(বাঁ দিক থেকে) নন্দিতা রায়, আবীর চট্টোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ফেলুদা বলেছিল, “তোপশে! আফ্রিকা বললেই তোর প্রথমেই কী মনে পড়ে রে?”—“জঙ্গল।” তেমনই দিল্লি বললেই কী মনে পড়ে আমাদের? কুতুব মিনার, লাল কেল্লা, ইন্ডিয়া গেট, রাইসিনা হিল্স। রাইসিনা হিল্স হয়ে গিয়েছে। এ বার ইন্ডিয়া গেট। সম্ভবত প্রথম বার কোনও বাংলা সিনেমাতে ইন্ডিয়া গেটের দৃশ্য দেখা যাবে আমাদের ছবি ‘রক্তবীজ’-এ। আমাদের কাছে এটা স্বপ্নের মতো ছিল। সিনেমায় একটি দৃশ্যের শুটিংয়ের প্রয়োজনে নন্দিতাদি চেয়েছিলেন, শটটা ইন্ডিয়া গেটে নিতে হবে। এ রকম অনেক দাবি নন্দিতাদি করে থাকেন। ঠিক যেমনটা ছিল রাষ্ট্রপতি ভবন। ইন্ডিয়া গেটের শুটিংটাও ভাবিনি, আমরা করতে পারব। ‘রং দে বসন্তি’ (২০০৬), ‘চক দে ইন্ডিয়া’ (২০০৭), ‘নো ওয়ান কিল্ড জেসিকা’ (২০১১)— যখন সিনেমাগুলো দেখেছিলাম, ইন্ডিয়া গেটের ওই সিনেমার দৃশ্যগুলো দেখে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠত। এ বার সাক্ষাৎ আমরা নিজেরাই ইন্ডিয়া গেটের সামনে! কত ইতিহাসের সাক্ষী।
যখন পৌঁছেছিলাম শুটিংয়ের আগের দিন বিকেলে, সে দিন বৃষ্টি পড়ছিল। সেই বৃষ্টির মধ্যেই ইন্ডিয়া গেট জুড়ে প্রচুর লোক। আমাদের শুটিংয়ের জন্য আমরা রেকি করছিলাম। সঙ্গে ক্যামেরাম্যান, দিদি, বন্ধু দেবাশিস, আমি আর আমাদের ইউনিটের লোকেরা। কোথায় ক্যামেরা বসাব, সব কিছু দেখা হয়ে গেল। পরের দিন ভোরবেলা শুটিং। ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছাড়া কোনও কিছু হয় না। এ বারেও যেন তাই। আমরা চেয়েছিলাম হালকা কুয়াশা থাকবে। দিল্লিতে যে কুয়াশাটা হয় শীতকালে। অর্থাৎ অক্টোবরে পুজো শেষ হয়ে গেছে। নভেম্বর পেরিয়েছে, ঠিক তার পরেই। কিন্তু বর্ষার মাসে কুয়াশা কী করে পাব? কিন্তু অদ্ভুত ভাবে সে দিন আকাশ ঘোলাটে মেঘলা। অথচ কোনও বৃষ্টি নেই। ট্রেলারের শুরুতেই দেখা যাবে ইন্ডিয়া গেটের দৃশ্য। যে দৃশ্য সিনেমাতেও রয়েছে। ভাগ করে নিলাম শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা। কোনও কিছু প্রথম যখন করতে পারি, তখন সেটার আনন্দ আলাদা। ইন্ডিয়া গেট, মেঘলা আকাশ আর আবীর চট্টোপাধ্যায় ওরফে পঙ্কজ সিংহ দৌড়ে আসছে। এ দৃশ্য বড় পর্দায় অন্য রকম লাগবেই!