Laxmi Puja in Tollywood

লক্ষ্মীর আরাধনায় ব্যস্ত টলিপাড়া, পুজোয় সমর্থন সকলেরই, তবে আপত্তি ‘উৎসব’-এ

এক দিকে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে অস্থির শহর। অন্য দিকে ‘উৎসব’ বিতর্ক। টলিপাড়ার সদস্যেরা কী ভাবে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করছেন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৪৯
How Bengali celebrities from Tollywood are preparing for Laxmi Puja

(বাঁ দিক থেকে) ইন্দ্রাণী দত্ত, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় এবং চৈতি ঘোষাল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

বুধবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। টলিপাড়াতেও সকাল থেকে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রত্যেক বছর ইন্ডাস্ট্রির তারকাদের বাড়িতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে অনুরাগীদের উৎসাহ চোখে পড়ে। কিন্তু চলতি বছরে দুর্গাপুজোর আগে থেকেই ‘উৎসব’কে কেন্দ্র করে দুই শিবিরে বিভক্ত টলিপাড়া। নেপথ্যে রয়েছে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ। তবে বাড়িতে পুজো করছেন অনেকেই।

Advertisement

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শামিল হলেও বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করছেন অনেকেই। প্রত্যেক বছর তারকাদের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোয় উপস্থিত থাকেন ইন্ডাস্ট্রির সতীর্থেরা। পুজোর পাশাপাশি থাকে এলাহি ভোগের আয়োজন। একসঙ্গে আড্ডার পরিচিত ছবি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, এই বছর পুজো হলেও সেখানে জাঁকজমক বা জৌলুসের মাত্রা কম।

বুধবার বাড়িতেই লক্ষ্মীপুজো করছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তবে সেখানে অতিথি নয়, শুধু পরিবারের সদস্যেরাই উপস্থিত থাকবেন। তা ছাড়া বুধবার রাতেই অভিনেত্রী সিঙ্গাপুরে পাড়ি দেবেন। পুজো সেরেই বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন ঋতুপর্ণা। প্রত্যেক বছর প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। তবে এই বছর অভিনেত্রী পরিবারের মধ্যেই পুজোকে সীমাবদ্ধ রাখতে উৎসাহী। চট্টোপাধ্যায় পরিবারে বৃহস্পতিবার পুজোর আয়োজন। অর্পিতাও এক দিনের জন্য সেই উপলক্ষে দিল্লি থেকে শহরে আসছেন। তবে পুজোয় অতিথিদের সেই ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না।

অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যের বাড়িতেও লক্ষ্মীপুজো হচ্ছে। বুধবার সকালেই নিজের হাতে দেবীমূর্তিকে সাজিয়েছেন তিনি। সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। প্রত্যেক বছর তাঁর বাড়িতে পুজোয় থাকে এলাহি আয়োজন। তবে এ বছর অপরাজিতা জানিয়ে দিয়েছেন, পুজো শুধুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অভিনেত্রী একটি বিবৃতিতে লেখেন, “এই বছরটা উদ্‌যাপন থাকছে না। যে সময়ে রক্তমাংসের লক্ষ্মীদের এত অবমাননা প্রতিনিয়ত, সেই সময়ে উপাসনা থাকলেও লক্ষ্মীদেবীর পুজো-উদ্‌যাপন খানিকটা নিরর্থক মনে হয়।”

অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী দত্তের বাড়িতে প্রত্যেক বছর ধুমধাম করে লক্ষ্মীপুজো হয়। তবে এ বারে ঘরোয়া ভাবেই তিনি পুজো করছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘কোনও রকম জাঁকজমক নেই। কাউকে আমন্ত্রণ করিনি। বাড়িতেই পরিবারের সদস্যেরা মিলে পুজো করছি।’’ মায়ের বক্তব্যকেই সমর্থন করলেন কন্যা রাজনন্দিনী পাল। বললেন, ‘‘মায়ের সঙ্গেই পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত রয়েছি। তবে এ বার আমরা খুবই ছোট পরিসরে পুজো করছি। শহরে যা চলছে, তা দেখে বড় করে পুজো করতে চাইনি আমরা।’’

মায়ের আমল থেকে চৈতি ঘোষালের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর চল। প্রতি বছর ছাদে, পূর্ণিমাকে সাক্ষী রেখে তিনি এবং তাঁর পরিবার দেবীর আরাধনা করেন। প্রচুর অভ্যাগত আসেন। এ বছর শুধুই পুজো। অভিনেত্রীর কথায়, “পারিবারিক পুজো বন্ধ করব না বলেই ছোট প্রতিমা এনে পুজো করব। ঘরের লোকেরাই শুধু থাকবেন। এ বার কাউকে নিমন্ত্রণ জানাইনি।” আড়ম্বরহীন পুজো প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, “বরাবর বলেছি, পুজোয় আছি, উৎসবে নেই। তাই বাড়ির পুজো বন্ধ করছি না। তবে উৎসব-উদ্‌যাপনে কোনও ভাবেই থাকছি না।”

দেবী লক্ষ্মীকে ঘরের মেয়ের মতোই দেখেন চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। সেই ভাবনা থেকেই প্রত্যেক বছর নিজের হাতে দেবীমূর্তিকে সাজিয়ে তোলেন তিনি। ভোগ রাঁধেন নিজের হাতে। এমনকি নিজের হাতেই দেবীর পুজো করেন। এ বারেও তার অন্যথা হচ্ছে না। প্রত্যেক বারের মতো এ বারেও অনেকেই পুজোয় আমন্ত্রিত। বললেন, ‘‘দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা আমার কাছে ভীষণ ইতিবাচক। তাই খুব মন থেকে পুজো করি। চেষ্টা করি, প্রত্যেকের মধ্যে যাতে এই ইতিবাচক মানসিকতা ছড়িয়ে যায়।’’ উল্লেখ্য, লীনার বাড়িতে পুজো হবে বৃহস্পতিবার।

আরও পড়ুন
Advertisement