধান পরিবর্তন, মিছিল-আন্দোলন আবার আমাদের জীবনে ফেরত এসেছে। মাঝখানে কিছু মিছিল-ধর্মঘট নিশ্চয়ই হয়েছে। কিন্তু সিঙ্গুর এবং ন্যানো নিয়ে আন্দোলনের পরে এই ধরনের আন্দোলন হয়নি। সেটা ফিরে এসেছে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় এর প্রকাশ হয়েছে স্ফুলিঙ্গের মতো।’’
তবে আন্দোলনের সঙ্গেই রয়েছে ধারাবাহিকতাও। বাঙালির ব্যবসা বিমুখতার ধারাবাহিকতার কথা বলেছেন তিনি। উপনিষদের গানেও ধারাবাহিকতা ও আসন্ন পরিবর্তনের দ্বন্দ্বের কথা উঠে এসেছে। অতীতের দিকে পিছন করে দাঁড়িয়ে থাকা নয়, অভীকবাবুর দর্শনে রয়েছে ঐতিহ্য এবং পরিবর্তনের মধ্যেকার ‘বিরোধাভাস’, যা ভবিষ্যতের দিকে তাকায়। তাই তাঁর বক্তব্যের ঠিক আগেই অনুপমের কণ্ঠে উপনিষদের গান দিয়েই শুরু হল এই সন্ধ্যার সূচনা।