Saif Ali Khan Stabbed Case

সইফ-কাণ্ডের চার্জশিট প্রকাশ্যে, সইফ-করিনার বয়ান মিলেছে? ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন তাঁরা?

পুলিশের চার্জশিট মোতাবেক, আগের দিন সইফের বাড়ির চারপাশ খুঁটিয়ে দেখে এসেছিলেন শরিফুল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অভিনেতার বাড়িতে পৌঁছে যান অনুপ্রবেশকারী।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৪৫
সইফ-কাণ্ডে ধৃত শরিফুলই প্রকৃত দোষী।

সইফ-কাণ্ডে ধৃত শরিফুলই প্রকৃত দোষী। ছবি: সংগৃহীত।

প্রকাশ্যে সইফ আলি খান-কাণ্ডের আসল তথ্য। ৮ এপ্রিল বান্দ্রার মেট্রোপলিটন আদালতে হাজার পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছিল মুম্বই পুলিশ। সেই চার্জশিট শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের হাতে আসে। জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্তে পুলিশের কাছে ১১১ জন সাক্ষী দিয়েছিলেন। বয়ান রেকর্ড করা হয় ৪৮ জনের। পেশ করা চার্জশিট অনুযায়ী, সইফকে ছুরিকাঘাত করার পরেও বছর ৩০-এর অভিযুক্ত মহম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজ়াদ সইফের সদ্‌গুরু শরণ ভবনের ভিতরে প্রায় এক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছিলেন! তার পর পাশের ভারতী ভিলায় আরও এক ঘণ্টা আত্মগোপন করেছিলেন তিনি।

Advertisement

ঠিক কী কী ঘটেছিল ১৬ জানুয়ারি? সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনার আগের দিন, অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি অভিযুক্ত সইফের বাসভবনে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। সিসিটিভ ফুটেজ বলছে, ভিতরে প্রবেশ না করলেও শরিফুলকে সদ্‌গুরু বাসভবনের আশপাশে দেখা গিয়েছিল। বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬.৪৫ মিনিট পর্যন্ত রেকি চালান। সন্ধ্যা ৬.৫৯ মিনিটে তাঁকে ভারতী ভিলা ভবনে উঠতে দেখা যায়। পরে ভারতী অ্যাভিনিউ হয়ে সইফের বাড়িতে পা রাখেন।

বাড়িতে এক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ঢুকে পড়েছেন অথচ খান পরিবারের কেউ বিন্দুমাত্র টের পাননি! সেই সময় সইফ-করিনা কপূর খান, তাঁদের দুই সন্তান তৈমুর এবং জেহ্‌ কী করছিলেন?

ঘটনার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ করিনা-সইফ উভয়ের বয়ান রেকর্ড করেছিল। করিনা প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে রিয়া কপূরের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তিনি যখন ফেরেন তখন রাত ১টা ২০ মিনিট। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, তত ক্ষণে খান পরিবারের অন্দরে অভিযুক্ত ঢুকে পড়েছেন। করিনা ফিরে এসে প্রথমে তাঁর বড় ছেলে তৈমুরের ঘরে যান। তাকে দেখে তিনি যান ছোট ছেলে জেহ্‌-র ঘরে। দেখেন ‘ছোটে নবাব’ ঘুমোচ্ছে। তার আয়া তার বিছানার কাছে শুয়ে। সইফের স্ত্রী এর পর নিজেদের ঘরে আসেন। তিনি এবং সইফ যখন ঘুমোতে যাবেন তখনই জেহ্‌-র আয়া ছুটে এসে জানান, এক অপরিচিত ব্যক্তি ‘ছোটে নবাব’-এর ঘরে ঢুকে পড়েছেন। ভয় দেখিয়ে টাকা চাইছেন।

করিনা এবং সইফ দ্রুত ছোট ছেলের ঘরে গিয়ে দেখেন, কালো টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি জেহ্‌-র বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে। ছেলেকে বাঁচাতে সইফ লোকটিকে বাধা দিতে গেলে তাঁকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন অনুপ্রবেশকারী।

একই বক্তব্য কি সইফেরও? চার্জশিট বলছে, প্রায় এক। সইফ জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি রাতের খাবার খেয়েছিলেন। রাত ১০টায় তিনি নিজের ঘরে যান। করিনা নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে দুই ছেলেকে দেখে নিজেদের ঘরে আসেন। রাত দুটো নাগাদ জেহ্‌-র আয়া তাঁদের ঘুম থেকে তোলেন। সইফ ছোট ছেলের ঘরে গিয়ে দেখেন এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির কবলে তাঁদের সন্তান। ছেলেকে বাঁচাতে তিনি শরিফুলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। অভিযুক্তের দুই হাতে দুটো ছুরি ছিল। সেই অস্ত্র দিয়ে তিনি সইফের কাঁধে, ঘাড়ে, হাতে, বুকে, পেটে, পিঠে কোপাতে থাকেন!

প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া সইফও তখন অস্ত্র খুঁজতে থাকেন। কিন্তু সেই মুহূর্তে হাতের কাছে তিনি কিছুই পাননি। ইতিমধ্যেই ছোট ছেলেকে নিয়ে আয়া ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। সইফকে নিয়ে আসেন করিনা। অভিযুক্ত যাতে পালাতে না পারেন তার জন্য তাঁকে ওই ঘরেই তালাবন্ধ করে রাখা হয়। বাকিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন সইফকে নিয়ে। তৈমুর আর পরিবারের এক কর্মী সদস্য অভিনেতাকে অটোয় করে নিয়ে যান লীলাবতী হাসপাতালে। সইফের সারা শরীর, পোশাক রক্তে লাল।

এই ফাঁকে নাকি ওই ব্যক্তি বাথরুমের পাইপ পেয়ে সদ্‌গুরু ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন। আত্মগোপন করেন পাশের ভারতী ভিলায়।

Advertisement
আরও পড়ুন