অনুরাধা মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে বুধবার থেকে স্বাভাবিক হয়েছে টলিপাড়া। তবে দু’দিন শুটিং বন্ধ থাকায় সমাজমাধ্যমেও চর্চা চলেছে জোরদার। নেটাগরিকদের একটা বড় অংশ একাধিক পোস্টে টলিপাড়া এবং শিল্পীদের কটাক্ষ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে মর্মাহত ‘নীহারিকা’ খ্যাত অভিনেত্রী অনুরাধা মুখোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন অনুরাধা। অভিনেত্রী তাঁর পোস্টে মূলত দর্শকের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। তিনি লেখেন, ‘‘সমাজে চলা বিভিন্ন সঙ্কট আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে দেখাতে চেষ্টা করি। তা হলে শুটিং বন্ধ হলে আপনাদের এত আনন্দের প্রকাশ কিসের জন্য?’’ শিল্প না থাকলে সাধারণ মানুষ তাদের ভাল লাগা বা খারাপ লাগার বহিঃপ্রকাশ কী ভাবে করতেন, প্রশ্ন তুলেছেন অনুরাধা। নেটাগরিকদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, ‘‘টিভি কেনা বন্ধ করে দিন, ওটিটির সাবস্ক্রিপশন নেওয়া বন্ধ করে দিন। সারা দিন কাটুক এগুলো ছাড়া।’’
অনুরাধার মতে, যাঁরা এই ধরনের কটাক্ষ যাঁরা করেন, তাঁদের মধ্যে দ্বিচারিতা কাজ করে। আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী বললেন, ‘‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতেও যে কাজ বন্ধ থাকলে অগণিত মানুষের রুজিরুটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, সেটা একটা বড় অংশ বুঝতেই চান না। যাঁরা আমাদের ছবি, ধারাবাহিক, ওয়েব সিরিজ় দেখেন, তাঁরাই দেখছি শুটিং বন্ধ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন!’’
অনুরাধা জানালেন, সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে তিনি লক্ষ করেছেন, শুটিং বন্ধ নিয়ে আলোচনা না করে শিক্ষকেরা কেন চাকরি পাচ্ছেন না, তা নিয়ে আলোচনা করার দাবি উঠেছে। অনুরাধার কথায়, ‘‘সব জায়গায় সমস্যা হতে পারে। কিন্তু কেউ কেন চাকরি পাচ্ছেন না, সেটা তো আমরা শিল্পীরা বলতে পারব না। একই ভাবে চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ারেরা যদি তাঁদের প্রয়োজনে ধর্মঘট করেন, সেখানেও নিশ্চয়ই না জেনে আমরা মন্তব্য করব না।’’
অনুরাধার মতে, বাঙালি সংস্কৃতিতে ছোট থেকেই অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানকে নাচ, গান, চিত্রাঙ্কনের মতো শিল্পে নিয়োজিত করেন। অনুরাধা বললেন, ‘‘সেখান থেকেই তো কোনও এক জন বড় হয়ে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন। তা হলে তো বাবা-মায়েদের উচিত ছেলেমেয়েদের আর এ রকম কোনও ক্লাসে না পাঠানো!’’ শিল্পী হিসেবে অনুরাধা মনে করেন, মানুষ এখন ধৈর্য ক্রশ হারিয়ে ফেলছে। সেখান থেকেই জন্ম নিচ্ছে ক্রোধ। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘সত্যিই বুঝতে পারি না, শিল্পীদের প্রতি মানুষের এত রাগ কেন? আমরা তো তাঁদের কোনও ক্ষতি করিনি!’’