রুকমা রায়।
প্রশ্ন: 'ধারাবাহিকের ‘রাজা-মাম্পি’ এখন দর্শকদের প্রেম করতে শেখাচ্ছে?
রুকমা: (হেসে) এই জুটি নিয়ে সর্বত্র চর্চা হচ্ছে। তবে সবটাই লীনা গঙ্গোপাধ্যায় আর রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য।
প্রশ্ন: 'মাম্পি' এসে 'তিন্নিদিদি'-কে কি ভুলে গেল দর্শক?
রুকমা: (হেসে ফেলে) কী করব! রাজা এত ভালবাসছে যে সৌজন্যকে আর মনেই পড়ছে না।
প্রশ্ন: অনুরাগীরা বলছেন, ছোট পর্দায় ‘তুমি যে আমার’ পার্ট ২ হচ্ছে...
রুকমা: সে কী! না না। ‘তুমি যে আমার’ তার মতো। ‘দেশের মাটি’ নিজের জায়গায়। কেউ, কারওর জায়গা নিতে পারে না।
প্রশ্ন: রাজা-মাম্পির প্রেম, প্রেম ভাঙা দেখে চোখ ভিজছে সকলের...
রুকমা: এটা আমিও শুনছি। আমায় অনুরাগীরা বলছেন। আমরা হাসলে ওঁরা হাসছেন। আমরা কাঁদলে ওঁরা কাঁদছেন! এক জন অভিনেতা এর থেকে বেশি আর কী চান? আমরা নাকি প্রেম করতে শেখাচ্ছি। ভাবা যায়? লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জন্যই হল। আমায় দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন উনি। আমিও আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
প্রশ্ন: প্রেম প্রস্তাব পাচ্ছেন?
রুকমা: সে তো স্কুলজীবন থেকে পাচ্ছি। জানেন, তখন না আঙুল গুনতাম। এখন আর গুনি না (হাসি)।
প্রশ্ন: এই ভালবাসা, যশ, খ্যাতি, অর্থের জন্যই লেখাপড়ায় তুখোড় রুকমা অভিনয়ে এলেন’?
রুকমা: আমার স্বপ্ন ছিল গান গাইব। ছোট থেকেই অভিনয়ের ইচ্ছেটাও ছিল। তখন রোজ রাতে পড়াশোনা শেষ করে দাদু-দিদাকে অভিনয় দেখাতাম। প্রতি দিন পছন্দের চরিত্রগুলো অভিনয় করতাম ওঁদের সামনে। বদলে চকোলেট পেতাম। সেই অভ্যাস এক সময় বাস্তব হল। যা বুঝছি, অভিনয় ছেড়ে থাকা আর আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: ‘মাম্পি’ যেই শুনেছিল বিপরীতে ‘রাজা’ রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, চাপে পড়ে গিয়েছিল?
রুকমা: চাপ কী বলছেন? রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। একে উনি এত বড় অভিনেতা। তার উপর আলাপও নেই। কেমন হবেন, আমার সঙ্গে মিলবে তো? টেনশন হত। আলাপ হওয়ার পরে দেখলাম, কী ভাল মানুষ। ভীষণ সাহায্য করেন। উনি আর লীনাদিই ৭০ শতাংশ গুছিয়ে দিয়েছেন। ভাল অভিনেতা সঙ্গে থাকলে নিজের অভিনয়ের মানও আপনা থেকেই উঁচুতে উঠে যায়।
প্রশ্ন: বাকি ৩০ শতাংশের জন্য কী করলেন?
রুকমা: বিশ্বাস করুন, কিচ্ছু করিনি। আমি হোমওয়র্ক করি না। মনেই রাখতে পারি না কী অভ্যেস করেছি। যা করেছি সেটে ততক্ষণাৎ করেছি। যে অনুভূতি কাজ করেছে সেটাই ক্যামেরার সামনে করে গিয়েছি।
প্রশ্ন: এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় নাকি মনে ছাপ ফেলে?
রুকমা: (একটু থেমে) হ্যাঁ। অভিনয় করতে করতে যত গভীরে ঢুকেছি ততই নিজের মধ্যে কেমন অস্বস্তি হয়েছে। পরিচালক ‘কাট’ বলার পরেও ঘোর কাটেনি। অনেকক্ষণ রেশ রয়ে গিয়েছে। শ্যুটিং সেরে ফেরার সময়েও দেখি, ‘মাম্পি’ হয়েই বাড়ি ফিরছি! এই অনুভূতি ঠিক বলে বোঝাবার নয়। কী ক্লান্তি শরীরজুড়ে। মনে হয়, কেউ যদি ঠেলে আমায় এগিয়ে দেয় ভাল হয়। ‘মাম্পি’ রুকমাকে পুরো নিংড়ে নিচ্ছে।
প্রশ্ন: তার প্রভাবে ১০ বছরের বড় অভিনেতাও...
রুকমা: (থামিয়ে দিয়ে) জানি কী বলতে চাইছেন। কোনও প্রেম নেই আমাদের। ভাল বোঝাপড়া আছে। তারই প্রতিফলন পর্দায় ঘটছে।
প্রশ্ন: বাস্তবে এমন হলে কী করবেন?
রুকমা: (শিউরে উঠে) কী বলছেন? এরকম হবে কেন? প্লিজ এমন বলবেন না। যাকে ভালবাসব তাকেই বিয়ে করব। এবং সবার শুভেচ্ছা, আশীর্বাদ নিয়েই বিয়ে করব। (একটু থেমে) যদি এমনটা ঘটেও তখন ভাবব কী করব।
প্রশ্ন: কেমন পাত্র পছন্দ? ‘সৌজন্য’ না ‘রাজা’?
রুকমা: রাজা। প্রেমিক তো ওর মতো হতে হয়!
প্রশ্ন: রাহুল শুনেছেন?
রুকমা: না না! এটা কেউ জানতেও চাননি। ফলে....
প্রশ্ন: বাস্তবে ‘রাজা’ এসেছেন?
রুকমা: কপালটাই খারাপ। এত প্রস্তাব। অথচ এখনও মনের মতো প্রেমিক পেলাম না।
প্রশ্ন: রুকমা ‘মাম্পি’ বা ‘তিন্নি’র মতো জেদি, নাক উঁচু রাগি বলে?
রুকমা: এটা ঠিক, আমি খুব রাগ করি। কথায় কথায় রেগে যাই। আর সবাই মিলে তখন ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
প্রশ্ন: এমন একজনও নেই যাঁকে ২ বার মনে পড়েনি?
রুকমা: (ছোট্ট শ্বাস ফেলে) যে চলে গিয়েছে তাকে মনে করে লাভ কী?
প্রশ্ন: এমন শিক্ষিত, সুন্দরী মেয়েকেই কিন্তু বাংলা চায়। কোনও রাজনৈতিক দল থেকে ডাক পাননি?
রুকমা: ডাক পেয়েছিলাম। কিন্তু রুকমা যে রাজনীতি চায় না! যেটা বুঝি না সে সম্বন্ধে আমার কোনও আগ্রহ নেই। তার চেয়ে অভিনয় নিয়ে আড্ডা হোক। সারা দিন কথা বলে যাব (হাসি)।