‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’ ছবির সেটে কোয়েলকে দৃশ্য বোঝাচ্ছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। ছবি: ফেসবুক।
২০১৩ সালে পুজোবার্ষিকীর জন্য সুচিত্রা ভট্টাচার্য ‘সারান্ডায় শয়তান’ লিখেছিলেন। মূলত ছোটদের জন্য লেখা মিতিন মাসির গোয়েন্দা উপন্যাস। কিন্তু অরিন্দম শীলের ‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’ সকলের জন্য পুজোর উপহার। সেখানে মিতিন এবং তাঁর স্বামীর পরিণত সম্পর্ক রয়েছে, সপরিবার জঙ্গলে ঘুরতে যাওয়া রয়েছে, অ্যাডভেঞ্চার থ্রিলার রয়েছে, টানটান অ্যাকশন দৃশ্য রয়েছে। সব মিলিয়ে ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ বানিয়েছেন পরিচালক। অবশ্য এই তাঁর প্রথম নয়। ২০১৯ সালের পুজোয় প্রথম মিতিনের ছবি বানিয়েছিলেন তিনি। চার বছর পর ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির দ্বিতীয় ছবি নিয়ে হাজির অরিন্দম।
আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানালেন, বরাবরই এই ছবি তিনি পুজোর জন্য ভেবেছিলেন। এখানে গোয়েন্দার গল্পের মধ্যে দিয়ে জঙ্গল এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বার্তা রয়েছে। মূর্তি গড়া থেকে বিসর্জন, তাঁর কাছে গোটাটাই প্রাকৃতির উদ্যাপন। তাই এই গল্প পুজোয় মুক্তি পাওয়ায়ই কাম্য। তিনি বললেন, ‘‘গল্পের মাধ্যমেই বার্তা থাকবে। আমার জ্ঞান দিতে ভাল লাগে না। নিজের লেখা সংলাপ কোয়েলের মুখে আমি নিজেই এডিট টেবিলে বসে ফেলে দিয়েছি। কারণ, মনে হচ্ছিল, বড্ড বেশি জ্ঞান দেওয়া হয়ে যাচ্ছে।’’
সাহিত্য নির্ভর গল্প বেছে ছবি করতে বরাবরই ভালবাসেন অরিন্দম। বহু বার করেওছেন। তিনি মনে করেন, বাংলা সাহিত্যই আমাদের মধ্যে অনেক ধরনের সচেতনতা তৈরি করে দিয়েছে। এমনকি, মিতিন মাসি তাঁর বিশেষ পছন্দ কারণ, মিতিনের শিক্ষা। তিনি বললেন, ‘‘শিক্ষা ছাড়া কেউ লার্জার দ্যান লাইফ হতে পারে না। সেটা আমি বিশ্বাস করি। আর আমি কোনও দিন অশিক্ষার উদ্যাপন করতে পারব না। মিতিনের শিক্ষাটা জরুরি। আর এই সময় আরও জরুরি।’’
দর্শকের প্রতিক্রিয়া থেকে সব সময়ই শিক্ষা নেন পরিচালক। তিনি জানালেন, আগের বারের তুলনায় তাই এ বার মিতিন অনেক বেশি ক্ষুরধার। ট্রেলারে দেখা গিয়েছে, মিতিনের ভূমিকায় কোয়েল মল্লিক ভরপুর অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। অরিন্দম জানালেন, কোয়েল নিজেকে সেই ভাবে তৈরি করেছেন এই ছবির জন্য। ১৬ দিন প্রচণ্ড গরমে জঙ্গলে শুটিং হয়েছে ছবি। তবে কোয়েলের মুখে সারা ক্ষণ হাসি লেগে ছিল। গোটা ইউনিটকে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রতি দিন। জঙ্গলে শুটিং করেও যাতে জঙ্গলের কোনও রকম ক্ষতি না হয়, সে দিকেও খেয়াল রেখেছিলেন সকলে। জঙ্গল পরিষ্কার করেছিলেন। ১৬ দিন কেউ ধূমপান করেননি, কেউ সুগন্ধি ব্যবহার করেননি।
এর পর পরিচালকের ‘কেরালায় কিস্তিমাত’ গল্পটি নিয়ে ছবি করার ইচ্ছা। তবে সেই ছবির বাজেট অনেক বেশি হবে বলেই মনে করছেন তিনি। পরিচালক বললেন, ‘‘যদি বাংলার দর্শক পরের ছবি দেখতে চান, তা হলে ‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’কে আগে সুপারহিট করতে হবে।’’